ঐন্দ্র প্রভুর জীবনী 

ঐন্দ্র প্রভুর ডেইলি বেসিক রুটিন যদি বলি তিনি রাতে ঘুমাতেন না। প্রত্যেক দিন ভোর চারটায় মঙ্গল আরতি তে আসতেন  এবং একাধারে দুপুর দুইটা পর্যন্ত জপ করতেন,মাঝখানে কিছুটা ব্রেক নিতেন খাওয়া-দাওয়ার জন্য।সকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কন্টিনিউ 2 লক্ষ হরিনাম জপ করে ঘুমাতে যেতেন তিনি 2 টা থেকে 4 টা পর্যন্ত ঘুমাতেন। ঘুম থেকে উঠার পর ঐন্দ্র প্রভুর বাথরুম মার্জন সেবা ছিল।বাথরুম মার্জন সেবা করার পর, তিনি স্নানাদি কমপ্লিট  করে সন্ধ্যার সময় কীর্তনে বসতেন। সেই কীর্তন চলতো রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত। সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত প্রশ্ন-উত্তরের ক্লাস দিতেন। তখন সকল ভক্তদের যে কোন সমস্যা সমাধান দিতেন তিনি।সবার সাথে কথা বলা শেষ করে দশটার মধ্যে সবকিছু কমপ্লিট করে, সারারাত তার বিগ্রহ কে সময় দিতেন।

রাত দশটা থেকে ভোর চারটা পর্যন্ত তিনি তার বিগ্রহ নিতাই শচীসুত,3000 শালিগ্রাম শিলা, শ্রীমতি রাধারানী এবং শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী ঠাকুরে বিগ্রহের নিত্য সেবা করতেন প্রতিদিন এবং  তিনি প্রতিদিন 32 আইটেম রান্না করতেন নিজের হাতে তার বিগ্রহদের জন্য। তিনি 3000 শালিগ্রাম নিজের হাতে তেল মেখে  ম্যাসাজ করতেন।  ভোর চারটা পর্যন্ত তিনি নিজের শালিগ্রাম স্নান করিয়ে একদম সুন্দর করে সিঙ্গার সেবা কমপ্লিট করে  তারপর তিনি মঙ্গল আরতি  তে যোগদান করতেন। এটা ছিল ঐন্দ্র প্রভুর ডেইলি রুটিন।

অনেকে প্রশ্ন করতেন যে একটা শালিগ্রাম পালন করলে তো অনেক কিছু আপনি কেন 3000 শালিগ্রাম পালন করেন? এর উত্তর ঐন্দ্র প্রভু খুব সুন্দর ভাবে দিতেন, যখন কিনা সেই প্রশ্নটা করা হতো তখন তিনি সবসময়ই একটা কথা বলতেন আমি আগে রাধা শ্যামসুন্দরের শৃঙ্গার করতাম কিন্তু এখন দিনদিন অনেকের সেবা বেড়ে গেছে। আগে আমি প্রতিদিন শ্যামসুন্দর কে ধরার সুযোগ পেতাম, কিন্তু এখন সেটা কমতে কমতে একদিনে নেমে গেছে। এখন আমি শুধু প্রতি শনিবার শ্যামসুন্দর কে ধরতে পারি। আমার খুব কষ্ট হয় আমি অন্যদিন  শ্যামসুন্দর কে ধরতে পারি না এজন্য শ্যামসুন্দর নিজে 3000 শালিগ্রাম রূপে আমার কাছে আসছে আমি যেন তার সেবা করতে পারি।

"শালিগ্রাম শিলার একটি সুন্দর কাহিনি আছে, তিন হাজার শালিগ্রাম এর মধ্যে কিছু ফাটা শালি গ্রাম থাকে, এই পরিপ্রেক্ষিতে  ঐন্দ্র প্রভুকে একজন প্রভু উপদেশ দিয়েছিলেন যে, তুমি ফাটা শালিগ্রাম এর সেবা করোনা,  কেননা ফাটা শালিগ্রাম এর সেবা করলে তোমার ক্ষতি হতে পারে, তখন প্রত্তুত্তরে ঐন্দ্র প্রভু উনাকে বলেছিলেন যে, আপনি ফাটা শালিগ্রাম এর দোষ ধরছেন, আর এই জন্য ফাটা শালিগ্রামরূপ ভগবান এর সেবা করা যাবেনা, সেই হিসেবে তো আমার মধ্যে হাজার হাজার দোষ আছে, তাহলে আমি যদি ভগবানের সেবা এই দোষবিচারে করতে না পারি, তাহলে আমার মতো দোষযুক্ত অধমকে ভগবান কিভাবে গ্রহণ করবেন।। 

যদি আমি ভগবানের ফাটা দেহকে গ্রহণ না করতে পারি,দোষযুক্ত শালিগ্রাম কে গ্রহণ না করতে পারি, আমার শরীরে তো সবকিছুই দোষে ভরা,তাহলে ভগবান কেন আমায় গ্রহণ করবেন,তাই শালিগ্রাম ফাটা হোক বা যাই হোক, তিনি আমার শ্যামসুন্দর আমি তাকে সেভাবে ই পূজো করবো। 

ঐন্দ্র প্রভু সর্বদা বৈরাগ্য রুপ দারন করতেন এবং তিনি কোন সেলাই করা কাপড় ধারন করতেন না শরীরে।ঐন্দ্র প্রভু সেলাই বিহীন কাপড় পরতেন এবং তিনি কোন ধরনের সেলাই বস্তুু গ্রহন করতেন না।  তার সাথে তিনি কতটা বৈরাগ্য ধারন করতেন তার একটি সিম্পল একটি উদাহরণ দিচ্ছি, তার রুমে একটি  এসি ছিলো সে এসি টি কি ভাবে এসে ছিলো তাও বলছি। বৃন্দাবনে প্রচুর গরম পরে। প্রায় ৪৫" ৪৬" ডিগ্রি তাপমাত্রা গরম পরে। তার রুমে নিতাই শচীসুতর বিগ্রহ ছিলো। সবাই বলতো এত গরম আপনি তো ফ্যান বা এসি ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ঐন্দ্র প্রভু কখনো ফ্যান বা এসি ব্যবহার করেন নি। একদিন ঐন্দ্র প্রভু দেখলেন  নিতাই শচীসুত বিগ্রহের পিছনে খুব গরম হয়ে গেছে। প্রচুর গরম। আইন্দ্র প্রভু বিগ্রহ থেকে ঘাম ঝড়ছে বুঝতে পেরে, তখন ওই সময় নিতাই-শচীসুতোর জন্য এসি লাগানোর নির্দেশ দেন। এসি লাগানো হয়। নিতাই-শচীসুত সারাদিন সেই এসি ব্যাবহার করে। কিন্তুু ঐন্দ্র প্রভু রুমে ঢুকার ১ ঘন্টা আগে এসি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এসি বন্ধ করার ১ ঘন্টা পরে তিনি ঢুকেন।ঢুকে তখন তিনি সেবাদী কাজ করতেন। 

ঐন্দ্র প্রভু রাধারানীর প্রতি অনেক আসক্ত ছিলেন। তিনি রাধারানী ছাড়া কিছুই বুঝতেন না। সম্পূর্ন রাধা দাস্য ভাব ছিল তার এবং একবার  তিনি কথার ছলে বলেই ফেলছেন, ৩০০০ শালীগ্রামের কথা বলা হচ্ছে, তখন ঐন্দ্র প্রভু বলে আমার রাধারানী অনেক বেশি স্পেশাল। ওই মন্দিরে শ্যামসুন্দরের  কাছে একমাত্র রাধারানী কিন্তুু আমার রাধারানীর কাছে ৩০০০ শ্যামসুন্দর আছে। এটা আমার রাধারানী পছন্দ সে কার সাথে রাসে যাবে, সে কার সাথে লীলা বিহার করবে। এটা আমার রাধারানীর ব্যক্তিগত ৩০০০ অপসোনাল।

এই ছিল ঐন্দ্র প্রভুর রাধারানীর প্রতি ভালবাসা।

বিঃদ্রঃ- নিচের ছবিতে ঐন্দ্র প্রভুর  সেবিত নিতাইশচীসুত ও শালগ্রাম শিলা আর অন্য বিগ্রহ রয়েছে। 

আজ ঐন্দ্র প্রভুর ১৩ তম তিরোভাব দিবস।  ঐন্দ্র প্রভু ছিলেন সর্বকালের সেরা একজন কীর্তনীয়া। উনার দ্বারা হরিনাম সংকীর্তন আন্দোলন জোরালো ভাবে প্রচার পেয়েছে।

উনি কীর্তনকে এক অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছেন।


হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে 

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে


(Copied)

Post a Comment

0 Comments