প্রভুপাদের_মহিমা / শ্রীল ভক্তিচারু স্বামী!
বৃন্দাবনে আমি প্রভুপাদের সেবা করছিলাম। আমাদের মধ্যে একজনের কেউ না কেউ রাতে প্রভুপাদের সঙ্গে থাকতাম। আমার ডিউটি ছিল বারোটা টা থেকে দুটো পর্যন্ত। গরমকালে শ্রীল প্রভুপাদ ঘরের ভিতর শুতেন না, ছাঁদের উপরে শুতেন। সেখানে দঁড়ি কাটিয়া শুতেন, মশারী থাকত।
তো একদিন রাত্রিবেলা শ্রীল প্রভুপাদ ঘুমোতে পারেননি। প্রভুপাদ প্রায়ই রাত্রে ঘুমাতে পারতেন না। হয় তিনি অনুবাদ করতেন না হয় কখনো কখনো বসে থাকতেন। আমি উনাকে ম্যাস্যাজ (অঙ্গমর্দন) করছিলাম। উনি বসেছিলেন আর আমি পিছন থেকে উনাকে ম্যাস্যাজ করছিলাম।
তখন দেখলাম, প্রভুপাদের বৃন্দাবনে যে বাসস্থান, কোয়াস্টার্স তার পাশেই হচ্ছে আমাদের গেস্ট হাউজ। আমি দেখলাম তখন রাত প্রায় ১ টা বাজে। অনেকে কয়েকজন ভক্ত, বিদেশী ভক্ত, তারা তাদের জানলা থেকে প্রভুপাদকে দেখছেন। তারা দূরদূরান্তর থেকে এসেছে! আমেরিকা থেকে এসেছে, অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে, নিউজিল্যান্ড থেকে এসেছে, ইউরোপ থেকে এসেছে।
কিন্তু প্রভুপাদের সাক্ষাৎ লাভ করাটা এতই দুলর্ভ ছিল তখন, যে তারা এত দূর থেকে এলেও প্রভুপাদের সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পায়নি। তাই তারা রাত্রিবেলা প্রভুপাদকে ছাঁদে তাদের ঘরের জানালা দিয়ে দেখছে। তো আমার হঠাৎ চোখ পড়ল। আমি দেখলাম কয়েকজন এভাবে জানালা দিয়ে দেখছে।
তখন আমার মনে ভাব এল যে, এই আমার পরম সৌভাগ্য! যে, আজ হাজার হাজার ভক্ত প্রভুপাদকে দর্শন লাভের জন্য কেবল দূরদূরান্ত থেকে এসেছে। আর আমার এমনেই সৌভাগ্য যে আমি শ্রীল প্রভুপাদের সঙ্গে থেকে তার সেবা করার সুযোগ পাচ্ছি।
তখন আমি বলেছিলাম প্রভুপাদকে, প্রভুপাদ!আমার প্রায়ই মনে হয়, আপনি যখন আমেরিকাতে একলা ছিলেন, তখন আমি কেন এলাম না আপনাকে সেবা করার জন্য।
প্রভুপাদ কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে আমাকে বললেন, আমি কখনোই একলা ছিলাম না। কৃষ্ণ সবসময়ই আমার সঙ্গে ছিল। (মৃদু হাসি)
0 Comments