লোক শিক্ষক প্রভুপাদ
১৯২২ সালে কাশিমবাজারের রাজা শ্রীযুক্ত
মনীন্দ্র নন্দী একদিন নিজ বাসভবনে বিশাল বৈষ্ণব সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন। সেই
সভায় শ্রীযুক্ত নন্দী বিশেষ করে জগদ্্গুরু শ্রীল ভক্তিসিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী
ঠাকুর প্রভুপাদকে আমন্ত্রণ করেছিলেন। সেখানে শ্রীল প্রভুপাদ চারদিন অমৃতময় হরিকথা
পরিবেশন করেছিলেন।
শ্রীল প্রভুপাদ দেখলেন সেই সভায় অংশগ্রহণকারী
ব্যক্তিগণ সকলেই বৈষ্ণব-ভেকধারী। তারা মাছ-মাংস-বিড়ি জর্দায় খুবই আসক্ত। সভা আরম্ভ
হলে ভেখধারী বৈষ্ণবগণ আসতেন এবং সভা শেষে পালে পালে বেরিয়ে চলে যেতেন। তাঁদের
হৃদয়ে বহুকালের কালিমা অনুলেপনের জন্য প্রভুপাদের অমৃতময় বাণী তারা হৃদয়ঙ্গম করতে
পারতেন না। যাই হোক চারদিন পর প্রভুপাদ শ্রীমায়াপুর ব্রজপত্তনমে ফিরে আসেন।
পরবর্তীতে শ্রীযুক্ত নন্দী মহাশয় জানতে পারলেন
যে চারদিন শ্রীল প্রভুপাদ কিছুই ভোজন না করে উপবাসী ছিলেন। কেউ কেউ তাঁহাকে ভোজনের
জন্য অনুরোধ করলে তিনি বলতেন নিষ্ঠাহীন, ভক্তিহীন
বারোয়ারী স্থানে ভোজন করলে ভক্তি নষ্ট হয়, সেজন্য ভোজন
করবেন না।” নন্দী মহাশয় অত্যন্ত দুঃখিত হয়ে শ্রীমায়াপুরে শ্রীল প্রভুপাদের চরণে
এসে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং পরবর্তীতে শুদ্ধ ভক্ত হন।
। হিতোপদেশ।
ভগবৎ ভক্তের অজ্ঞাতসারে সেবা করার ফলে মহান
সুকৃতি লাভ হয় সত্য। কিন্তু নিজে অহংকারী হয়ে বসে থেকে লোকের দ্বারা সেবা করালে
মারাত্মক অপরাধ হয়। যদি পরে নিজের অপরাধ বুঝতে পেরে বৈষ্ণবের শ্রীচরণের শরণাগত হয়
তবে পরম করুণাময় সমস্ত অপরাধ থেকে মুক্ত করে ভগবৎ পাদপদ্মে নিবেদন করেন।
0 Comments