🍀🌺🌼 গোবর্ধন পূজা 🌼🌺🍀
আজ গোবর্ধন পূজা। গোবর্ধন পর্বত বৃন্দাবনে অবস্থিত । গিরি গোবর্ধন স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণের একটি স্বরূপ । কথিত আছে কেবল ব্রজ বাসী ( বৃন্দাবনের স্থায়ী বাসিন্দা ) রাই এই পর্বতে উঠতে পারেন। বাকীরা পারেন না। এই পর্বতকে অনেকে পরিক্রমা করেন। এই পূজা সম্বন্ধে পুরানে একটি ঘটনার বর্ণনা দেওয়া আছে ।
একদা শ্রীকৃষ্ণ দেখলেন গোপেরা বিশাল আয়োজন করে দেবরাজ ইন্দ্রের পূজার আয়োজন করেছে । কারন জিজ্ঞাসা করতেই গোপেরা জানালো, ইন্দ্র দেবতা এতে খুশী হয়ে বৃষ্টি দেবেন । এতে সবুজ তৃন উৎপন্ন হবে , যা খেয়ে গো ধন গুলি উত্তম দুগ্ধ প্রদান করবে । এছাড়া বৃষ্টি হলে কৃষি কাজ শুরু হবে । ফসলে ভরে যাবে কৃষকের কৃষি জমি । স্বর্গের দেবতা দের রাজা হলেন ইন্দ্র । তার কাজ হল বৃষ্টি প্রদান করা । পরমেশ্বর ভগবানের ইচ্ছায় পবন , বরুণ , অগ্নি , সূর্য , চন্দ্র , মদন , যম , শনি – ইত্যাদি দেবতা গন নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন । এটা করতে তাঁরা বাধ্য । তাঁদের কে বিশাল আয়োজনে পূজা দিতে হবে – তবেই তাঁরা নিজ কর্ম করবেন এমন কোন বাধ্যতা নেই । এটা দেখে আমাদের বর্তমান যুগের ঘুষ প্রথার কথা মনে পড়ে যায় । আমরা আমাদের অধিকার গুলি পাওয়ার জন্য ঘুষ দেই , নেই । ঘুষ নেওয়া আর দেওয়া আমাদের স্বভাব হয়ে গেছে । এতে নাতো দেশ আগাচ্ছে না আমরা আগাচ্ছি । ঘুষ এর কবলে সমাজ । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চেয়েছিলেন মানুষের বিকাশ । তিনি মানব জাতিকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রের গর্ব চূর্ণ তথা ঘুষ প্রথার বিলোপ সাধনের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবন বাসীদের বোঝালেন ইন্দ্রের পূজা ছেড়ে গিরি গোবর্ধনের পূজা করতে । গোপেরা সেকথা শুনে ইন্দ্রের পূজো ত্যাগ করে গিরি গোবর্ধনের পূজা করলেন । এতে ইন্দ্র ভীষন ক্ষেপে গেলেন । তিনি তখন সাম্বর্তক মেঘ কে ডাকলেন , তাঁকে আদেশ দিলেন বৃন্দাবনে ভয়ংকর বর্ষণ করতে । বৃন্দাবনে খুব বৃষ্টি , ঝোড়ো হাওয়া সৃষ্টি হল । ইন্দ্র দেবতা ঐরাবত হাতির পীঠে উঠে তাঁর শক্তি প্রয়োগ করে বৃন্দাবনে মহা দুর্যোগ উৎপন্ন করলেন । মুষলধারায় বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হল । গো ধন গুলো , গোপেরা সেই দুর্যোগে পড়ে ভীষণ কষ্ট পেলো । সকলে মিলে শ্রীকৃষ্ণের শরণাপন্ন হলেন । শ্রীকৃষ্ণ সকলকে তাঁদের পরিবার ও গো ধন গুলো সহিত গোবর্ধন পর্বতের দিকে যেতে বললেন । সকলে সেখানে উপস্থিত হলেন । শ্রী কৃষ্ণ গোটা গোবর্ধন গিরিকে তুলে ধরলেন , যেমন একটি শিশু একটি ব্যাঙের ছাতা তোলে । তা আবার বাম হস্তে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে । সকলে এ দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হলেন । তাঁরা ত্রেতা যুগে প্রভুর ভক্ত পরম বৈষ্ণব হনুমান এর কথা শুনেছেন , যিনি গোটা গন্ধমাদন পর্বত তুলে এনেছিলেন । শ্রীকৃষ্ণের এই শক্তি দেখে তাঁরা অবাক হলেন , ভগবানের লীলা দেখে ধন্য হলেন । ব্রজ বাসীরা তাঁদের পশু , শকট , ভৃত্য ও পরিবার নিয়ে সেই পর্বতের তলাতে দাঁড়িয়ে ভগবানের গুন কীর্তন করতে থাকলেন । অপর দিকে ইন্দ্র দুর্যোগ দিয়েই চললেন ।
এক সময় মেঘ গুলোর জল শেষ হয়ে গেলো । আর বর্ষণ করার শক্তি থাকলো না । ইন্দ্রের শক্তিও ফুরিয়ে গেলো । ইন্দ্র বুঝতে পারলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শক্তির কাছে তিনি কিছুই না । ভগবানের ইচ্ছাতেই সব । তিনি প্রভু । হরি যাকে রক্ষা করেন তাঁকে মারবার ক্ষমতা কারোর নেই । ইন্দ্র এসে ভগবানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন । শ্রীকৃষ্ণ প্রথমে তাঁকে ঘুষ নেবার অপরাধে , গর্বের জন্য খুব ভ্যৎসনা করলেন । শেষে করুণাময় প্রভু তাঁকে ক্ষমা করলেন । তাঁকে আর ঘুষ নিতে মানা করলেন , গর্বে উমত্ত হতে মানা করলেন । এর পর সুরভী গাভী তার দুগ্ধ দ্বারা ভগবানের অভিষেক করলেন । ঐরাবত তাঁর শুঁড়ে মন্দাকিনীর জল নিয়ে এসে অভিষেক করলেন । ঋষি , মুনি , দেবতা , গন্ধর্ব , কিন্নড় , সিদ্ধ , চারণ সমবেত হয়ে ভগবানের মহিমা কীর্তন করলেন ।
ভগবানের এই লীলাকে স্মরণ করে আজও ভক্ত বৃন্দরা গিরি গোবর্ধনের পূজা করেন। সাথে হয় অন্নকূট উৎসব । ভগবানের অসীম ক্ষমতা। যিনি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধারন করে আছেন, তাঁর পক্ষে একটি পর্বত তৃন সমান ।
একদা শ্রীকৃষ্ণ দেখলেন গোপেরা বিশাল আয়োজন করে দেবরাজ ইন্দ্রের পূজার আয়োজন করেছে । কারন জিজ্ঞাসা করতেই গোপেরা জানালো, ইন্দ্র দেবতা এতে খুশী হয়ে বৃষ্টি দেবেন । এতে সবুজ তৃন উৎপন্ন হবে , যা খেয়ে গো ধন গুলি উত্তম দুগ্ধ প্রদান করবে । এছাড়া বৃষ্টি হলে কৃষি কাজ শুরু হবে । ফসলে ভরে যাবে কৃষকের কৃষি জমি । স্বর্গের দেবতা দের রাজা হলেন ইন্দ্র । তার কাজ হল বৃষ্টি প্রদান করা । পরমেশ্বর ভগবানের ইচ্ছায় পবন , বরুণ , অগ্নি , সূর্য , চন্দ্র , মদন , যম , শনি – ইত্যাদি দেবতা গন নিজের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন । এটা করতে তাঁরা বাধ্য । তাঁদের কে বিশাল আয়োজনে পূজা দিতে হবে – তবেই তাঁরা নিজ কর্ম করবেন এমন কোন বাধ্যতা নেই । এটা দেখে আমাদের বর্তমান যুগের ঘুষ প্রথার কথা মনে পড়ে যায় । আমরা আমাদের অধিকার গুলি পাওয়ার জন্য ঘুষ দেই , নেই । ঘুষ নেওয়া আর দেওয়া আমাদের স্বভাব হয়ে গেছে । এতে নাতো দেশ আগাচ্ছে না আমরা আগাচ্ছি । ঘুষ এর কবলে সমাজ । ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চেয়েছিলেন মানুষের বিকাশ । তিনি মানব জাতিকে গীতার জ্ঞান দিয়েছিলেন । তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ইন্দ্রের গর্ব চূর্ণ তথা ঘুষ প্রথার বিলোপ সাধনের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন ।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বৃন্দাবন বাসীদের বোঝালেন ইন্দ্রের পূজা ছেড়ে গিরি গোবর্ধনের পূজা করতে । গোপেরা সেকথা শুনে ইন্দ্রের পূজো ত্যাগ করে গিরি গোবর্ধনের পূজা করলেন । এতে ইন্দ্র ভীষন ক্ষেপে গেলেন । তিনি তখন সাম্বর্তক মেঘ কে ডাকলেন , তাঁকে আদেশ দিলেন বৃন্দাবনে ভয়ংকর বর্ষণ করতে । বৃন্দাবনে খুব বৃষ্টি , ঝোড়ো হাওয়া সৃষ্টি হল । ইন্দ্র দেবতা ঐরাবত হাতির পীঠে উঠে তাঁর শক্তি প্রয়োগ করে বৃন্দাবনে মহা দুর্যোগ উৎপন্ন করলেন । মুষলধারায় বৃষ্টিতে বন্যার সৃষ্টি হল । গো ধন গুলো , গোপেরা সেই দুর্যোগে পড়ে ভীষণ কষ্ট পেলো । সকলে মিলে শ্রীকৃষ্ণের শরণাপন্ন হলেন । শ্রীকৃষ্ণ সকলকে তাঁদের পরিবার ও গো ধন গুলো সহিত গোবর্ধন পর্বতের দিকে যেতে বললেন । সকলে সেখানে উপস্থিত হলেন । শ্রী কৃষ্ণ গোটা গোবর্ধন গিরিকে তুলে ধরলেন , যেমন একটি শিশু একটি ব্যাঙের ছাতা তোলে । তা আবার বাম হস্তে কনিষ্ঠ আঙ্গুলে । সকলে এ দৃশ্য দেখে স্তম্ভিত হলেন । তাঁরা ত্রেতা যুগে প্রভুর ভক্ত পরম বৈষ্ণব হনুমান এর কথা শুনেছেন , যিনি গোটা গন্ধমাদন পর্বত তুলে এনেছিলেন । শ্রীকৃষ্ণের এই শক্তি দেখে তাঁরা অবাক হলেন , ভগবানের লীলা দেখে ধন্য হলেন । ব্রজ বাসীরা তাঁদের পশু , শকট , ভৃত্য ও পরিবার নিয়ে সেই পর্বতের তলাতে দাঁড়িয়ে ভগবানের গুন কীর্তন করতে থাকলেন । অপর দিকে ইন্দ্র দুর্যোগ দিয়েই চললেন ।
এক সময় মেঘ গুলোর জল শেষ হয়ে গেলো । আর বর্ষণ করার শক্তি থাকলো না । ইন্দ্রের শক্তিও ফুরিয়ে গেলো । ইন্দ্র বুঝতে পারলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শক্তির কাছে তিনি কিছুই না । ভগবানের ইচ্ছাতেই সব । তিনি প্রভু । হরি যাকে রক্ষা করেন তাঁকে মারবার ক্ষমতা কারোর নেই । ইন্দ্র এসে ভগবানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন । শ্রীকৃষ্ণ প্রথমে তাঁকে ঘুষ নেবার অপরাধে , গর্বের জন্য খুব ভ্যৎসনা করলেন । শেষে করুণাময় প্রভু তাঁকে ক্ষমা করলেন । তাঁকে আর ঘুষ নিতে মানা করলেন , গর্বে উমত্ত হতে মানা করলেন । এর পর সুরভী গাভী তার দুগ্ধ দ্বারা ভগবানের অভিষেক করলেন । ঐরাবত তাঁর শুঁড়ে মন্দাকিনীর জল নিয়ে এসে অভিষেক করলেন । ঋষি , মুনি , দেবতা , গন্ধর্ব , কিন্নড় , সিদ্ধ , চারণ সমবেত হয়ে ভগবানের মহিমা কীর্তন করলেন ।
ভগবানের এই লীলাকে স্মরণ করে আজও ভক্ত বৃন্দরা গিরি গোবর্ধনের পূজা করেন। সাথে হয় অন্নকূট উৎসব । ভগবানের অসীম ক্ষমতা। যিনি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড ধারন করে আছেন, তাঁর পক্ষে একটি পর্বত তৃন সমান ।
দীপাবলির পরের দিন অন্নকূট বা গোবর্ধন পূজা। ঐদিন বৃন্দাবনবাসীগণ (শ্রীকৃষ্ণের বাল্যলীলার সময়কার) দেবরাজ ইন্দ্রের সন্তুষ্টিবিধানার্থে উৎসব করতেন, যেন তিনি সন্তুষ্ট হয়ে বৃষ্টি প্রদান করেন, ফলে ভাল ফসল উৎপন্ন হবে।
.
স্বর্গের রাজ্যপদ নিয়ে ইন্দ্র অধিক গর্বিত হয়েছে বুঝতে পেরে ভগবান বৃন্দাবনবাসীদের পরম্পরাগত ধারণা বদলে গোবর্ধনের পূজা করতে বললেন, যেহেতু গোবর্ধনের উর্বর মৃত্তিকার ঘাস খেয়ে বৃন্দাবনের গাভী ও ষাঁড়গগুলি বেঁচে রয়েছে, এবং এই ষাঁড়গুলিকে দিয়ে হাল চাষ করা যাবে এবং তাতে ভাল ফসল হবে। ইন্দ্রদেব বৃন্দাবনবাসীদের এই পরিবর্তনে অসন্তুষ্ট হয়ে প্রবল বজ্র ও বারিবর্ষণ করতে লাগলেন। বৃন্দাবনের ঘরবাড়ি, গাভী, বাছুরগুলি ভেসে যেতে লাগল। সকলে শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হওয়ায় পরম পুরুষোত্তম ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর বাম হাতের কণিষ্ঠ আঙুলে ২১ কিলোমিটার পরিধিবিশিষ্ট গোবর্ধন পর্বতকে ধারণ করলেন, যেন তিনি একটি ছাতার নিচে সমস্ত বৃন্দাবনবাসীকে তাঁদের গাভী, বাছুরসমেত নিরাপদে রাখলেন।
.
বজ্রপাত ও বর্ষণ আরো প্রবলভাবে বৃদ্ধি পেল। ইন্দ্রদেব ক্রোধে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। এভাবে সাতদিন প্রবল বর্ষণের পর ইন্দ্রদেব তার ভুল বুঝতে পারলেন এবং স্বর্গ থেকে নেমে এসে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের নিকট করজোড়ে প্রার্থনা ও ক্ষমাভিক্ষা করলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, তিনি ভগবানের অনুগত সেবক মাত্র। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে বললেন যে, "আমি হচ্ছি দেবতাদের দেবতা, দেবেশ্বর, আমি সর্ব কারণের পরম কারণ। আমাকে পূজা করলে সমস্ত দেবতারা সন্তুষ্টিলাভ করেন।"
.
কয়েক হাজার বছর পর, অনুরূপভাবে, শ্রী মাধবেন্দ্রপুরী গোবর্ধন পর্বতের চূড়ায় স্ব-প্রকটিত গোপালের বিগ্রহ ও মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
.
উৎসবটি উদযাপন করার জন্য ভক্তরা পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী দিয়ে পর্বতের প্রতিরূপ তৈরী করেন, পর্বতের অধিপতি শ্রীকৃষ্ণকে চূড়ায় প্রতিষ্ঠিত করেন এবং ভগবানের অবতাররূপে গোবর্ধনের পূজা করেন এবং গাভী-ষাঁড়দের, যারা ভগবানের অত্যন্ত প্রিয়, পূজা করা হয়। অনুষ্ঠানের শেষে সকল ভক্তবৃন্দের উদ্দেশ্যে পর্বতরূপী সুস্বাদু মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। বিশ্বের প্রতিটি বৈষ্ণবীয় মন্দিরে এই উৎসবটি উদযাপন করা হয় এবং আগত ভক্তদের মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।
0 Comments