সংসারটা হচ্ছে মধুরচাক আর বিষয় আশয় হচ্ছে সর্প

সংসারটা হচ্ছে মধুরচাক আর বিষয় আশয় হচ্ছে সর্প




একদিন যুধিষ্ঠির ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে জিজ্ঞাসা করলেন,
"ভগবান.....তুমি তো তোমার মোহন বাঁশীর সুরে সকলকেই আকর্ষণ করছো
তবুও কেউ কেউ তো সেই আকর্ষণে আকৃষ্ট হচ্ছে না?"
শ্রী কৃষ্ণ সেই সময় যুধিষ্ঠির এর কোনো প্রশ্নের উত্তর দিলেন না।
অপরাহ্নে তিনি যুধিষ্ঠির কে সঙ্গে নিয়ে একটা বনের মধ্যে বেড়াতে গেলেন। বনের মধ্যে একটা গাছের মধ্যে মৌচাক ছিল; চাকের মধ্য হতে ফোঁটা ফোঁটা মধু ঝরে পড়ছিল। একটি লোক নীচে দাঁড়িয়ে সেই মধু হাঁ করে খাচ্ছিল। মধুপানে সে ব্যক্তি এমনি মত্ত হয়েছিল যে, তার বাহ্য জ্ঞান একরকম রহিত হয়েছিল। একটি প্রকান্ড অজগর সর্প মুখ হাঁ করে ঐ লোকটার দিকে আসছিল। যুধিষ্ঠির শ্রী কৃষ্ণকে বললেন,-"এ লোকটিকে তো এখনই সাপে খেয়ে ফেলবে!"
শ্রী কৃষ্ণ বললেন-"লোকটিকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে ডাকুন।"
যুধিষ্ঠির লোকটিকে ডাকতে লাগলেন; কিন্তু লোকটি মধুপানে এমন মত্ত যে, যুধিষ্ঠিরের ডাক শুনতেই পেল না। যুধিষ্ঠির পুনরায় লোকটির কাছে গিয়ে চিৎকার করে ডাকতে লাগলেন।
অনেক্ষন পর লোকটি বলল-"আর এক ফোঁটা।" কিন্তু এই অবসরে লোকটিকে সাপে গ্রাস করে ফেলল।
শ্রী কৃষ্ণ যুধিষ্ঠির কে বললেন-
"আপনি সে-সময় আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, কেন আমার বাঁশির সুরে কেউ কেউ তো আকৃষ্ট হচ্ছে না? আপনি ত এই লোকটিকে এত ডাকলেন, কিন্তু আপনার ডাক লোকটি শুনল না কেন ?

উপদেশঃ সংসারটা হচ্ছে মধুরচাক আর বিষয় আশয় হচ্ছে সর্প । সংসার এর মধুপানে আমরা মত্ত হয়ে ভগবান এর ডাক শুনতে পাচ্ছি না। আমরা কেবল বলছি, আর কয়েকদিন পরে ছেলে উপযুক্ত হলেই তার হাতে সংসারের ভার দিয়ে বাকি জীবনটা কেবল ভগবান এর নাম করেই কাটাব। ছেলে উপযুক্ত হলে বললাম, পৌত্রের মুখ দেখতে পেলেই আমার সংসার স্বাদ মিটে যেত। পৌত্রের মুখ দেখতে পেয়ে বললাম, পৌত্রের বিবাহ দিতে পারলেই আমার সব কাজ শেষ। এই রূপ বলতে বলতেই মৃত্যু রূপ সর্প এসে গ্রাস করে ফেলে ।।

 হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে, হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে.

Post a Comment

0 Comments