হরিনামের প্রতি অপরাধ কিরূপ..???

হরিনামের প্রতি অপরাধ কিরূপ..???

শ্রীপদ্ম পুরাণে স্বর্গখণ্ডে ৪৮ অধ্যায়ে হরিনামের প্রতি অপরাধ বর্ণনা করা হয়েছে। দশ রকমের নাম-অপরাধ হয়। সেই সকল অপরাধ থেকে মুক্ত থাকা বাঞ্ছনীয়। দশবিধ নাম অপরাধ হল---
১। যে সমস্ত ভক্ত ভগবানের দিব্য নাম প্রচার করার জন্য নিজেদের সর্বতোভাবে উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের নিন্দা করা।

২। শিব, ব্রহ্মা আদি দেবতাদের নাম ভগবানের নামের সমান অথবা তা থেকে স্বতন্ত্র বলে মনে করা। অর্থাৎ শিব শিব, ব্রহ্মা ব্রহ্মা উচ্চারণ করা হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্রের উচ্চারণের সমান বলে মনে করা।
৩। শ্রীগুরুদেবকে অবজ্ঞা করা।
৪। বৈদিক শাস্ত্র কিংবা বৈদিক শাস্ত্রের অনুগামী শাস্ত্রের নিন্দা করা।
৫। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র কীর্তনের মাহাত্ম্যকে কাল্পনিক বলে মনে করা।
৬। ভগবানের নামে অর্থবাদ আরোপ করা।
৭। নাম বলে পাপ আচরণ করা। অর্থাৎ পাপ করতে থাকব আর ভাবব নামকীর্তনে পাপ নষ্ট হয়, অতএব পাসওয়ার্ড করতে থাকব, এমন প্রবৃত্তি।
৮। হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র উচ্চারণ করাকে বৈদিক কর্মকাণ্ডে বর্ণিত কোন পূণ্যকর্ম বলে মনে করা।
৯। শ্রদ্ধাহীন ব্যক্তিকে ভগবানের দিব্য নামের মহিমা সম্বন্ধে উপদেশ করা।
১০। ভগবানের নামের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস না থাকা এবং তাঁর অগাধ মহিমা শ্রবণ করার পরও 'আমি' ও 'আমার' এই দেহাত্মবুদ্ধি বজায় রাখা।
প্রতিটি ভক্তের কর্তব্য হচ্ছে---ভগবৎপ্রেম লাভ করার জন্য এই সমস্ত অপরাধগুলি থেকে মুক্ত হওয়া।

হরিনাম জপ সম্পর্কে ১০টি প্রধান উক্তি।

১) যিনি হরিনাম জপের সময় দিব্য আনন্দ অনুভব করেন তিনি খুব শীঘ্রই সকল জড় কলুষ থেকে পরিশুদ্ধ হবেন।
২) কেবলমাত্র অামাদের প্রাত্যাহিক জপ যথাযথভাবে সম্পাদনের মাধ্যমে আমরা সকল পাপকর্মফল হতে মুক্ত হতে পারি।

৩) শুদ্ধভাবে নিয়মিত জপ ব্যাতিরেকে আমরা কখনই পূর্ণরূপে কৃষ্ণভাবনাময় হতে পারবোনা। জপই হচ্ছে পূর্ণরূপে কৃষ্ণভাবনাময় হওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী পন্থা।
৪) আমাদের শক্তি হচ্ছে চারটি নিয়ম পালন আর ষোল মালা জপ।
৫) প্রত্যেকেই নবীন দশা থেকেই ভক্তিজীবন শুরু করে, কিন্তু কেউ যদি যথাযথভাবে নির্দেশিত সংখ্যক হরিনাম সম্পন্ন করে, তবে সে ধীরে ধীরে উত্তম অধিকারী স্তরে উন্নীত হবে। - ভক্তিরসামৃতসিন্ধু
৬) শ্রীগুরুদেবের দেওয়া সকল মূলনীতিগুলোর মধ্যে ১৬ মালা জপই হচ্ছে সর্বোপরি।
৭) সর্বনিম্ম ১৬ মালা আমাদের জপ করতে হবে। কিন্তু নিরন্তর জপই আমাদের মূল লক্ষ্য।
৮) যখন জপ প্রেম এবং আন্তরিকতার সাথে করা হয়না, তখন তা হতে লক্ষ্যনীয় কোন জাগতিক বা পারমার্থিক সুফল লাভ হয়না। কিন্তু সেই একই জপ যদি প্রেম ও আন্তরিকতার সাথে সম্পাদন করা হয়, তবে তা আমাদের এক বিশুদ্ধ মানসিকতার স্তরে উন্নীত করে।
৯) জপ যে কেবল নীরবেই করতে হবে সেই সম্পর্কে কোন বাধ্যবাধকতা নেই, এটা বিভিন্নভাবে করা যেতে পারে। উচ্চস্বরে হোক বা নীরবে, সবটাই ঠিক। এক্ষেত্রে কোন সীমাবদ্ধতা নেই। তবে এটা অবশ্যই আন্তরিকভাবে করা এবং খুব গভীরভাবে সেই দিব্য শব্দতরঙ্গ শ্রবণ করা উচিত।
১০) আপনার জপমালাটাই হচ্ছে আপনার ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার টিকিট।
জয় রাধামাধব।।

Post a Comment

0 Comments