ভীষ্মপঞ্চক ব্রত

পিতামহ ভীষ্মদেব এই ব্রত করেছিলেন তাই  এর নাম ভীষ্মপঞ্চক ব্রত। 



মহাজন উক্তি
যে চ বেদবিদো বিপ্রা যে চাধ্যাত্মবিদো জনাঃ।
তে বদন্তি মহাত্মানং কৃষ্ণং ধর্মং সনাতনম্ ॥


"যিনি সঠিকভাবে বেদ অধ্যয়ন করেছেন, তিনি প্রকৃত বিপ্র বা বেদজ্ঞ। যিনি পারমার্থিক জীবন সম্বন্ধে যথার্থই অবগত, তিনি পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে অনুসরণ করাকেই জীবের সনাতন ধর্ম বলে বর্ণনা করেন।"
(শ্রীভীষ্মদেবের উক্তি, মহাভারত)

অত্যন্ত মহিমান্বিত এই ব্রত করার ফলে যে কেউ গোলকাধিপতি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে সন্তুষ্ট করতে পারেন। পুরানে উল্লেখ আছে যে, বিশেষতঃ যারা আজীবন নৈষ্ঠিক ব্রহ্মচর্য পালন করতে চান, তারা এই ব্রত করে ভীষ্মদেব ও তাঁর আরাধ্যদেব শ্রীকৃষ্ণের করুণা ভিক্ষা করতে পারেন। ভক্তরা তাদের সুবিধামতো নিম্নোক্ত স্তরগুলোর যে কোনটি অনুসরণ করতে পারেন যাতে তাদের নিত্য ভগবৎ সেবা ও সাধনার বিঘ্ন না ঘটেঃ
* 1ম স্তর  ঃ পঞ্চগব্যের একেটি একেক দিনে গ্রহন করা যেতে পারে। 

1ম দিন - গোময়, 
2য় দিন-গোমূত্র, 
3য় দিন- দুধ, 
4র্থ দিন- দধি, 
5ম দিন- গোময় গোমূত্র, দুগ্ধ, দধি ও ঘিয়ের মিশ্রণে তৈরী পঞ্চগব্য।

** 2য় স্তর ঃ যদি কউ 1ম স্তর অনুসরণ করতে না পারেন তবে ফলমূল গ্রহণ করা যেতে পারে। যেসব ফলে প্রচুর বীজ রয়েছে যেমন- পেয়ারা, ডালিম, পেঁপে, শসা প্রভৃতি বর্জন করা উচিত। আলু, কাঁচাকলা, মিষ্টি আলু সেদ্ধ করে গ্রহণ করা যেতে পারে। স্বাদের জন্য সৈন্দক লবণ ব্যবহার অনুমোদিত। কাজুবাদম, কিসমিস ও খেজুর গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে দুধ বা দুগ্ধজাত কোন দ্রব্য গ্রহণ করা যাবে না। নারকেল ও নারকেলের জল গ্রহণ করা যাবে।

*** 3য় স্তর ঃ যদি কউ 2য় স্তর পালনে অসমর্থ হন তবে হবিষ্যান্ন গ্রহণ করতে পারেন।
* প্রতিদিন গঙ্গার মত পবিত্র নদীতে স্নান করা উচিত।
দিনে তিনবার ভীষ্মদেবের উদ্দেশ্যে তর্পণ করা উচিত।

** ভক্তরা ভগবানকে নিবেদন করতে পারেন -
1ম দিন - শ্রীবিগ্রহের শ্রীচরণে পদ্মফুল।
2য় দিন- শ্রীবিগ্রহের উরুতে বিল্বপত্র।
3য় দিন - শ্রীবিগ্রহের নাভিদেশে গন্ধদ্রব্য।
4র্থ দিন- শ্রীবিগ্রহের স্কন্দদেশে জবাফুল।
5ম দিন- শ্রীবিগ্রহের মস্তকে মালতী ফুল।
যদি কখনো দুটি তিথি একত্রে পড়ে তবে ঐ দিন দুইদিনের উদ্দিষ্ট ফুলগুলো একই দিনে নিবেদন করতে পারেন।
উৎস : শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী মহারাজের বিবৃতি অনুসারে অনুলিখিত) পদ্মপুরাণ, ব্রহ্মখন্ড-23, অধ্যায় স্কন্দ পুরাণ, বিষ্ণখন্ড-কর্তিক মাহাত্ম্য-32, অধ্যায় গরুড় পুরাণ, পূর্বখন্ড- 123 অধ্যায়।

Post a Comment

0 Comments