ᴇᴘɪꜱᴏᴅᴇ ɴᴏ.⑥


গুরুমহারাজের কৃপাদৃষ্টি সবার জন্যই সমান,


অনেক ভক্তদের একটা ভুল কনসেপ্ট হচ্ছে, গুরুমহারাজ হয়তো কেবল শিষ্যদের কথাই ভাবেন! সেজন্য আজকের লীলাটি কেবল তাদের উদ্দেশ্যে নোটস করছি। প্রকৃতপক্ষে একজন সদ্গুরুদেব কেবল যে মনুষ্যজীবের কথা ভাবেন তেমনটাও ভুল, তিনি এমনকী সামান্য একটা পিপীলিকা কিভাবে ভগবানের কাছে ফিরে যাবেন, সেই চিন্তায় রত থাকেন সর্বদা।


তো, একবার এক গৃহস্থ ভক্ত তাঁর পিতার জন্য ডাক্তার দেখাতে আসছিল কলকাতায়। অতঃপর ডাক্তারের ট্রিটমেন্ট শেষে তিনি স্ত্রী, পুত্র সবাইকে নিয়ে মায়াপুর মন্দিরে যান ভগবানকে দর্শন করার জন্য। তারপর প্রসাদ পাবার জন্য তিনি প্রসাদ হলে প্রবেশ করেন। এদিকে প্রসাদ হলে গুরুমহারাজের ব্যক্তিগত সেক্রেটারি শ্রীপাদ্ মহাবরাহ প্রভু তখন প্রসাদ পাচ্ছিলেন। তিনি মহাবরাহ প্রভু এমনকী গুরুমহারাজের সমন্ধে আগে থেকেই চিনতেন। কিন্তু তিনি গুরুমহারাজের দীক্ষিত শিষ্য নন, অদীক্ষিত!


তারপর ঐ প্রভুটা মহাবরাহ প্রভুর সাথে একসাথে রুটি প্রসাদ পাচ্ছিলেন। তখন মহাবরাহ প্রভু তাঁকে জিজ্ঞেস করছিলেন, তিনি কেন এসেছেন বা বিশেষ কোন কারণ আছে কিনা। তারপর ঐ প্রভুটা মহাবরাহ প্রভুকে বলছিলেন যে, তিনি পিতার ট্রিটমেন্টের জন্য এখানে এসেছিলেন। এভাবে দু'জনের মাঝে বিভিন্ন আলাপচারিতা চলতে থাকলো....


তো, একসময় ঐ প্রভুজী মহাবরাহ প্রভুকে বলছিলেন, আপনারা তো ব্রহ্মচারী মানুষ! গুরুমহারাজও সন্ন্যাসী ব্যক্তিত্ব, তাই আপনাদের কারো কথা চিন্তা করতে হয় না। কিন্তু আমাদের দেখেন, প্রসাদ পেতে গেলেও আগে চিন্তা করতে হয় স্ত্রী খেয়েছে কিনা! সন্তান খেয়েছে কিনা.... সংসারের কত কিছু ভাবতে হয়, কিন্তু আপনারা সন্ন্যাসী মানুষ! এতো কিছু চিন্তা নেই আপনাদের।


অতঃপর এভাবেই তাঁদের দু'জনের মাঝে কিছু কথাবার্তা সম্পূর্ণ হয়!


তারপর মহাবরাহ প্রভু প্রসাদ পেয়ে গুরুমহারাজের রুমে যান। মহাবরাহ প্রভু রুমে প্রবেশ করা মাত্রই গুরুমহারাজ তাঁকে জিজ্ঞেস করছেন,


"তোমার সাথে যে একজন গৃহস্থ ভক্ত ছিল সে কী ঠিকমত প্রসাদ পেয়েছে? সে এখন কোথায় থাকবে? এক কাজ করো, তাঁর জন্য একটা রুম ব্যবস্থা করে দাও, সে এখানে এসে আজ রাত্রিযাপন করবে।"


গুরুমহারাজের মুখ থেকে এগুলো শোনার পর মহাবরাহ প্রভু বিস্মিত হয়ে গেলো এবং ভাবতে থাকলো, আমি তো ঐ প্রভুর সমন্ধে গুরুমহারাজের কাছে কিছুই বলিনি! গুরুমহারাজ এসব কীভাবে জানলো? তাই সবারই জানা উচিত যে, একজন সদ্গুরুদেব অন্তর্যামী, তিনি সবকিছু সমন্ধে অবগত রয়েছেন, তাঁকে কিছু বলে দিতে হয় না।


তারপর গুরুমহারাজের নির্দেশমতো ঐ প্রভুকে মহাবরাহ প্রভু খুঁজে বের করেন এবং তার কাছে সমস্তকিছু বর্ণনা করেন। মহাবরাহ প্রভুর মুখ থেকে গুরুমহারাজের মহিমা শ্রবণ করার পর তিনি নিজেকে খুব অপরাধী ভাবতে লাগলেন। অতঃপর তিনি তৎক্ষণাৎ গুরুমহারাজের রুমে যান এবং গুরুমহারাজের চরণে ক্ষমা প্রার্থনা করে অঝরে কাঁদতে লাগলেন....


➤➤#আমার_কিছু_কথাঃ আমি নিশ্চিত যে, ঐ প্রভুটা হয়তো পরবর্তীতে গুরুমহারাজের কাছ থেকে দীক্ষা পান। কারণ একটা ঘটনা উনার চিন্তাধারাকে অবিস্মরণীয় পরির্বতন করে দিয়েছেন। সো, আমরা হয়তো অনেকেই ভেবে থাকি গুরুমহারাজ কেবল তাঁর শিষ্যদের কথাই চিন্তা করেন। বাট.... নো! নেভার। একজন মুক্ত পুরুষ সর্বদাই বদ্ধজীবদের কথা চিন্তা করেন, তিনি সর্বক্ষণ ভাবেন, কীভাবে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের চরণকমলে তাঁকে অর্পণ করা যায়।


আগামীকাল আপনাদের শ্রবণ করাব গুরুমহারাজের অন্য একটি অপ্রাকৃত লীলা। 


জয় শ্রীল গুরুমহারাজ!

জয় শ্রীল প্রভুপাদ!


#ProsenjitPaul

Post a Comment

0 Comments