হেরা-পঞ্চমী
রথযাত্রার পরের পঞ্চমীকে বা রথযাত্রার থেকে পাঁচ দিন পর যে দিন সেই দিন কে "হেরা-পঞ্চমী বলা হয়। শ্রীমতি লক্ষীদেবী শ্রীজগন্নাথের অন্বেষণে গুন্ডিচা মন্দিরে গিয়ে শ্রীজগন্নাথকে দেখে (হেরিয়া) আসেন' এজন্য উৎকলদেশীয় লোকেরা ঐদিনকে 'হেরা-পঞ্চমী' বলে থাকেন। ঐদিন শ্রীজগন্নাথকে হারিয়ে শ্রীলক্ষী তাঁকে খুঁজতে যান উৎকলের কোন কোন সমপ্রদায় এই উৎসবকে 'হরা-পঞ্চমীও' বলেন। আবার কেহ কেহ 'হোরা-পঞ্চমী' বলেন। 'হেরা-অর্থে গমন করা। আর যেহেতু পঞ্চমীতে শ্রীলক্ষ্মীদেবী শ্রীমন্দির হতে বাইরে গমন (বিজয়) করেন; এজন্য এই উৎসবকে 'হেরা' পঞ্চমীও বলা হয়ে থাকে।রথযাত্রার পর জগন্নাথের পত্নী মহালক্ষ্মী মন্দিরেই থেকে যান। এতে মহালক্ষ্মী জগন্নাথের উপর ক্রুদ্ধ হন এবং গুণ্ডিচা মন্দিরে একটি পালকিতে করে সুবর্ণ মহালক্ষ্মী রূপে এসে যত শীঘ্র সম্ভব মন্দিরে ফেরার জন্য জগন্নাথকে ভয় দেখান। মহালক্ষ্মীকে তুষ্ট করার জন্য জগন্নাথ তাঁকে ‘আজ্ঞা মালা’ (সম্মতির মালা) উপহার দেন। মহালক্ষ্মীকে ক্রুদ্ধ থেকে সেবকেরা গুণ্ডিচার প্রধান দরজাটি বন্ধ করে দেন। মহালক্ষ্মী নকচন দ্বার দিয়ে প্রধান মন্দিরে ফিরে আসেন। একটি স্বতন্ত্র প্রথা অনুসারে, মহালক্ষ্মী তাঁর অন্যতম অনুচরকে জগন্নাথের রথ নান্দীঘোষের একটি অংশ ধ্বংস করার নির্দেশ দেন। গুণ্ডিচা মন্দিরের বাইরে একটি তেঁতুল গাছের পিছনে লুকিয়ে তিনি এটি দেখেন। কিছুক্ষণ পর তিনি লুকিয়ে জগন্নাথ মন্দিরে ফিরে আসেন এবং হেরা গোহরি পথ নামে একটি আলাদা পথে মন্দিরে প্রবেশ করেন। কবিকর্ণপুর গোস্বামী শ্রীচৈতন্য চন্দ্রোদয় নাটকে (১০/৬৫) একে 'হেরা' মহোৎসব' বলে উল্লেখ করছেন। শ্রীকৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামিপাদ উক্ত উৎসবকে 'শ্রীলক্ষ্মীবিজয়োৎসব' বলে লিখেছেন।
'হেরা-পঞ্চমী' তিথিকে শ্রীযমেশ্বর শিব ও দেবদাসীগনকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলক্ষীদেবী নরেন্দ্রসরোবরের তীরে গুন্ডিচা মন্দিরে প্রথম দ্বারে উপস্থিত হন। শ্রীলক্ষ্মীদেবীকে দেখে শ্রীজগন্নাথের সেবক দয়িতাগন শ্রীজগন্নাথের ভোগমন্দিরের দ্বার বন্ধ করে দেন। তারপর শ্রীলক্ষ্মীদেবী হেরাগোহিরীসাহীর মধ্যে গমন করলে সেখানে তাঁর ভোগ হয়।
এরপর সেখানে থেকে তিনি শ্রীমন্দির প্রত্যাবর্তন করেন। শ্রীজগন্নাথ যেদিন 'বহুরা' বিজয় (উল্টোরথ) পুনর্যাত্রা করেন, সেদিন রথ রাজ প্রাসাদের সম্মুখে উপস্থিত হলে শ্রীলক্ষ্মীদেবী, তাঁরা দাসীগন-সহ পাল্কীতে করে সেখানে উপস্থিত হন এবং শ্রীজগন্নাথের মালা শ্রীলক্ষ্মীদেবীর গলদেশে প্রদত্ত হলে তিনি'বন্দাপনা' তুন্ডুল, দূর্বা ও প্রদীপ দ্বারা শ্রীজগন্নাথের আরতি করে রথ-পরিক্রান্তে শ্রীমন্দিরে গমন করে।
'হেরা-পঞ্চমী' তিথিকে শ্রীযমেশ্বর শিব ও দেবদাসীগনকে সঙ্গে নিয়ে শ্রীলক্ষীদেবী নরেন্দ্রসরোবরের তীরে গুন্ডিচা মন্দিরে প্রথম দ্বারে উপস্থিত হন। শ্রীলক্ষ্মীদেবীকে দেখে শ্রীজগন্নাথের সেবক দয়িতাগন শ্রীজগন্নাথের ভোগমন্দিরের দ্বার বন্ধ করে দেন। তারপর শ্রীলক্ষ্মীদেবী হেরাগোহিরীসাহীর মধ্যে গমন করলে সেখানে তাঁর ভোগ হয়।
এরপর সেখানে থেকে তিনি শ্রীমন্দির প্রত্যাবর্তন করেন। শ্রীজগন্নাথ যেদিন 'বহুরা' বিজয় (উল্টোরথ) পুনর্যাত্রা করেন, সেদিন রথ রাজ প্রাসাদের সম্মুখে উপস্থিত হলে শ্রীলক্ষ্মীদেবী, তাঁরা দাসীগন-সহ পাল্কীতে করে সেখানে উপস্থিত হন এবং শ্রীজগন্নাথের মালা শ্রীলক্ষ্মীদেবীর গলদেশে প্রদত্ত হলে তিনি'বন্দাপনা' তুন্ডুল, দূর্বা ও প্রদীপ দ্বারা শ্রীজগন্নাথের আরতি করে রথ-পরিক্রান্তে শ্রীমন্দিরে গমন করে।
জগন্নাথ মন্দিরের হেরা পঞ্চমী উৎসবের উল্লেখ স্কন্দপুরাণে পাওয়া যায়। মন্দিরের ইতিহাস অনুসারে, এই উৎসব শুরু হয়েছিল রাজা কপিলেন্দ্র দেবের রাজত্বকালে। তার আগে হেরা পঞ্চমী মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে প্রতীকী উপায়ে পালিত হত। মাদলা পাঁজি অনুসারে, রাজা কপিলেন্দ্র দেব সেই প্রথার পরিবর্তে সোনার মহালক্ষ্মী মূর্তি গড়িয়ে বর্তমান উপায়ে উৎসবটির প্রচলন ঘটান।
0 Comments