একাদশীর মাহাত্ম্য


 একাদশী কিভাবে পালন করবেনঃ  




আসুন এবার সকল ভক্তবৃন্দরা মিলে জেনে নেই।
একাদশী কিভাবে পালন করবেনঃ-
সমর্থপক্ষে দশমীতে একাহারএকাদশীতে নিরাহার ও দ্বাদশীতে একাহার করবেন। তা হতে অসমর্থ পক্ষে শুধুমাত্র একাদশীতে অনাহার। যদি এতেওঅসমর্থ হন একাদশীতে পঞ্চ রবিশস্য বর্জন করে ফলমুলাদি অনুকল্প গ্রহণেরবিধান রয়েছে। সমর্থ পক্ষে রাত্রি জাগরণের বিধি আছে। গৌড়ীয় ধারায় বামহান আচার্যবৃন্দের অনুমোদিত পঞ্জিকায় যে সমস্ত একাদশী নির্জলা (জলব্যাতীত) থেকে পালনের নির্দেশ প্রদান করেছেন সেগুলো সে মতে করলে সর্বত্তমহয়। নিরন্তর কৃষ্ণভাবনায় থেকে নির্জলাসহ নিরাহার থাকতে অপারক হলে একাদশীতে কিছু গোল আলু, মিষ্টিআলুচালকুমড়াপেপেটমেটো, ফুলকপি,দুধকলাআপেলআঙ্গুরআখআমড়াশসাতরমুজবেলনারিকেলবাদাম,ঘিসুর্যমুখী তৈল দিয়ে রান্না করে ভগবানকে উৎসর্গ করে আহার করতেপারেন। কাঁচা হলুদমরিচ ও লবণ ব্যবহার্য।
একাদশীতে বর্জনীয় পঞ্চ রবি শস্যঃ-
১) ধান জাতীয়ঃ- চাউলমুড়িচিড়াসুজিপায়েসখিচুড়ি।
২) গম জাতীয়ঃ- আটাময়দাসুজি, হরলিক্সবেকারির রুটি বা সকল প্রকারবিস্কুট।
৩) যব বা ভুট্টা জাতীয়ঃ- ছাতুখৈরুটি ইত্যাদি।
৪) ডাল জাতীয়ঃ- মুগমাসকলাই, খেসারীমশুর ছোলাফেলনবরবদীশিম।
৫) তৈল জাতীয়ঃ- সরিষা তৈল, সয়াবিন তৈলতিল তৈল ইত্যাদি।
উপরোক্ত পঞ্চ রবিশস্যের যে কোন একটি একাদশীতে গ্রহণ করলে ব্রত নষ্ট হবে। যদি কেহ কোন বিধি নিষেধ পালন ছাড়া একাদশীতে উদ্দেশ্যহীন ভাবে উপবাস থাকেও রাত্রি জাগরণ করে তবে সে একাদশীর সম্পূর্ণ ফল পাবে।
♪♪ একাদশীতে অন্ন ভোজন করলে নিজে যেমন- নরকবাসী হবে এবং অন্যকেভোজন ও দান করালেও নরক বাসী হবে। কাজেই একাদশী পালন করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য।
♪♪একাদশীর পারণ-পঞ্জিকা তালিকায় একাদশী পারণের যে সময় দেওয়া থাকে সে সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশস্য ভগবানকে নিবেদন করে প্রসাদ গ্রহণ করে পারন করা একান্ত্য দরকার। নতুবা একাদশীর কোন ফল লাভ হয় না।

একাদশী ব্রত পালনের উদ্দেশ্য ক্যাবল উপবাস করা নয়নিরন্তর শ্রী ভগবানের স্বরণ,মননভাগবত শ্রবণ ও কীর্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন পঁচিশ মালা বা যথেষ্ট সময় পেলে আরও বেশী জপ করার নির্দেশ রয়েছে। একাদশী পালনের সময় মাথায় তৈলসাবান ব্যবহারপরনিন্দাপরচর্চামিথ্যাভাষণক্রোধদুরাচারীস্ত্রী সহবাসসম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

 একাদশী করলে যে কেবলমাত্র নিজের জীবনের সদ্গতি হবে তা নয় । একাদশী ব্যক্তির প্রয়াত পিতা / মাতা নিজ কর্ম দোষে নরকবাসী হনতবে সেই পুত্রই (একাদশী ব্রত) পিতা – মাতাকে নরক থেকে উদ্ধার করতে পারে । একাদশীতে অন্ন ভোজন করলে যেমন নরকবাসী হবেঅন্যকে ভোজন করালেও নরকবাসী হবে। কাজেই একাদশী পালন করা আমাদের সকলেরই কর্তব্য ।।

 একাদশী পারণঃ (একাদশী তিথির পরদিন উপবাস ব্রত ভাঙ্গার পর নিয়ম)পঞ্জিকাতে একাদশী পারণের (উপবাসের পরদিন সকালে) যে নির্দিষ্ট সময় দেওয়া থাকেসেই সময়ের মধ্যে পঞ্চ রবিশস্য ভগবানকে নিবেদন করেপ্রসাদ গ্রহণ করে পারণ করা একান্ত দরকার । নতুবা একাদশীর কোন ফল লাভ হবে না । একাদশী ব্রত পালনের প্রকৃত উদ্দেশ্য কেবল উপবাস করা নয়নিরন্তর শ্রীভগবানের নাম স্মরণমনন ও শ্রবণ কীর্তনের মাধ্যমে একাদশীর দিন অতিবাহিত করতে হয় । এদিন যতটুকু সম্ভব উচিত । একাদশী পালনের পরনিন্দাপরচর্চামিথ্যা ভাষণক্রোধ দুরাচারীস্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ রূপে নিষিদ্ধ ।।

 বিঃ দ্রঃ নিমোক্ত বিষয়গুলোর প্রতি দৃষ্টি রাখা বাঞ্ছনীয়ঃ একাদশী ব্রতের আগের দিন রাত ১২ টার আগেই অন্ন ভোজন সম্পন্ন করে নিলে সর্বোওম। ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাঁশ করে দাঁত ও মুখ গহব্বরে লেগে থাকা সব অন্ন পরিষ্কার করে নেওয়া সর্বোওম । সকালে উঠে শুধু মুখ কুলি ও স্নান করতে হয় ।।

 একাদশীতে সবজি কাটার সময় সতর্ক থাকতে হবে যেন কোথাও কেটে না যায় । একাদশীতে রক্তক্ষরণ বর্জনীয়। দাঁত ব্রাশ করার সময় অনেকের রক্ত ক্ষরণ হয়ে থাকে। তাই একাদশীর আগের দিন রাতেই দাঁত ভালো ভাবে ব্রাশ করে নেওয়াই সর্বোওম ।।

 একাদশীতে চলমান একাদশীর মাহাত্ন্য ভগবদ্ভক্তের শ্রীমুখ হতে শ্রবণ অথবা সম্ভব না হলে নিজেই ভক্তি সহকারে পাঠ করতে হয় ।।

 যারা একাদশীতে একাদশীর প্রসাদ রান্না করেনতাদের পাচঁ ফোড়ঁন ব্যবহারে সতর্ক থাকা উচি ।কারণ পাঁচ ফোড়ঁনে সরিষার তৈল ও তিল থাকতে পারে যা বর্জনীয় ।।

 একাদশীতে শরীরে প্রসাধনী ব্যবহার নিষিদ্ধ । তৈল(শরীরে ও মাথায়) সুগন্ধি সাবান শেম্পু ইত্যাদি বর্জনীয় ।।

 সকল প্রকার ক্ষৌরকর্ম — শেভ করা এবং চুল ও নক কাটা নিষিদ্ধ ।।হরে কৃষ্ণ।।

Post a Comment

0 Comments