"মূর্তির মধ্যেও যে প্রাণ থাকে,তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত "

"মূর্তির মধ্যেও যে প্রাণ থাকে,তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত "




"মূর্তির মধ্যেও যে প্রাণ থাকে,তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত "
হলো -----
একজন মহিলা ছোট বেলা থেকেই বৃন্দাবন ধাম যেতেন , সময় যাচ্ছে, তিনি বড়ো হলেন তথাপি বৃন্দাবন ধাম যাওয়া বন্ধ করলেন না। তার বিয়ে হলো তবুও বৃন্দাবন ধাম যাওয়া তিনি বন্ধ করলেন না।
উনার ছেলে মেয়ে হলো তাদের বিয়ে দিলেন তাও তিনি বৃন্দাবন ধাম যাওয়া বন্ধ করলেন না। উনার নাতি পুতি হলো তাও তিনি বৃন্দাবন ধাম যাওয়া বন্ধ করলেন না। তিনি বৃদ্ধা হয়ে গেলেন ,তিনি দেখলেন এখন তো আর আমি বৃন্দাবন ধাম যেতে পারবো না ,তাই তিনি শেষ বারের মতো বৃন্দাবন গেলেন আর সেখান থেকে একটি গোপালের পিতলের মূর্তি নিয়ে এলেন। ওই মূর্তি টিকে তিনি নিজের সন্তানের থেকেও বেশি ভালোবাসতে লাগলেন। মূর্তি টিকে সোনা সোনা বলে আদর করতে থাকলেন। তিনি এমনি বৃদ্ধা হলেন যে সে আর চলতে পারছেন না।
একদিন জন্মাষ্টমী এলো , বৃদ্ধা মহিলা টি তার বৌমা কে ডেকে বললেন ,বৌমা আজ জন্মাষ্টমী, তুমি আমার সোনা গোপাল কে স্রান করিয়ে, একটু সাজিয়ে পালঙ্কের উপরে বসিয়ে দাও।
তার বৌমা কম্পিউটারে কিছু কাজ করছিলেন ,তিনি বললেন মা আমি কম্পিউটারে গুরুত্ব পূর্ণ কাজে ব্যস্ত আছি একটু পরে দিচ্ছি।
বুড়ি মা বললেন তোমার কম্পিউটারের কাজটি না হয় একটু পরে করো ,আগে এসে আমার গোপালকে স্রান করিয়ে ,সাজিয়ে পালঙ্কের উপরে বসিয়ে দাও।
উনার বৌমা ফট করে উঠে এসে মূর্তি টাকে উঠাতে নিলেন ,আর হাত থেকে মাটিতে পরে গেলো। বৃদ্ধা মা যেন মা বলে ডেকে ওঠা একটি আওয়াজ পেলেন। আর বললেন বৌমা এ তুমি কি করলে আমার সোনাকে মাটিতে ফেলে দিলে ,দেখো কত ব্যাথা পেয়েছে আমার সোনা। তাদের চেচামেচি শুনে উনার ছেলে ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বললেন, কি হয়েছে মা ?
মা বললেন বৌমা আমার সোনা কে মাটিতে ফেলে দিয়েছে ওর খুব লেগেছে ,তুই তাড়াতাড়ি ডাক্তার ডেকে নিয়ে আই বাবা। ছেলে বললেন মা ওটাতো পিতলের মূর্তি ,ওতে কি করে আঘাত লাগতে পারে। মা বলছেন ,না ওর খুব লেগেছে তুই তাড়াতাড়ি গিয়ে ডাক্তার ডেকে নিয়ে আই।
ওদের চেঁচামেচি শুনে পাড়া-প্রতিবেশী তাদের বাড়িতে জড়ো হয়ে গেলো ,আর বললো কি হয়েছে এত চেঁচামেচি করছেন কেন ?
ছেলেটি বললেন ,দেখুন না আমার মা পাগল হয়ে গেছে। পিতলের মূর্তি হাত থেকে মাটিতে পরে গেছে, তাই বলছে ডাক্তার ডেকে নিয়ে আসো আমার সোনার খুব লেগেছে,এ বলে চেঁচামেচি শুরু করেছে। তখন প্রতিবেশীদের মধ্যে থেকে একজন বলছেন ,বুড়ি মা যখন কোনো কথা শুনছেন না তখন একটি ডাক্তার এনে দেখিয়ে নিলেই তো ঝামেলা মিটে যায়।
ওই কথা শুনে ছেলেটি ডাক্তার আন্তে যান। কোনো ডাক্তারি এই কেচ হাতে নিতে রাজি হয় না। একজন ডাক্তার রাজি হয় ,তাকে ছেলেটি বললেন আপনি শুধু গিয়ে বলবেন আপনার সোনা ঠিক আছে সে খুব ভালো আছে।
ছেলেটির কথা মতো ডাক্তার এসে মূর্তি টি হাতে নিয়ে বললেন, বুড়িমা আপনার সোনা খুব ভালো আছে। বুড়িমা বললেন ওরে ডাক্তার কিভাবে চেকাপ করলে ,তোমার ওই কানে লাগিয়ে আর বুকে ঠেকিয়ে যে চেকাপ করে সেই ভাবে করে দেখো।
ডাক্তার তার সে যন্ত্র টি বের করে মূর্তির বুকে লাগিয়ে দেখলেন আর চমকে উঠলেন, পর পর পাঁচ ছয় বার লাগলেন ,তিনি ওই একই শব্দ শুনতে পেলেন সেই আওয়াজ ধব ধব করছে। ডাক্তার সব কিছু ফেলে রেখে চলে যেতে লাগলেন।
বুড়িমা ডেকে বললেন কোথায় যাচ্ছো ডাক্তার ? তোমার সুটকেশ তো নিয়ে যাও। ডাক্তার বাবু বললেন বুড়ি মা আপনি যেখান থেকে এই পিতলের মূর্তি টি এনেছেন আমি সেখানে যাচ্ছি। আমার এত দিনের ডাক্তারি সায়েন্স পড়া সব আজ ব্যর্থ হয়ে গেলো তাই আমি আজ থেকে সেই প্রাণ গোবিন্দের চরণ টি খুঁজতে চললাম।
যাওয়ার সময় ডাক্তার বুড়িমার ছেলেটিকে বললেন দাদা আপনার মা পাগল নয় ,পাগল আমরা ,এই দুনিয়া পাগল ,যেখানে সত্যের বিশ্বাস নাই। .আজ থেকে আমিও এই পাগলা গারোদ থেকে মুক্তি হতে চাই , তাই "হা কৃষ্ণ হা কৃষ্ণ" বলে আমি চললাম বৃন্দাবন ধাম।

"" হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে,
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ""

Post a Comment

0 Comments