শ্রীশ্রীগুর্ব্বষ্টকম্ - মঙ্গল আরতি (অনুবাদ সহ)

শ্রীশ্রীগুর্ব্বষ্টকম্ - মঙ্গল আরতি
(অনুবাদ সহ)



সংসার-দাবানল-লীঢ় লোক-
ত্রাণায় কারুণ্যঘনাঘনত্বম্।

প্রাপ্তস্য কল্যাণ-গুণার্ণবস্য
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥১॥

মহাপ্রভোঃ কীর্তন-নৃত্য-গীত-
বাদিত্রমাদ্যন্মনসো রসেন।
রোমাঞ্চ-কম্পাশ্রু-তরঙ্গভাজো
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥২॥

শ্রীবিগ্রহারাধন-নিত্য-নানা-
শৃঙ্গার-তন্মন্দিরমার্জনাদৌ।
যুক্তস্য ভক্তাংশ্চ নিযুঞ্জতোঽপি
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৩॥

চতুর্বিধ শ্রীভগবৎপ্রসাদ-
স্বাদন্নতৃপ্তান্ হরিভক্তসঙ্ঘান্।
কৃত্বৈব তৃপ্তিং ভজতঃ সদৈব
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৪॥

শ্রীরাধিকামাধবয়োরপার-
মাধুর্যলীলা গুণ-রূপ-নাম্নাম্।
প্রতিক্ষণাস্বাদন-লোলুপস্য
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৫॥

নিকুঞ্জযুনো রতিকেলিসিদ্ধ্যৈ-
র্যা যালিভির্যুক্তিরপেক্ষণীয়া।
তত্রাতিদাক্ষাদতিবল্লভস্য
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৬॥

সাক্ষাদ্ধরিত্বেন সমস্তশাস্ত্রৈ-
রুক্তস্তথা ভাব্যত এব সদ্ভিঃ।
কিন্তু প্রভোর্যঃ প্রিয় এব তস্য
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৭॥

যস্য প্রসাদাদভগবৎ-প্রসাদো
যস্যাপ্রসাদান্ন গতিঃ কুতোঽপি।
ধ্যায়ংস্তুবংস্তস্য যশস্ত্রীসন্ধ্যং
বন্দে গুরোঃ শ্রীচরণারবিন্দম্॥৮॥

শ্রীমদগুরোরষ্টকমেতদুচ্চৈ-
র্ব্রাহ্মেমুহূর্তে পঠতি প্রযত্নাৎ।
যস্তেন বৃন্দাবননাথসাক্ষাৎ-
সেবৈব লভ্যা জনুষোঽন্ত এব॥৯॥



অনুবাদঃ সংসার-দাবানল-সন্তপ্ত সমস্ত লোকের পরিত্রাণের জন্য যিনি কারুণ্য-বারিবাহ তরলত্ব প্রাপ্ত হয়ে কৃপাবারি বর্ষণ করেন, আমি সেই কল্যাণ গুণনিধি শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম বন্দনা করি॥১॥

সংকীর্তন, নৃত্য গীত ও বাদ্যাদি দ্বারা শ্রীমন্মহাপ্রভুর প্রেমরসে উন্মত্ত-চিত্ত যাঁর রোমাঞ্চ, কম্প, অশ্রু-তরঙ্গ উদগত হয়, সেই শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥২॥

যিনি শ্রীবিগ্রহের বেশ-রচনা ও শ্রীমন্দির-মার্জন প্রভৃতি নানাবিধ সেবায় স্বয়ং নিযুক্ত থাকেন এবং (অনুগত) ভক্তগণকে নিযুক্ত করেন, সেই শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥৩॥

যিনি শ্রীকৃষ্ণভক্তবৃন্দকে চর্ব্য, চূষ্য, লেহ্য ও পেয়---এই চতুর্বিধ রসসমন্বিত সুস্বাদু প্রসাদান্ন দ্বারা পরিতৃপ্ত করে (অর্থাৎ প্রসাদ-সেবন জনিত প্রপঞ্চ-নাশ ও প্রেমানন্দের উদয় করিয়ে) স্বয়ং তৃপ্তি লাভ করেন, সেই শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥৪॥

যিনি শ্রীশ্রীরাধামাধবের অনন্ত মাধুর্যময় নাম, রূপ, গুণ ও লীলাসমূহ আস্বাদন করার নিমিত্ত সর্বদা লুব্ধচিত্ত, সেই শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥৫॥

নিকুঞ্জবিহারী ব্রজযুবযুগলের রতিক্রীড়া সাধনের নিমিত্ত সখীগণ যে যে যুক্তির অপেক্ষা করে থাকেন, সেই সমস্ত বিষয়ে অতি নিপুণতাপ্রযুক্ত যিনি তাঁদের অতিশয় প্রিয়, সেই শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥৬॥

নিখিলশাস্ত্র যাঁকে সাক্ষাৎ শ্রীহরির অভিন্ন-বিগ্রহরূপে কীর্তন করেছেন এবং সাধুগণও যাঁকে সেইরূপেই চিন্তা করে থাকেন, কিন্তু যিনি ভগবানের একান্ত শ্রেষ্ঠ, সেই (ভগবানের অচিন্ত্য-ভেদাভেদ-প্রকাশ-বিগ্রহ) শ্রীগুরুদেবের পাদপদ্ম আমি বন্দনা করি॥৭॥

একমাত্র যাঁর কৃপাতেই ভগবদ্-অনুগ্রহ লাভ হয়, এবং যিনি অপ্রসন্ন হলে জীবের আর কোথাও গতি থাকে না, আমি ত্রিসন্ধ্যা সেই শ্রীগুরুদেবের সেই শ্রীগুরুদেবের কীর্তিসমূহ স্তব ও ধ্যান করতে করতে তাঁর পাদপদ্ম বন্দনা করি॥৮॥

যে ব্যক্তি এই গুরুদেবাষ্টক ব্রাহ্মমুহূর্তে অতিশয় যত্নের সঙ্গে উচ্চৈঃ স্বরে পাঠ করেন, তিনি বস্তুসিদ্ধিকালে বৃন্দাবননাথের সাক্ষাৎ সেবাধিকার প্রাপ্ত হন॥৯॥

Post a Comment

0 Comments