লীলাপুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের ৬৪ গুন কি? কি?


লীলাপুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের ৬৪ গুন

শিবঠাকুর,বিষ্ণু ও কৃষ্ণের মধ্যে পরমেশ্বর ভগবান আসলে কে?এঁরা কি ভিন্ন? এঁদের মধ্যে তফাৎ কি?

প্রথমত শিবঠাকুরের আবির্ভাব সম্পর্কে কি বলা হয়েছে শাস্ত্রে দেখে নিই

কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন ব্যাসদেব শ্রীমদ্ভাগবতের তৃতীয় স্কন্ধের দ্বাদশ অধ্যায়ে বললেন

"ধিয়া নিগৃহ্যমাণোঽপি ভ্রূবোর্মধ্যাৎ প্রজাপতেঃ।

সদ্যোঽজায়ত তন্মন্যুঃ কুমারো নীল লোহিতঃ"

(উপ সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা প্রথমে সনক, সনন্দ,সনাতন ও সনৎকুমার নামক চারজন মহর্ষিকে সৃষ্টি করার পর তাঁর পুত্রের প্রজা সৃষ্টি করতে বললে, ভক্তিপরায়ন, মোক্ষধর্মনিষ্ঠ কুমারেরা অনিচ্ছা প্রকাশ করলে পিতা ব্রহ্মার অন্তরে দুর্বিষহ ক্রোধ উৎপন্ন হয়েছিল) "যদিও তিনি ক্রোধ সংবরণ করার চেষ্টা করেছিলেন,তবুও তা তাঁর ভ্রুযুগলের মধ্য থেকে বেরিয়ে এসেছিল,এবং তৎক্ষণাৎ নীল-লোহিত বর্ণের একটি শিশু উৎপন্ন হয়েছিল।"

তারপর সেই বালক ক্রন্দন করতে করতে পিতার কাছে নাম ও স্থানসমুহ নির্দেশ করার অনুরোধ করলে বহ্মা বললেন

"যদরোদীঃ সুরশ্রেষ্ঠ সোদ্বেগ ইব বালকঃ।

ততস্ত্বামভি ধাস্যন্তি নাম্না রুদ্র ইতি প্রজা॥"

তারপর ব্রহ্মা বললেন---হে সুরশ্রেষ্ঠ!যেহেতু তুমি উৎকন্ঠিত হয়ে ক্রন্দন করেছো,তাই প্রজাসমুহ তোমাকে রুদ্র(শিব) নামে অভিহিত করবে।(ভাগবত-৩/১২/১০)

"হে পুত্র ! হৃদয়,ইন্দ্রিয়,প্রাণবায়ু,আকাশ,বায়ু,অগ্নি,জল,পৃথিবী, সূর্য, চন্দ্র ও তপস্যা এই সমস্ত স্থান আমি পূর্ব থেকেই তোমার জন্য নির্ধারিত করে রেখেছি।"(ভাগবত-৩/১২/১১)*

শ্রীব্রহ্মসংহিতায় ব্রহ্মা বললেন---

"ক্ষীরং যথা দধিবিকারবিশেষযোগাৎ

সঞ্জায়তে ন হি ততঃ পৃথগন্তি হেতোঃ।

যঃ শম্ভুতামপি তথা সমুপৈতি কার্যাদ্-

গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি"॥

"দুগ্ধ যেরূপ বিকারবিশেষ-যোগে দধি হয়,তথাপি কারণরূপ দুগ্ধ হইতে পৃথক তত্ত্ব হয়না, সেইরূপ যিনি কার্যবশত 'শম্ভুতা' প্রাপ্ত হন (নিজ কার্যহেতু তিনিই শম্ভুতে বা শিবরূপে প্রকাশিত হন)সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।

এবার স্বয়ং বিচার করবেন, শিবঠাকুর কি পরমেশ্বর ভগবান???এর পর বিষ্ণু ও কৃষ্ণের মধ্যে পার্থক্য দেখি---

কৃষ্ণ ও নারায়ণের তফাৎ কি? কে বড়?

কৃষ্ণ ও নারায়ণ মূলত একই তত্ত্ব হলেও, গুণবৈশিষ্ট অনুসারে নারায়ণ অপেক্ষা কৃষ্ণের মধ্যেই অধিক উৎকর্ষ বর্তমান।কারণ কৃষ্ণ থেকে নারায়ণ সৃষ্টি,নারায়ণ থেকে কৃষ্ণ নয়।কৃষ্ণ অনাদির আদি!নারায়ণ হলেন কৃষ্ণের স্বাংশ প্রকাশ।ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যখন পৃথিবীতে স্বয়ং অবতার রূপ ধারণ করেণ তখন দেখা যায় নারায়ণ থেকে কৃষ্ণের আবির্ভাব হচ্ছে! এটা ভগবানের লীলামাত্র।তাঁর চরণে সমর্পিত ভক্তগণের কাছেই ভগবানের লীলা বোধগম্য,অভক্তের বোধগম্য নয়।কারণ ভগবান স্বয়ং তাঁর ভক্তকে তাঁর লীলা হৃদয়ঙ্গম করার বিশেষ শক্তি প্রদান করে থাকেন।*

পরম বৈষ্ণব-প্রবর ষড়গোস্বামীর অন্যতম শ্রীল রূপগোস্বামী পাদ শ্রীভক্তিরসামৃতসিন্ধু গ্রন্থে খুব সুন্দরভাবে ৬৪ প্রকার গুনের কথা উল্লেখ করেছেন।সেই গুনগুলির মধ্যে ৫০ টি গুন সাধারণ মানুষের মধ্যে বিন্দু বিন্দু পরিমাণ থাকতে পারে।ব্রহ্মা, শিব প্রমুখ শ্রেষ্ঠ দেবতাগণের মধ্যে অধিক পরিমাণে সেই ৫০ টি গুণ বিদ্যমান।নারায়ণ ও কৃষ্ণের মধ্যে পরিপূর্ণভাবে সেই ৫০টি গুন সহ আরও ১০ টি গুণ নিয়ে মোট ৬০ টি গুণ রয়েছে।নারায়ণের ৬০ টি গুণ পূর্ণ।কিন্তু কৃষ্ণের অতিরিক্ত ৪ টি গুণ রয়েছে যা নারায়ণের মধ্যেও নেই।সেই চারটি গুন হল-- (১)লীলামাধুরী,(২)প্রেমমাধুরী,(৩)বেণুমাধুরী ও(৪) রূপমাধুরী। অর্থাৎ ৬৪ টি গুণ পরিপূর্ণরূপেই একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেই রয়েছে।*

শ্রীকৃষ্ণ লীলায় আমরা দেখতে পাই যে,নারায়ণ-পত্নী মহালক্ষ্মী শ্রীকৃষ্ণের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে বৈকুণ্ঠ ত্যাগ করে রাসলীলায় প্রবেশ করতে চাইলেন,কিন্তু প্রবেশের অধিকার পেলেন না বলে ব্রজের বেলবনে কৃষ্ণপাদপদ্ম ধ্যানে নিমগ্ন হলেন।অথচ বৃন্দাবনে গোপ কন্যারা শ্রীকৃষ্ণকে খুঁজে বেড়াতে বেড়াতে যখন চতুর্ভূজ নারায়ণকে দেখতে পেলেন, তখন তাঁর প্রতি মোটেই আকৃষ্ট হলেন না,কেবল প্রণাম জানিয়ে বললেন তাঁরা যেন তাঁদের কৃষ্ণকে খুঁজে পায়,এই আশীর্বাদ নিয়ে চলে গেলেন।*

ভৌম বৃন্দাবনেলীলা সমাপ্ত হলে যখন শ্রীকৃষ্ণ অপ্রকট হলেন তখন এক গোপকুমার পৃথিবীতে থেকে গিয়েছিলেন।গোপকুমার যখন মন্ত্রযোগে ব্রহ্মলোক অতিক্রম করে শ্রীবৈকুণ্ঠধামে উপনীত হলেন সেখানে শঙ্খ, চক্র, গদা, পদ্মধারী ভগবান নারায়ণ এবং লক্ষ্মীদেবীর দেখলেন। তাঁরা সযত্নে গোপকুমারকে আদর আপ্যায়ন করতে লাগলেন,কিন্তু তবুও গোপকুমারের মনে তৃপ্তির অভাব দেখা দিল।যেস্থানে কারও কোনও কুন্ঠা থাকার কথাই নয় সেই বৈকুণ্ঠেও গোপকুমারের কুন্ঠিত হৃদয় অপেক্ষা করতে লাগল-- _"কোথায় গেলে আমার মাধুর্যময় যুগল রাধাকৃষ্ণকে পাব।'_ তারপর তাঁকে নিত্য গোলক বৃন্দাবনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল।আর সেখানেই তারঁ প্রাণের রাধাকৃষ্ণ, সখা সখীগণের দর্শন পেয়ে তবেই হৃদয় শান্ত ও প্রফুল্ল হল।তাহলে এ থেকে বোঝা যায় নারায়ণ অপেক্ষা গুনবৈশিষ্টে কৃষ্ণই শ্রেষ্ঠ ও কৃষ্ণই পরম পুরুষোত্তম ভগবান আর নারায়ণ হলেন তাঁর স্বাংশ প্রকাশ।*

শ্রীকৃষ্ণের চৌষট্টি গুণ

শ্রীল রূপগোস্বামীপাদ "শ্রীভক্তিরসামৃত সিন্ধু" গ্রন্থের দক্ষিণ বিভাগের বিভাব লহরীতে লীলাপুরুষোত্তম শ্রীকৃষ্ণের যে ৬৪ গুন, তা বর্ণনা করেছেন,যথাঃ-

*⚜(১) সুরম্যাঙ্গ- সুন্দর অঙ্গ,*

*⚜(২)সর্বলক্ষণান্বিত- মহাপুরুষের ৩২টি শারিরীক লক্ষণ,*

*⚜(৩)রুচির- নয়নতৃপ্তিকর সৌন্দর্য,*

*⚜(৪)তেজিয়ান্- প্রভাবশালী,*

*⚜(৫)বলীয়ান- মহা বলবান,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(৬)বয়সান্বিত- সর্বদাই নব কিশোর*

*⚜(৭)বিবিধাদ্ভুত ভাষাবিৎ- সমস্ত রকমের ভাষায় সুপন্ডিত,*

*⚜(৮)সত্যবাক্য- যাঁর বাক্য কখনো মিথ্যা হয় না,*

*⚜(৯)প্রিয়ংবদ- অপরাধীকেও প্রিয় কথা বলেন,*

*⚜(১০)বাবদূক- যাঁর মুখনিঃসৃত বাক্য সুস্পষ্ট,সুমধুর ও বর্ণবিন্যাসযুক্ত,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(১১)সুপান্ডিত্য- যিনি সমস্ত শাস্ত্রে বিদ্বান এবং কর্তব্য যথাযথ পালনকারী ও নীতিজ্ঞ,*

*⚜(১২)বুদ্ধিমান্- সুতীক্ষ্ণ বুদ্ধি,*

*⚜(১৩)প্রতিভান্বিত- দ্রুত উপযুক্ত নববুদ্ধি উদ্ভাবনকারী,*

*⚜(১৪)বিদগ্ধ- নানাকলাবিলাসে যাঁর চিত্ত সদা লিপ্ত,*

*⚜(১৫)চতুর- একই সময়ে বহু কার্য সমাধান করতে পারেন,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(১৬)দক্ষ- দুষ্কর কার্যও যিনি শীঘ্র সম্পাদন করতে পারেন,*

*⚜(১৭)কৃতজ্ঞ- উপকারীর কোনও উপকার যিনি ভূলেন না,*

*⚜(১৮)সুদৃঢ় ব্রত- যাঁর প্রতিজ্ঞা ও নিয়ম উভয়ই সত্য হয়,*

*⚜(১৯)দেশ-কাল-সুপাত্রজ্ঞ- দেশ-কাল-পাত্র বুঝে ক্রিয়াশীল হন,*

*⚜(২০)শাস্ত্রচক্ষু- শাস্ত্রানুসারে কার্য করেন,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(২১)শুচি- সর্বপাপনাশী ও সর্বদোষশূণ্য*

*⚜(২২)বশী- জিতেন্দ্রিয়,*

*⚜(২৩)স্থির- ফল উদয় না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে থাকেন,*

*⚜(২৪)দান্ত- মঙ্গলসাধনের জন্য দুঃসহ ক্লেশও স্বীকার করেণ,*

*⚜(২৫)ক্ষমাশীল- অন্যের অনেক অপরাধ সহ্য করে চলেন,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(২৬)গম্ভীর- যাঁর মনোভাব দুর্বোধ্য ,*

*⚜(২৭)ধৃতিমান- আকাঙ্ক্ষাশূণ্য এবং ক্ষোভের কারণ সত্ত্বেও শান্ত,*

*⚜(২৮)সম- রাগ ও দ্বেষ থেকে মুক্ত,*

*⚜(২৯)বদান্য- দানবীর,*

*⚜(৩০)ধার্মিক- স্বয়ং ধর্ম যাজন করেন ও অপরকে করান,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(৩১)শূর- যুদ্ধ বিষয়ে উৎসাহী ও অস্ত্র প্রয়োগে বিচক্ষণ,*

*⚜(৩২)করুণ- অপরের দুঃখ সহ্য করতে পারেন না,*

*⚜(৩৩)মান্যমানকৃত- গুরু, ব্রাহ্মণ ও বৃদ্ধদের শ্রদ্ধা করেন,*

*⚜(৩৪)দক্ষিণ- সুন্দর স্বভাব ও সুকোমল চরিত্র,*

*⚜(৩৫)বিনয়ী- উদ্ধত প্রকৃতির নন,*

*••••••••┈┉━❀❈🙏🏻❈❀━┉┈••••••••*

*⚜(৩৬)হ্রীমান- দুর্বুদ্ধি স্বভাবে সঙ্কোচ বোধ করেণ,*

*⚜(৩৭)শরণাগত পালক- শরণাগতদের পালন করেন,*

*⚜(৩৮)সুখী-যাকে দুঃখ লেশমাত্রও স্পর্শ করতে পারে না,*

*⚜(৩৯)ভক্তসুহৃদ- সুসেব্য ও দাসবন্ধু,*

*⚜(৪০)প্রেমবশ- প্রিয়তামাত্রই বশীভূত হয়ে যান।*

*⚜(৪১)সর্বশুভঙ্কর- সকলের হিতকারী,*

*⚜(৪২)প্রতাপী- স্বীয় পৌরুষ দ্বারা শত্রুদের প্রতপ্ত করেন,*

*⚜(৪৩)কীর্তিমান্- নির্মল যশের জন্য বিখ্যাত,*

*⚜ (৪৪)রক্তলোক- সকলের অনুরাগ-ভাজন,*

*⚜(৪৫)সাধুসমাশ্রয়- সাধুদের প্রতিই পক্ষপাতী হন,*

*⚜(৪৬)নারীগণমনোহারী-সকল সুন্দরীর মন হরণ করেন,*

*⚜(৪৭)সর্বারাধ্য- সকলের আগে তিনি পূজ্য,*

*⚜(৪৮)সম্মৃদ্ধিমান্- মহা সম্পত্তিশালী,*

*⚜(৪৯)বরীয়ান্- সকলের মধ্যে যিনি অতিশয় শ্রেষ্ঠ,*

*⚜(৫০)ঈশ্বর- স্বতন্ত্র ও দুর্লঙ্ঘ্য এবং যাঁর আদেশ ব্রহ্মাণ্ড-পতিগণ পালন করেন,*

*⚜(৫১)সদাস্বরূপসংপ্রাপ্ত- মায়াকার্যে বশীকৃত নন,*

*⚜(৫২)সর্বজ্ঞ- সবার মনের কথা জানেন এবং সর্বকালের সর্বলোকের কথা জানেন,*

*⚜(৫৩)নিত্যনূতন - প্রতিক্ষণেই নব নবায়মানরূপে নিত্যসঙ্গীদের কাছে অনুভূত হয়ে বিষ্ময় উৎপাদন করেণ,*

*⚜(৫৪)সচ্চিদানন্দসান্দ্রাঙ্গ- চিন্ময় আনন্দঘন মূর্তি সর্বদেশে সর্বকালে স্বপ্রকাশ এবং নিরুপাধি প্রেমভাজন,*

*⚜(৫৫)সর্বসিদ্ধিনিষেবিত-যাবতীয় সিদ্ধিকে স্বীয় বশীভূত করেছেন,*

*⚜(৫৬)অবিচিন্ত্য মহাশক্তি- দিব্য স্বর্গাদির কর্তৃত্ব,ব্রহ্মা রুদ্রাদির মোহ এবং ভক্তগণের প্রারব্ধখন্ডন শক্তি,*

*⚜(৫৭)কোটি-ব্রহ্মাণ্ড-বিগ্রহ- সর্বব্রহ্মাণ্ড ও সর্ববৈকুণ্ঠব্যাপী অবস্থান করছেন,*

*⚜(৫৮)অবতারাবলীবীজ- সমস্ত অবতার সমুহের বীজ বা মূল উৎস,*

*⚜(৫৯)হতারিগতিদায়ক- শত্রু দের নিহত করে মুক্তি প্রদান করেন,*

*⚜(৬০)আত্মারামগণাকর্ষী- মহান জ্ঞানী ও পূর্ণ পরমহংসদের আকর্ষণ করেন,*

*⚜(৬১)লীলামাধুর্য- রাস আদি বিস্ময়কর লীলাবিলাস করেন,*

*⚜(৬২)প্রেমমাধুর্য- সর্বদা প্রেমময় প্রিয়জন কর্তৃক পরিবেষ্টিত থাকেন,*

*⚜(৬৩)বেণুমাধুর্য- ব্রহ্মাণ্ড বিমোহিনী বংশীধ্বনি বাদন করেণ,*

*⚜(৬৪) রূপমাধুর্য- অদ্বিতীয় রূপ মহিমা।*

*⚜এই গুনাবলীর মধ্যে লীলামাধুরী,প্রেমমাধুরী,বেণুমাধুরী ও রূপমাধুরী একমাত্র শ্রীকৃষ্ণের মধ্যেই সম্পূর্ণরূপে বিদ্যমান,যা অন্য কোনও দেবদেবীর মধ্যে নেই, তাই তিনিই একমাত্র পরমেশ্বর পরমপুরুষ, সমস্ত জীবাত্মার পরমাত্মা ভগবান।*

সর্বশেষ সিদ্ধান্ত এটাই যে---দুধ থেকে বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার তৈরি হয়, কিন্তু দুধ থেকে সেগুলো ভিন্ন নয়, দুধেরই স্বরূপ বা পরিবর্তিত রূপ।যেমন দুধ থেকে দধি, ক্ষীর,মাখন,ঘি তৈরী হয়,কিন্তু তারা দুধ থেকে ভিন্ন নয়। আবার দুধ থেকে তৈরি হলেও তারা দুধের সমতুল্য নয়, কারণ তারা হল দুধের বিকারপ্রাপ্ত রূপ। যেমন,দুধ থেকে দধি হলে, দধিকে পুণরায় দুধে রূপান্তরিত করা যাবে না, বা দধিকে দুধ বলা যাবেনা। তেমনই দুধ স্বরূপ হলেন পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, এবং অন্যান্য দেবদেবীগণ বা এই সৃষ্টির কোনও কিছুই শ্রীকৃষ্ণ থেকে ভিন্ন নয়। সবকিছুর মধ্যেই শ্রীকৃষ্ণ বর্তমান। তথাপি শ্রীকৃষ্ণ থেকে উদ্ভুত দেবদেবী বা সৃষ্টির সমস্ত কিছু স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ নয়। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর সহ সমস্ত দেবদেবীগণ শ্রীকৃষ্ণ থেকে ভিন্ন নয়, তাঁর স্বাংশ প্রকাশ,আবার তাঁরা স্বয়ং পরম পূর্ণ ভগবান শ্রীকৃষ্ণও নয়।

Post a Comment

0 Comments