বৈষ্ণবের আহার্য কি? মহাপ্রসাদ কে বিতরণ করার যোগ্য বা স্পর্শজনিত দোষ আছে কি না?
বিষ্ণু নৈবেদ্য বা কৃষ্ণ প্রসাদই বৈষ্ণবের একমাত্র খাদ্য।
"প্রসাদ ভােজন নিত্য, শুদ্ধ-বৈষ্ণবের কৃত্য, অপ্রসাদ না করে ভক্ষণ।" ভগবানকে নিবেদন করার পর সেই প্রসাদ তদ্ভক্তকে নিবেদন করার পর হয় মহাপ্রসাদ। আর সেই মহাপ্রসাদই বৈষ্ণব আনন্দ চিত্তে গ্রহণ করেন। দেবাদিদেব মহাদেব ভগবানের প্রসাদ পেয়ে আনন্দে নিত্য করে ছিলেন।
"কৃষ্ণের প্রসাদ অন্ন ত্রিজগৎ করে ধন্য,
ত্রিপুরারী নাচে যাহা পাইয়া।"
শাস্ত্রে বলা হয়েছে—
"আহারশুদ্ধৌ সত্ত্বশুদ্ধিঃ সত্ত্বশুদ্ধৌ ধ্রুবা স্মৃতিঃ।
স্মৃতিলম্ভে সর্ব্বগ্রন্থিনাং বিপ্রমোক্ষঃ॥"
—ছান্দোগ্যোপনিষৎ, ৭/২৬/২।
"আহারশুদ্ধিতে অন্তঃকরণ শুদ্ধ হয়, অন্তঃকরণ শুদ্ধ হইলে ভগবানের অবিচ্ছিন্ন স্মৃতি হয়, অবিচ্ছিন্না স্মৃতিতে সকল পাপ বিনষ্ট হয়।"
আহার দ্বারা দেহ ও মন শুদ্ধ হয়। অসদাচারী, পতিত, অহংকারী অধার্মিক এসব লোকের স্পর্শজনিত প্রসাদ গ্রহণকারীর শরীরে সঞ্চারিত হয়। ভগবৎ বিমুখ বিষয়ীর গৃহে অন্নাদি গ্রহণ করা ভক্তি বিরুদ্ধ। বিষয়ীর বিষয়াসক্তি বা অন্যান্য দোষ অন্নের মাধ্যমে সাধক দেহে সঞ্চারিত হয়।
"বিষয়ীর অন্ন খাইলে মলিন হয় মন।
মন দুষ্ট হইলে নহে কৃষ্ণের স্মরণ॥"
সুতরাং বৈষ্ণব মাত্রই সচ্চরিত্র গৃহস্থ ভক্তের গৃহে প্রসাদ গ্রহণ করবেন। যেখানে সেখানে, যার তার হাতের ছোয়া প্রসাদ কখনও বৈষ্ণব গ্রহণ করবেন না। অনেক সময় দেখা যায় শুধু হরিনাম করে, দীক্ষিত নয় এমন লোক প্রসাদ বিতরণ করে তা মোটেও উচিৎ নয়। তিনটি বিষয় মনে রাখতে হবে—
১) ভোগ রান্না,
২) ভোগ নিবেদন এবং
৩) প্রসাদ বিতরণ,
সেবায় একমাত্র দীক্ষিত ভক্তগণই সেবায় অধিকারী। অন্যদের দিয়ে করানো শাস্ত্র সিদ্ধান্ত বিরুদ্ধ। যারা ভক্ত হন নাই তারাও যথাসম্ভব দীক্ষিত বৈষ্ণবের হাতে প্রসাদ নিবেন কারণ বৈষ্ণবের শুদ্ধগুণাবলী আপনার মধ্যে সঞ্চারিত হবে।
হরে কৃষ্ণ🙏🙏।
0 Comments