সূর্যগ্রহন লাগলে, এই সময় কি কি বিষয় সতর্ক থাকতে হয়?

সূর্যগ্রহন লাগলে, এই সময় কি কি বিষয় সতর্ক থাকতে হয়?

 
যে কোন গ্রহনই মানব জীবনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে। তা সে চন্দ্রগ্রহন হোক বা সূর্যগ্রহন।। তবে সূর্যগ্রহন সব থেকে বেশি প্রভাব ফেলে মানব জীবনে। কারন সমস্ত শক্তির উৎস হল সূর্য। আর যখন সূর্যগ্রহন লাগে তখন তার প্রভাব প্রত্যেকটি রাশির উপর পড়বে।

গ্রহনের সময় স্নার্তবাদীগন অশুদ্ধকাল মনে করে। কিন্তু গৌস্বামীগন এটাকে শুদ্ধকাল মনে করে। বৈষ্ণবগন ফলাকাঙ্খি নয়। তারা নিষ্কাম কর্ম করে। তাই গ্রহনকালে অতিরিক্ত কোনস্নানের প্রয়োজন নাই। পূজা অর্চন যথানিয়মে চলবে। গ্রহনকালে ভাগবত পাঠ ও হরি--সংকীর্ত্তন করতে হবে।
গ্রহনকালে বৈধভক্তের বা বৈষ্ণবগনের করণীয় বিষয়ে প্রভুপাদ শ্রীশ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্ববতী ঠাকুর বলিয়াছেন-

"গ্রহণের সময় স্মার্তের মতে অশুদ্ধ কাল। অশুচি অবস্থায় যে সকল কার্য তাহাদের করিতে নাই, তাহা তাঁহারা করেন না। কিন্তু সেবাপর বৈধ ভক্তগনের ঐসকল প্রাকৃত বিধির অপেক্ষা না করিয়া সম্ভবপর হইলে যথাকালে ভগবৎ সেবা করাই কর্তব্য। যখন শ্রীগৌরসুুন্দর ভক্তির কথা জগতে প্রচার করেন নাই, সেই কালেই ভক্তগন গ্রহনের সময় স্নানাদি করিয়াছিলেন। কিন্তু মহাপ্রভুর শ্রীনাম প্রচারের পর সকল সময়ই হরি-সংকীর্ত্তন বিহীত হইয়াছে। তাহাদের কালাকাল বিচার নাই। পূণ্যসংগ্রহার্থীই কালাকাল বিচার করেন। গ্রহন কালে বৈধভক্ত গঙ্গাস্নান ইত্যাদি করেন না অর্থাৎ ফলাকাঙ্খী হইয়া তাহারা কোন কর্ম করেন না।"
(প্রভুপাদের পত্রাবলী, পৃষ্ঠা-১৫)

আমাদের প্রাচীন শাস্ত্রে উল্লেখ রয়েছে সূর্যগ্রহনের সময় কিছু কাজ আছে যদি তা করা হয় তাহলে তার ফল আগামী সময়ে ভোগ করতে হতে পারে এবং বিপদ বাড়বে ছাড়া কমবে না।  

এই সূর্য গ্রহনের যে আগের ১২ ঘন্টা সময়,এবং সূর্য গ্রহনের পরে ১২ ঘন্টা সময়,এই সময় কালকে বলা সুতক সময়। শাস্ত্রে এই সময়কে অশুভ মনে করা হয়।এ ই সময় শুভ কাজ যেমনঃ বিবাহ,উপনয়ন,গৃহ প্রবেশ,বাহন কেনা, নতুন কিছু কেনা,এই সমস্ত কিছুর ক্ষেত্রে কিন্তু নিষেধ করা করা আছে। 

যে বিষয় গুলি সম্পর্কে সর্তক থাকবেন তা হল
#১নং
সকলের মনের বাসনা থাকে সূর্য গ্রহন দেখার। তবে খালী চোখে সূর্য গ্রহন দেখতে যাবেন না। তবে বাড়ির গর্ভবতী মহিলা এবং ছোট বাচ্চাদের কিন্তু গ্রহন দেখতে দেবেন না। 

#২নং
সূর্য গ্রহনের সময় কখনও কোন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করবেন না।যেমনঃছুরি,কাচি,ব্লেড,বটি,দা, এই ধরনের কোন ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করবেন না।

#৩নং
সূর্য গ্রহনের সময় আগুনের ব্যবহার করবেন না।সূর্য গ্রহন চলাকালীন সময় আগুনের ব্যবহারে বিপদ ডেকে আনে।তাই গ্রহনের পূর্বে রান্নার কাজ সম্পন্ন করবেন।

#৪নং
সূর্য গ্রহনের সময় কোন অবস্থায় আহার গ্রহন করিবেন না।গ্রহনের পূর্বে আহার করতে পারেন।তবে ছোট বাচ্চা,গর্ববতী মহিলা,ও অসুস্থ রোগীদের জন্য গ্রহন লাগার পূর্বে খাবার ও পানীয় জলে তুলসী পাতা দিয়ে রাখবেন। সম্ভব হলে এই সময় আহার করবেন না।

#৫নং
গ্রহন চলাকালীন সময় কোন প্রকার বৃক্ষ স্পর্শ করবেন না। তুলসী পাতা গ্রহনে আগে তুলে রাখুন।

#৬নং
গ্রহনকে অশুভ বিবেচনা করা হয়েছে। এই সময় কু- চিন্তা,কু- কথা, খারাপ আচারন, ঝগড়াঝাটি, ঝামেলা প্রভৃতি সময় এড়িয়ে চলবেন।

#৭নং
গ্রহনের সময় গীতা পাঠ করবেন, জপমালায় হরিনাম জপ করা উচিত

#৮নং
গ্রহন চলাকালীন সময় দেবতা মূর্তি বা বিগ্রহ স্পর্শ করা উচিত নয়

#৯নং
গ্রহণ শুরু  হওয়ার  পূর্বে ভগবানের  মন্দির  বন্ধ  রাখা  উচিত।

#১০নং
গ্রহন চলাকালিনী সময় স্নান করবেন না। গ্রহনের শেষ হলে স্ববস্ত্রে পবিত্র  নদীতে স্নান উচিত।

#১১নং
গ্রহণ চলাকালীন আহার, নিদ্রা, রান্না, প্রজল্প থেকে বিরত থাকুন।

 #১২নং
ভগবানের নিবেদিত মহাপ্রসাদ (শুকনো খাবার) থাকে তাহলে ঐ মহাপ্রসাদে ভগবানের চরণ তুলসী দেওয়া উচিত এবং ভগবানের নিত্য ভোগের জন্য যদি শুকনো খাবার বানানো থাকে তাহলে তার মধ্যে তুলসী পত্র দেওয়া উচিত

🙏হরেকৃষ্ণ 🙏🙏🙏
🙏🙏🙏🙏🙏🙏🙏
🌕🌖🌔🌓🌗🌘.

Post a Comment

0 Comments