গীতা মাহাত্ম্য:
একং শাস্ত্রং দেবকীপুত্রগীতং
একো দেবো দেবকীপুত্র এব।
একো মন্ত্রস্তস্য নামানি যানি
কর্মাপেক্যং তস্য দেবস্য সেবা।।
অধ্যায় সারকথা:
১ম অধ্যায়ঃ বিষাদ যোগ
আমাদের মনগড়া ধর্ম যেমন দেহধর্ম-কুল-ধর্ম জাতি-ধর্ম প্রভৃতি এগুলি সনাতন-ধর্ম নয়। এইভাবে যতদিন দেহাত্ম-বুদ্ধি থাকবে, ততদিন কেবল শোক-মোহ-ভয় ও ক্লেশাদি ভোগ করব। এবং পরিণামে বিষাদই লাভ করব।
২য় অধ্যায়ঃ সাংখ্য যোগ
দীক্ষা গ্রহণের পরে গুরুদেবের কৃপায় আত্মজ্ঞান লাভ হয় এবং ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়া যায়। তখনই আনন্দময় জীবনের স্বাদ লাভ করা যায়।
৩য় অধ্যায়ঃ কর্ম যোগ
কর্মযোগ মানে কেবল ভগবানের সন্তুষ্টি বিধানের জন্য কর্ম করা। ভগবানের সেবা ছাড়া জীবনে কোন মঙ্গল হতে পারে না। সেই সঙ্গে এটা জানা দরকার এই যে, কাম জীবনের প্রধান শত্রু।
৪র্থ অধ্যায়ঃ জ্ঞান যোগ
গুরু পরম্পরা ধারায় দীক্ষা লাভ করার পর, শ্রদ্ধা সহকারে তাঁর সেবা এবং তাঁর কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করার মাধ্যমে দিব্য-জ্ঞান লাভ হয়। ভগবানের জন্ম এবং কর্ম ভালোভাবে জানাটাই হচ্ছে প্রকৃত জ্ঞান।
৫ম অধ্যায়ঃ কর্ম সন্ন্যাস যোগ
কর্ম করে তার ফল ত্যাগ করাটাই হচ্ছে প্রকৃত সন্ন্যাস। ভগবানে সমস্ত কর্ম অর্পণ করাটাই হচ্ছে প্রকৃত শান্তি।
৬ষ্ঠ অধ্যায়ঃ অভ্যাস যোগ
মন তোমার বন্ধু এবং মন তোমার শত্রু। ভক্তিযোগে মনকে ভগবানের সেবায় নিয়োজিত করে তাকে বন্ধুত্বে পরিণত কর। ভক্তিযোগ হচ্ছে সমস্ত যোগের থেকে শ্রেষ্ঠ।
৭ম অধ্যায়ঃ বিজ্ঞান যোগ
ভক্তিযোগে কিভাবে ভগবানের সেবায় যুক্ত হতে হবে, তা বিজ্ঞানসম্মত ভাবে বোঝানো হয়েছে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শরণাগতি ছাড়া মায়ার হস্ত থেকে উদ্ধারের কোনো উপায় নাই। সেইসঙ্গে এটা জানা দরকার যে, দেবতা উপাসনায় কোন মঙ্গল লাভ হয় না।
৮ম অধ্যায়ঃ অক্ষরব্রহ্ম যোগ
ভক্তিযোগ যুক্ত ঐকান্তিক ভক্তের কাছে ভগবান সহজেই প্রকাশিত হন। ভগবানের স্মরণ করতে করতে মৃত্যুবরণ করতে পারলেই ভগবদ্ লাভ নিশ্চিত।
৯ম অধ্যায়ঃ রাজগুহ্য যোগ
ভগবদ্গীতার জ্ঞান হচ্ছে সমস্ত বিদ্যার রাজা। ভগবান তাঁর ভক্তের সমস্ত দায়িত্ব তিনি নিজেই গ্রহণ করেন এবং ভক্তকে সর্বতোভাবে রক্ষা করেন।
১০ম অধ্যায়ঃ বিভূতি যোগ
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত বিভূতি ও শক্তির আধার। এটি উপলব্ধি করতে পারলেই ভগবৎ ভজন সম্ভব হয়।
১১শ অধ্যায়ঃ বিশ্বরূপ দর্শন যোগ
ভগবানের বিশ্বরূপ হচ্ছে মায়িক। দ্বিভুজ শ্যামসুন্দর নরবপুই তাঁর প্রকৃত স্বরূপ। অনন্য ভক্তিযোগ ও প্রেমচক্ষে ভক্ত এই রূপ দর্শন করতে সমর্থ্য।
১২শ অধ্যায়ঃ ভক্তি যোগ
শ্রীকৃষ্ণই একমাত্র উপাস্যত-তত্ত্ব। ঐকান্তিক ভক্তিযুক্ত ব্যক্তিই ভগবান শ্রীকৃষ্ণের অত্যন্ত প্রিয়।
১৩শ অধ্যায়ঃ প্রকৃতি-পুরুষ বিবেক যোগ
যখন ভক্তে শুদ্ধভক্তির উদয় হয় তখন এই তথ্যগুলি হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন। এবং ভক্তিযোগে উত্তরোত্তর দিব্য আনন্দ লাভ করতে পারেন।
১৪শ অধ্যায়ঃ গুণত্রয়-বিভাগ যোগ
ত্রিগুণ থেকে এই সংসার দুঃখ লাভ হয়। অব্যভিচারী ভক্তি দিয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবা করলে এই গুণকে জয় করা সম্ভব।
১৫শ অধ্যায়ঃ পুরুষোত্তম যোগ
এই সংসার হচ্ছে একটি উল্টো অশ্বস্থ বৃক্ষ সদৃশ। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হয় এই সংসার বৃক্ষ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
১৬শ অধ্যায়ঃ দৈবাসুর-সম্পদ বিভাগ
দৈব গুণসম্পন্ন ব্যক্তিরা ভগবানের সেবা করতে পারেন। ভক্তি যোগে যুক্ত হয় দৈবগুণের বিকাশ সাধন করা যায়।
১৭শ অধ্যায়ঃ শ্রদ্ধাত্রয়-বিভাগ যোগ
বিভিন্ন প্রকার শ্রদ্ধা অনুযায়ী মানুষ বিভিন্ন দেব-দেবীর উপাসনা করেন। কেবল নির্গুণ স্তরে ভগবানকে লাভ করা সম্ভব।
১৮শ অধ্যায়ঃ মোক্ষ যোগ
সমগ্র গীতার সার বর্ণিত হয়েছে। সমস্ত ধর্ম পরিত্যাগ করে কেবল ভগবান শ্রীকৃষ্ণের সেবায় যুক্ত হওয়ার চরম নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উপসংহারঃ
গীতার উপদেশ ভাই
বূঝ ভালো করি।
পাইবে কৃষ্ণের কৃপা
ভজিবে শ্রীহরি
(শ্রীল প্রভুপাদের উক্তি)
গীতা জয়ন্তী উৎসব কি জয়!!!
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
0 Comments