আমাদের সদগতি কিসে হয়

আমাদের সদগতি কিসে হয়


চারযুগের মধ্যে কলিযুগে জীবনের মেয়াদ অতি অল্প কিন্তু ভোগ বাসনা প্রচুর সে জন্য কত রকমের প্ৰচেষ্টা করে এই কলিযুগের মানুষ অনেকে ভাবে সারাজীবন পাপাচার করে বৃদ্ধবয়সে ভগবদসেবা করে , হরিনাম করে উদ্বার হয়ে যাব। শুনেছি সাধুরা বলে,
''এক হরিনামে যত পাপ হরে, পাপীর সাধ্য নাই তত পাপ করে''। আসলে তাদের মনোভাব এমন যে, এই পৃথিবীকে ভোগ করেছি আবার মৃত্যুর পর যেখানে যাব সেখানেও ভোগ করব।
◆ একথা সত্য ও শাস্ত্রে আছে হরিনাম গ্ৰহণ ও ঐকান্তিক হরিসেবা করার ফলে বিগত জীবনের পাপগুলি নষ্ট হয়ে যাবে এবং পরমগতি প্ৰাপ্ত হবে । কিন্তু যে ব্যক্তি বৰ্তমানে হেলায় খেলায় কাটিয়ে বৃদ্ধ বয়সটিতে সাধন ভজন করবে বলে মনে করছে , সাক্ষাৎ মৃত্যু সেই ব্যক্তির সাধন ভজনের সুযোগ না দিতেও পারে । তাছাড়া বৃদ্ধ বয়সে ঠিকমতো সাধনভজন হয় না । কেননা তখন শারীরিক ও মানসিক নানা সমস্যাই বেশী করে দেখা দেয় ।
◆ আমরা পুর্বজনমে কে কি রকমের কৰ্মফল সঞ্চয় করেছি তা আমরা জানি না । কে কিভাবে কোথায় কখন মৃত্যুবরণ করব তাও জানি না । আমরা কখনও নিজেরা নিৰ্বাচন করেও আসিনি যে , অমুক স্থানে অমুকের ঘরে অমুক শরীরে একটা নিদিষ্ট আয়ু নিয়ে জন্মগ্ৰহণ করব । অথচ এইসব ঘটে চলেছে বিধির বিধান ও প্রকৃতির কালের অনুসারে । আমরা কেবল জানি এইটুকু যে , আমাদের জন্ম হয়েছে এবং মৃত্যুও হবে । কিভাবে কখন কোথায় এবং কেন সেইগুলি আমাদের চিন্তার বাইরে বলেই অদৃষ্ট বা বিধির বিধান বলা হয়ে থাকে। কিন্তু যাঁরা সর্বদ্ৰষ্টা তারা সবকিছু দৰ্শন করতে পারেন কোথায় কিভাবে কেন কি সব ঘটে চলেছে তারা সব জানেন।
◆ শ্রীচৈতন্য মহাপ্ৰভু বলেছেন, ''কীৰ্তনীয়ঃ সদা হরিঃ'' অর্থাৎ জীবনের সকল সময় কেবল হরিনাম করে যাও। তাহলে আমাদের মৃত্যুভয় থেকে মুক্ত হব।
ভগবান শ্ৰীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন,
''অন্তকালে চ মামেব স্মরনমুক্তা কলেবরম্‌
যঃ প্ৰয়াতি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্ৰ সংশয়ঃ'' ॥ “ জীবনের অন্তকালে কেউ যদি আমাকে স্মরণ করতে করতে দেহত্যাগ করে, সে নিঃসন্দেহে আমার কাছে ফিরে আসেন''। ( গীতা ৮ / ৫ )
◆ যে কোনও কালে, যে কোনও মুহূৰ্তই আমাদের ইহ জীবনের অন্তিমকাল হতেই পারে। তাই আমাদের কৃষ্ণভাবনাময় থাকতে হবে। সেই জন্য শ্ৰীনারদমুনি বললেন , ‘'মনুষ্য - জীবনের সেই সময় ধন্য, যে -সময়ে সে কৃষ্ণভক্তিতে, কৃষ্ণসেবাতে নিযুক্ত আছে।

Post a Comment

0 Comments