১১দিনে
শ্রাদ্ধ কি শুধু বৈষ্ণবদের ভেতর সীমাবদ্ধ, নাকি
সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
যারা
মাছ- মাংস ভক্ষণ করে তাদের শ্রাদ্ধ কি ১১দিনে করা যাবে?
বর্তমান
ব্রাহ্মনরা, বৈষ্ণব কিংবা মাছ - মাংসভোজী
(আমিষভোজী) সবার ক্ষেএে যে ১৩ দিনে শ্রাদ্ধের অনুমতি দিচ্ছে, আসলে কি তারা আমাদের ভুল পথে
পরিচালিত করছে?
উওরঃ-
শ্রাদ্ধ
দিনের নির্ঘন্ট নিয়ে নানা জনের নানা মত। ১১,১২,১৩,১৫,
২০ অথবা ৩০ দিন ইত্যাদি, বিভিন্ন দিনে শ্রাদ্ধ করার কথা শোনা
যায়। ভ্রম, প্রমাদ, বিপ্রলিপ্সা, করণাপাটব। ঈশ্বরের বাক্যে নাহি দোষ
এইসব। ( চৈ চ. আ. ৭/১০৭) তাই যেখানে সিদ্ধান্তের জটিলতা, সেখানে ভগবদ্বাক্যই একমাত্র প্রমান।
একমাত্র
সিদ্ধান্ত - সকল বর্ণের জন্য ১০ দিন অশৌচ পালন করতে হবে। ১০ দিনে গ্রামের বাইরে
গিয়ে কেশ, শ্মশ্রু, নখ ছেদন করবে এবং স্ননান্তে পবিত্র
হবে ( গরুড় পুরাণ,
উত্তর, ৬/২৮)। গরুড় পুরাণে (উত্তর, ৬/৫১) ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চরম
সিদ্ধান্ত দিলেন,-
"একাদশে
দ্বাদশে বা দিন আদ্যং প্রকীর্তিতম্ " অর্থাৎ, ১১ বা ১২ দিন শ্রাদ্ধের দিন। ১১ দিনের দিন যদি একাদশী থাকে, সেজন্য ১২ দিনের কথা বলা হয়েছে।
গরুড় পুরাণ, উত্তর, ৬/৭৭- এ বলা হয়েছে, একাদশে চ দিবসে একোদিষ্টং যথাবিধি।।
অর্থাৎ, ১১ দিনে যথাবিধি পিন্ড দান করবে।
বরাহ পুরাণে ১৮৮/৪,
৭-৮- একোদিষ্টং মনুষ্যাণাং
চাতুর্বর্ণস্য মাধবি। মনুষস্যগণের মধ্যে শূদ্র, বৈশ্য, ক্ষত্রিয়
এবং ব্রাহ্মন - চার বর্ণেরই পিন্ডদান বিধি একরূপ। পিন্ডের দ্রব্যাদিও চার বর্ণের
জন্য একই। ১৩ দিনের দিন যেহেতু যমদূতেরা মৃতব্যক্তিকে নিয়ে যমালয়ে দিকে যাত্রা করে, তাই শ্রাস্ত্র সিদ্ধান্ত হলো - ১০
দিন অশৌচ পালন ও ক্ষৌরকর্ম, ১১
দিনে শ্রাদ্ধ বা পিন্ডদান ( একাদশী থাকলে ১২ দিনে) । ১৩ দিনের দিন যেহেতু যমদূতেরা
মৃতব্যক্তিকে নিয়ে যমালয়ে দিকে যাত্রা করে, তবে
১৩, ১৫, ২০ অথবা ৩০ দিনে শ্রাদ্ধ বা পিন্ডদান করলে সেই পিন্ড খাবে কে?
এখন
আপনিই বিবেচনা করুন,
বর্তমান ব্রাহ্মনরা, বৈষ্ণব কিংবা মাছ- মাংসভোজী
(আমিষভোজী) সবার ক্ষেএে যে ১৩ দিনে শ্রাদ্ধের অনুমতি দিচ্ছে, আসলে কি তারা আমাদের ভুল পথে
পরিচালিত করছে কি'না?
তাই
আমাদের সঠিকভাবে ধর্ম পালন করতে হলে, আমাদেরকে
ধর্মতত্ত জানতে হবে,
বুঝতে হবে। আর আমাদেরকে
বেশি করে সাধুসঙ্গ করতে হবে এবং বেশি বেশি গ্রন্থ পড়তে হবে । নয়ত আমরা ভুল পথেই
চলতে থাকব।
0 Comments