সত্যিই কি আমরা শিক্ষিত হচ্ছি ?????

সত্যিই কি আমরা শিক্ষিত হচ্ছি  ?????


বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আজ আর ব্রহ্মচর্য কিংবা পারমার্থিক জীবনের নীতি শিক্ষা দেওয়া হয় না! শাস্ত্রীয় নির্দেশের প্রতি তাদের আর বিন্দুমাত্র বিশ্বাস নেই! বাস্তব জীবনে ধর্মনীতি পালনের পরিবর্তে কেবল নাম ও যশের জন্যই এই শিক্ষা দেওয়া হয়! এভাবেই শুধু মাত্র সামাজিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই যে শত্রুতাচরণ তা নয়, ধর্মের
ক্ষেত্রেও এই বৈরিতা বর্তমান!

সাধারণ মানুষের অবিদ্যার অনুশীলনের ফলেই আজ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে উগ্র স্বদেশীকতা ও জাতীয়তাবাদের অগ্রগতি হয়েছে! কেউ এই কথা ভাবছে না যে, আমাদের এই ক্ষুদ্র পৃথিবীটি একটি বস্তুপিণ্ড মাত্র এবং অন্যান্য বস্তু-পিণ্ডের সাথে অনন্ত মহাকাশে ভাসছে!
মহাশূন্যের বিশালত্বের তুলনায় এইসব ভাসমান বস্তুপিণ্ডগুলিকে বাতাসে উড়ন্ত ধূলিকণার মতাে মনে হয়! যেহেতু ভগবান করুণা করে এই সমস্ত জড় পিণ্ডগুলিকে সম্পূর্ণ করেছেন, তাই এগুলি মহাশূন্যে ভেসে থাকার মতাে প্রয়ােজনীয় সব রকম উপাদানের দ্বারা পরিপূর্ণভাবে সুসজ্জিত! 

আমাদের মহাকাশযান চালকেরা তাদের কৃতিত্বের জন্য খুবই গর্বিত, কিন্তু মহাকাশযান অপেক্ষা অনেক অনেক বেশি বিশালাকার গ্রহগুলির পরম চালকের কথা তারা মােটেই ভাবে না!

মহাশূন্যে অসংখ্য সূর্য এবং অসংখ্য গ্রহমণ্ডল বর্তমান রয়েছে!
পরমেশ্বর ভগবানের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশরূপে ক্ষুদ্র হয়ে আমরা এই অসীম গ্রহমণ্ডলের ওপর প্রভুত্ব করার চেষ্টা করছি! এভাবেই আমরা পুনঃ পুনঃ জন্ম-মৃত্যু গ্রহণ করি এবং বিশেষত বার্ধক্য ও ব্যাধির প্রকোপে হতাশ হয়ে পড়ি! মানুষের জীবনকাল প্রায় একশ বছরের জন্য নির্ধারিত হলেও তা ক্রমশ বিশ-ত্রিশ বছরে হ্রাস প্রাপ্ত হচ্ছে!
বর্তমানের অবিদ্যা অনুশীলনকে ধন্যবাদ, যার সাহায্যে প্রতারিত মানুষেরা কিছু বছরের জন্যে হলেও অত্যন্ত কৃতিত্বের সঙ্গে ইন্দ্রিয় উপভােগের পরিতৃপ্তির উদ্দেশ্যে এই ছােট্ট জড় জগতের মধ্যে তাদের নিজ নিজ জাতি গঠন করেছে! এই সমস্ত মূর্খ মানুষেরা তাদের জাতীয় সংহতির নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণতা বিধানের জন্য পরিকল্পনার পর পরিকল্পনা করে চলেছে! কিন্তু সমস্ত পরিকল্পনাই পরিশেষে হাস্যকর হয়ে পড়ছে! 
এই উদ্দেশ্যে প্রতিটি দেশই আজ অন্য দেশের উদ্বেগের কারণ হচ্ছে! প্রতিটি দেশের জাতীয় শক্তির পঞ্চাশ ভাগেরও বেশি আজ সামরিক খাতে ব্যয় হচ্ছে এবং এভাবেই বিনষ্ট হচ্ছে!
কোন মানুষই আজ প্রকৃত বিদ্যা অনুশীলনের কথা ভাবছে না, তবুও পরা ও অপরা বিদ্যার ক্ষেত্রেই উন্নতি হচ্ছে বলে তারা মিথ্যা গর্ব করছে!

• শ্রীঈশােপনিষদ এই ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষা সম্বন্ধে আমাদের সতর্ক করছে এবং ভগবদগীতা প্রকৃত জ্ঞান বিকাশের জন্য উপদেশ দিচ্ছে-- ধীর ব্যক্তির কাছ থেকে বিদ্যার নির্দেশাবলী অবশ্যই অর্জন করতে হবে! যিনি কখনও মায়ার দ্বারা বিচলিত হন না তিনিই হচ্ছেন ধীর ব্যক্তি! সম্পূর্ণ পারমার্থিক উপলব্ধি ব্যতিরেকে কারও পক্ষে ধীর হওয়া সম্ভব নয়! যিনি সম্পূর্ণ পারমার্থিক উপলব্ধি অর্জন করেছেন তিনি কোন কিছুর জন্যই কামনা বা শােক প্রকাশ করেন না! এই ধীর ব্যক্তি হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন যে, জড় সংসর্গে আকস্মিকভাবে প্রাপ্ত তার জড় দেহ এবং মন নশ্বর; তাই তিনি অনিত্য বস্তুর সদ্ব্যবহার যতদূর সম্ভব শুধু তাই করেন!
যথার্থ বিদ্যা শিক্ষা লাভ করতে হলে অবশ্যই ধীর ব্যক্তির কাছ হইতে বিনম্রভাবে শ্রবণ করতে হবে !!

Post a Comment

0 Comments