"সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু" একটি শিক্ষামূলক গল্প

"সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু" একটি শিক্ষামূলক গল্প


একসময় জীবন ঠাকুর নামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ সংসার নির্বাহে অসমর্থ হয়ে কাশীধামে শ্রীমন্মহাদেবের শরণাগত হন। বৈষ্ণবরাজ আশুতোষ তাঁর সাধনে সন্তুষ্ট হয়ে আদেশ দিলেন, “তুমি বৃন্দাবনে যাও। সেখানে সনাতন গোস্বামীর কাছে সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু প্রার্থনা কর। তোমার বাসনা পূর্ণ হবে।" জীবন ঠাকুর শ্রীল সনাতন গোস্বামীকে সেই কথা জানালে তিনি বললেন, “দেখ গিয়ে আবর্জনাগুলো নাড়াচাড়া করে।আবর্জনার মধ্যে একটি উজ্জ্বল পরশমণি পেলেন তিনি। লোহাতে পরশমণির ছোঁয়া লাগালে লোহা সোনায় পরিণত হয়। অত্যন্ত মূল্যবান পরশমণি পেয়ে তিনি দ্রুত গতিতে মহানন্দে বাড়ীর দিকে রওনা হলেন। পরিশ্রান্ত হয়ে এক গাছের নীচে বসে চিন্তা করলেন, “আচ্ছা! সনাতন গোস্বামী এটি আবর্জনাতে ফেলে দিয়েছেন কেন? এবং আমি যে পরশমণি নিয়ে চলে আসলাম তাঁকে তো একবারও বললাম না!" তখন তিনি ফিরে এসে সনাতন গোস্বামীর চরণে প্রণত হয়ে বলতে লাগলেন, “এর চেয়ে নিশ্চয়ই আরও মূল্যবান বস্তু আপনার কাছে আছে, নইলে এটা আবর্জনাতে ফেলে দিয়েছেন কেন?”
গোস্বামী বললেন, “তুমি সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু চাও?”
জীবন ঠাকুর বললেন, “হ্যাঁ, মহাদেব শিব তাইতো বলেছেন, যে জন্যে আপনার পদপ্রান্তে আমি অধম এসেছি।
সনাতন গোস্বামী বললেন, “তবে ওই পরশপাথরটি যমুনার জলে ফেলে দিয়ে স্নান করে এসো।
জীবন ঠাকুর তৎক্ষণাৎ গুরুদেবের আদেশ পালনে রত হলেন। তারপর সনাতন গোস্বামী তাকে হরিণাম মন্ত্র প্রদান করলেন।
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।"
এই পবিত্র দিব্য হরিনাম বৈষ্ণবের সর্বপেক্ষা মূল্যবান বস্তু। তুমি সর্বক্ষণ এই মহামন্ত্র কীর্তন কর।
হিতোপদেশঃ

যতই মূল্যবান বস্তু হোক না কেন, জড়জগতের সমস্ত বস্তুই ক্ষণস্থায়ী। এই জীবনও কালের প্রভাবে পরিবর্তিত হয়। কিন্তু ভগবৎ-প্রতিনিধির দেওয়া মহামন্ত্র জীবকে মহাকালের উর্ধ্বে উন্নীত করে ভগবানের নিত্য আনন্দময় ধামে নিয়ে যেতে পারে। সুতরাং ভগবানের দিব্যনামই সর্বশ্রেষ্ঠ মূল্যবান বস্তু।



Post a Comment

0 Comments