*উপদেশামৃত*



একজন কনিষ্ঠ ভক্তের পক্ষে কেবল হরিনামে ডুবে থাকা সম্ভব নয়, তাই হরিনামের পাশাপাশি অন্যান্য সেবা গুলো তাকে করতে হবে। তবে তাঁর আধ্যাত্মিক উন্নতি হবে। এ প্রসঙ্গে শ্রীল জগন্নাথ দাস বাবাজী মহারাজের একটি লীলা আমরা স্মরণ করতে পারি। একবার এক দম্পতি তার আশ্রমে আসলেন এবং বললেন আমরা দুজন সংসার থেকে অবসর নিয়েছি, এখন আমরা একটু নিভৃতে ভজন করতে চাই। বাবাজি বললেন এ তো খুব উত্তম প্রস্তাব, তাই তোমরা এখানে থাক আর ভজন কর। বাবাজির সেবক বিহারী কৃষ্ণ দাস একাই সমস্ত সেবা কার্য সম্পন্ন করতেন। তাই তিনি একদিন সেই দম্পতিকে বললেন তোমরা তো হরিনাম ছাড়া আর কিছুই কর না, তোমাদের হাতে তো অনেক সময় আছে, তাই আমাকে একটু সেবা কার্যে সহায়তা কর। তারা বলল আমরা এখানে ভজন করতে এসেছি, কোন কাজ করতে আসিনি। বিহারী কৃষ্ণ দাস সেই কথা বাবাজি কে বললেন। তার কিছুক্ষণ পরে সেখানে শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর আসলেন। বাবাজি ভক্তিবিনোদ ঠাকুরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ভক্তিবিনোদ তুমি তো আগে ম্যাজিস্ট্রেট ছিলে, কত মামলা-মোকদ্দমা পরিচালনা করেছ। তোমার কোটে আমারে একটি অভিযোগ আছে, তুমি তার সমাধান কর। এই দুজন বয়স্ক দম্পতি বলছে তারা শুধু হরিনাম করবে অর্থাৎ ভজন করবে কিন্তু কোন সেবা করবে না। তোমার কোর্টের কি রায় হবে বল। তখন শ্রীল ভক্তিবিনোদ ঠাকুর সেই দম্পতিকে উদ্দেশ্য করে বললেন, " শাস্ত্রে বলা হয়েছে কেবলমাত্র হরিনাম করে জীব উদ্ধার লাভ করতে পারে। কিন্তু কলিযুগে বদ্ধ জীবাত্মাদের মন অস্হির বিধায় নিরন্তর হরিনাম করতে পারে না। তাই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু আমাদের জন্য নববিধা ভক্তি থেকে কমিয়ে পাঁচটি বিধিভক্তি দিয়েছেনঃ

১) সাধুসঙ্গ ২) হরিনাম জপ কীর্তন ৩) ভাগবত শ্রবণ ও অধ্যয়ন ৪) শ্রদ্ধায় বিগ্রহ সেবন ৫) মথুরা মন্ডলে বাস।

সিদ্ধান্তঃ হরিনাম জপের পাশাপাশি আমাদের উপরোক্ত বাকি চারটি সেবা নিষ্ঠার সহিত পালন করা উচিত। তবেই আমরা কৃষ্ণভক্তিতে উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করতে পারব।

Post a Comment

0 Comments