ভক্ত কেন জ্ঞানী হন




ভক্ত কেন জ্ঞানী হন


শুদ্ধ অন্তর দিয়ে যারা ঈশ্বরকে ভালবাসে তাদেরকে বলা হয় ভক্ত।মানুষ যখন ভগবানের সেবায় উন্মুখ হয়ে অন্তঃকরন শুদ্ধ সত্যে অধিষ্ঠিত হন তখন তাকে বলা শুদ্ধভক্ত। 


মানুষ শুদ্ধভক্তে পরিনত হয়ে তৃনের মত সুনীচ হন।যেমন,ফলবান বৃক্ষ মাথা নীচু থাকে এবং গুনবান ব্যাক্তি চিরকালই বিনীত হন।ভগবৎ-ভক্তিময় জীবনই চিন্ময় আনন্দ। 

রাজার রাজ্য-সুখ,যোগীর যোগ-সুখ,জ্ঞানীর ব্রহ্ম-সুখ বা মুক্তি-সুখ,সকলই ভগবৎ ভক্তির নিকট তুচ্ছ।জাগতিক বিদ্যা বা জ্ঞানের দ্বারা ভক্তি লাভ হয় না।


দক্ষিন ভারতে ভ্রমন কালে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু শুনলেন এক মুর্খ ব্রাহ্মন অদ্ভুত গীতা পাঠ করেন। তিনি সেই ব্রাহ্মনকে দেখতে ও তার গীতা পাঠ শ্রবন করতে গিয়ে দেখলেন, সেই ব্রাহ্মন গীতা পাঠ করতে বসে শুধু কান্না করছে।মহাপ্রভু তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, গীতা পাঠ করার সময় কান্না করলে কেন ? 

ব্রাহ্মন বললেন,ভগবান কতই মহান আর কৃপাময় যে,তিনি অর্জুনের রথের সারথি হয়ে অর্জুনের নির্দেশ পালন করছেন।ভগবান তার ভক্তের জন্য কত কি করেন,আর আমি এখনও তার ভক্ত হতে পারলাম না।বলে আবার কান্নাকাটি করতে লাগলেন। 

এই কথা শুনে মহাপ্রভু বললেন,সত্যি তুমিই বিদ্ধান ও প্রকৃত গীতা পাঠক।অনেকে গীতা পাঠ করে কিন্তু তারা গীতার জ্ঞান ও অর্থ বুঝেও বুঝেনা,গীতার নির্দেশ পালন করে না, নিজের জীবনে প্রয়োগ করে না,তারা তথাকথিত বিদ্ধান হলেও তারা মহামুর্খ।এমনই অনেক উদাহরন আছে।


🌼শ্রীধর স্কুল-কলেজে পড়ালেখা করেনি সহজ সরল চাষী ছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সান্নিধ্য পেয়ে ভগবৎ-ভক্তি ও কৃষ্ণপ্রেম লাভ করে শ্রীধর পরবর্ত্তীতে শ্রীমদ্ভাগবতের ভাষ্য রচনা করেন।


🌹নারদ মুনি দাসীপুত্র ছিলেন।বাল্যকালে কয়েকজন মাহাত্মাদের সেবা করে তাদের কৃপায় ভগবৎ-ভক্তিজ্ঞান লাভ করে ভগবানের পার্ষদ হয়েছেন,ব্রহ্মান্ডের সর্বত্র ভ্রমন করতে পারেন এবং ব্যাসদেবকে ভাগবত জ্ঞান দান করেন।


🌻ব্রজগোপীরা শুধু ভক্তির দ্বারা ভগবানকে লাভ করেছেন।


💐যশোদা মায়ের কোন বিদ্যা ছিল না ,কিন্তু শুধু ভক্তি দ্বারা কৃষ্ণকে পুত্র রূপে লাভ করেন।


🌹কৃষ্ণলীলায় ব্রাহ্মনের পত্নীরা ভক্তিদ্বারা কৃষ্ণ দর্শন করেছিলেন কিন্তু তাদের স্বামীরা জ্ঞানী ও অহংকারীর জন্য কৃষ্ণকে জানতেও পারেনি।


এইরকম আরও অনেক সত্যি উদাহরন আছে কিন্তু অজ্ঞানীরা তা জেনেও ভগবৎ-ভক্তি লাভে শাস্ত্র সিদ্ধান্তের প্রতি দৃঢ শ্রদ্ধাশীল হয় না।


🌺কিন্তু ভক্তগন নিয়মিত গীতা পাঠ শ্রবন করে এবং স্বয়ং গীতার জ্ঞান দানকারী পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শরন গ্রহন করে, তার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেন।।

                          

🌿হরে কৃষ্ণ 🌻

Post a Comment

0 Comments