ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ও নৌকার মাঝি


ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ও নৌকার মাঝি

ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বনবাসে থাকার সময় তিনি মা জননী ও ভ্রাতা লক্ষণ সহ একবার সরজা নদী পার হতে গেলেন। যে ঘাটে রামচন্দ্র পার হবার জন্য গেলেন সে ঘাটের যিনি মাঝি তিনি ভগবান শ্রীরামচন্দ্রর পরম ভক্ত । তার বিশ্বাস ছিল ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তাকে একদিন অবশ্যই দর্শন দেবেন।আজ ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তার ঘাটে এসে উপস্থিত। রামচন্দ্র মাঝিকে বললেন মাঝি আমাকে নদী পার করে দেবে? মাঝি বলল নিশ্চই!!প্রভূ,আমি শুনেছি তোমার চরণধূলি লাগলে পাথর নারী হয়ে গেছে।আমি খুব গরীব মানুষ একমাত্র নৌকাটিই আমার সম্বল তাই তোমার চরণধূলী লেগে যদি আমার নৌকা কিছু হয়ে যায় তো আমি না খেয়ে মরব - তাই প্রভূ আমি তোমার চরন ধুতে চাই? রামচন্দ্র বুঝতে পারলেন মাঝির চতুরতা। মাঝি ভাল করে রামচন্দ্রর চরণ ধুয়ে চরনামৃত পান করলেন তার পর নৌকায় তুলে মাঝি সকলকে নদী পার করলেন নদী পার হবার পর রামচন্দ্র মাঝিকে পারিশ্রমিক বাবদ তার হাতের আঙটি খুলে দিলেন। মাঝি বলল প্রভূ তোমার কাছে আমি পারিশ্রমিক নিতে পারব না।
রামচন্দ্র বলল কেন মাঝি? 
মাঝি বলল প্রভূ একই কাজ করা দুজন ব্যক্তি নিজেদের মধ্যে লেনদেন করে না । 
মাঝি বলল প্রভূ একজন ধোপার কাছে যেমন অন্য ধোপা তার কাপড় পরিস্কারের পয়সা নেয় না ঠিক তেমনই আমি ও তোমার কাছে পারিশ্রমিক নিতে পারব না। রামচন্দ্র বলল ধোপার ব্যাপার তো বুঝলাম কিন্তু এখানে তোমার আর আমার কর্মের মধ্যে মিল কোথায় !! মাঝি বলল যেমন আমি ও মাঝি তেমন তুমি ও হলে ভবসাগরের মাঝি। আজ আমি তোমাকে যেমন এই নদী পার করে দিলাম ঠিক তেমনেই আমার যখন অন্তিম সময় আসবে তুমি ও আমাকে ভবসাগর পার করে দিও প্রভূ। ভগবান শ্রীরামচন্দ্র বুঝতে পারলেন যে এই মাঝি আমার স্বরুপ জানে তাই সে এমন চতুরতার সাথে আমার কাছে এই প্রার্থনা করছে।

Post a Comment

0 Comments