শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ......... "ছয় অন্ধ এবং একটি হাতি"

শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ.........
"ছয় অন্ধ এবং একটি হাতি"
একদা ছয় অন্ধ লোক তাদের জীবনে
প্রথমবারের মত একটি হাতির
সান্নিধ্যে এসেছিল। প্রত্যেকে
হাতির শরীরের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ
করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাতি
সম্পর্কে বলা শুরু করল।
একজন অন্ধ ব্যক্তি যে হাতির
একদিকে স্পর্শ করেছি সে বলল “
হাতি হচ্ছে ভাঙ্গা দেয়ালের মতো
যা যে কোন সময় ভেঙ্গে যেতে
পারে।” দ্বিতীয় অন্ধলোকটি, যে
হাতির দাঁতগুলো স্পর্শ করেছিল সে
বলল “ হাতি হচ্ছে মসৃণ এবং ধারালো
তীরের মতো।” তৃতীয় অন্ধ লোকটি
যে হাতির শুঁড়টি স্পর্শ করেছিল সে
বলল “ তোমরা কেন বুঝতে পারছ না
যে “ হাতি হচ্ছে একটি সাপের
মতো।” চতুর্থ লোকটি হাতির একটি
পা ধরেছিল এবং তার কাছে মনে
হল হাতি যেন একটি বৃক্ষের মতো।
পঞ্চম লোকটি হাতির একটি কান
ধরে সে বলল “ যত সব মূর্খের দল !
তোমরা কেন বোঝ না যে হাতি
একটি কুলোর মতো।”
এভাবে তারা হাতি সম্পর্কে
বিভিন্ন রকম মন্তব্য করতে লাগল
যতক্ষণ না পর্যন্ত একজন দৃষ্টি
সম্পন্ন বিজ্ঞ ব্যক্তি তাদেরকে
নিবৃত্ত করলেন। বিজ্ঞ ব্যক্তিটি
তাদের প্রতি করুণা অনুভব করলেন
এবং তাদেরকে হাতির পূর্ণাঙ্গ
বর্ণনা প্রদান করলেন। ছয় অন্ধ
ব্যক্তি তাতে সন্তুষ্ট হলেন।
যেরূপভাবে ছয় অন্ধব্যক্তি তাদের
নিজস্ব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও হাতিটি
সম্পর্কে জানতে পারেনি , ঠিক সেই
কারণে আমরা এই জড়জগত সম্পর্কে
এবং পরম সত্য সম্পর্কে শুধুমাত্র নিজ
প্রচেষ্টার দ্বারা পূর্ণাঙ্গ এবং
নির্ভূল জ্ঞান লাভ করতে পারি না
কেননা আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো
সীমাবদ্ধ এবং ভ্রান্ত। এক অন্ধ
ব্যক্তি যেমন হাতিটির লেজ স্পর্শ
করে এক একটি দড়ি বলে বর্ণনা
করেছিল ঠিক তেমনিভাবে আমরাও
পরমসত্য সম্পর্কে আংশিক উপলব্ধি
করতে পারি। আমাদের এই আংশিক
উপলব্ধি যদিও তা সত্য তবুও সেটি
পরম সত্য সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ বিবরণ
দেয় না।.......
আমরা তত্ত্বদ্রষ্টা পারমার্থিক
শিক্ষাগুরুর শরণাপন্ন হই , যিনি তাঁর
চিন্ময় চক্ষু দিয়ে সেই পরম সত্যকে
দর্শন করেছেন। কেবল এইরকম
ব্যক্তিই পরম সত্য সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ
জ্ঞান প্রদান করতে পারেন। কেননা
তিনি নিজে পুরোপুরিভাবে সেই
সত্যকে উপলব্ধি করেছেন। এইরকম
প্রামাণিক ব্যক্তি থেকে শ্রবণ করে
এবং সেই শিক্ষাকে বাস্তবে
প্রয়োগ করে আমরাও পরমসত্যকে
উপলব্ধি করতে পারি।

Post a Comment

0 Comments