কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শেষে অর্জুন তার সখা কৃষ্ণ




কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের শেষে অর্জুন তার সখা কৃষ্ণকে বলছেন প্রভূ আমায় গঙ্গা স্নানে নিয়ে যাবে? আমি এতো এতো আত্মীয়স্বজনদের, আপন জনকে মারলাম, এত পাপ করলাম। গঙ্গা স্নানে পাপ মুক্ত হয়। 🌹কৃষ্ণ বললেন আমি তোমার রথের সারথী । তুমি আমায় যেখানে নিয়ে যেতে বলবে সেখানেই নিয়ে যাবো। গঙ্গা তীরে এসে কৃষ্ণ বললেন বন্ধু তুমি রথের উপর বসো, আমি এখনি আসছি। এই বলে রথ থেকে নেমে কৃষ্ণ একটু আড়াল হলেন। অর্জুনের একটি মহৎগুণ ছিল তিনি পশুপাখিদের কথা বুঝতে পারতেন। 🌹এমন সময় অর্জুন দেখলেন দুইজন লোক একটি মৃতদেহকে কাঁধে করে নিয়ে বলহরি হরিবোল বলহরি হরিবোল বলতে বলতে শ্মশানে নিয়ে এলো। তারা মড়াটিকে মাটিতে রেখে একটি চীতা সাজালো। 🌹এমন সময় একজন অপরজনকে বলছে আগুন তো আনি নি। কিন্তু তারা একা ভয়ে মড়ার কাছে কেউ থাকতে চাইছে না। তাই তারা দুজনেই আগুন আনতে বাড়ি চলে গেল। অর্জুন একটু দূর থেকে রথের উপর বসে বসে সব লক্ষ্য করছেন। 🌹এমন সময় একটি জীর্ণ শীর্ণ রোগা শৃগাল মড়ার কাছে এসে মড়ার কান দুটোকে শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে, মড়ার মুখ শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে, মড়ার হাতদুটোকে, পা দুটোকে শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে। শেষে মড়াটিকে ফেলে রেখে শৃগালটি চলে যাচ্ছে। 🌹এটা দেখে অন্য একটি মোটা সোটা শৃগাল বললো কিরে মড়াটাকে না খেয়ে চলে যাচ্ছিস যে? জীর্ণ শৃগালটি বললো খেতে হয় তুই খা। আমি অখাদ্য কুখাদ্য খাই না। মোটা শৃগালটি বললো তুই এতো খাবার বিচার করিস বলেই তো, তোর এই জীর্ণ শীর্ণ অবস্থা। চল মড়াটির পা দুটোকে খাই। রোগা শৃগালটি বললো -ঐ চরণ দুটি কোনোদিন হরিমন্দিরে প্রবেশ করেনি। আমি খেতে পারবো না। মোটা শৃগালটি বললো তাহলে ঐ মড়াটির হাত দুটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বলল- ঐ হাত দিয়ে কোনোদিন সাধুগুর বৈষ্ণবের সেবা দেয়নি। মোটা শৃগালটি বললো-চল্ তাহলে কানদুটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বলল -ঐ কানদুটি কোনোদিন হরিনাম শ্রবণ করেনি। মোটা শৃগালটি বলল- চল্ তাহলে জীহ্বাটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বললো ঐ জীহ্বা দিয়ে কোনোদিন হরিনাম উচ্চারণ করেনি । মোটা শৃগালটি তখন বলল- মড়াটির কিছুই যখন খাবি না, চল্ তাহলে ঐ রথের উপর যে মানুষটি বসে আছে তাকে গিয়ে খাই। 🌹জীর্ণ শৃগালটি বলল --ও তো আরো মূর্খ রে, যার চরণ হইতে গঙ্গার উৎপত্তি তাকে কিনা বলে গঙ্গা স্নানে নিয়ে যেতে। ও তো আরো মূর্খ। ও কে কি খাওয়া যায়। এতক্ষণ অর্জুন দুই শৃগালের কথা শুনে চৈতন্য হলো। তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। একটু পরে কৃষ্ণ এলে তার চরণ দুটিকে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল প্রভূ আমায় ক্ষমা করো। 🌹ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে শেষ শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই লীলা করেছিলেন। আর এই লীলাই শ্রীকৃষ্ণকে সাহায্য করেছিল বাবা মহেশ্বর, নন্দী ভীঙ্গী আর যোগমায়া। শ্মশানে যিনি মড়াটি সেজে ছিলেন তিনি মহেশ্বর, মড়াটিকে যারা নিয়ে এসেছিল তারা নন্দী আর ভীঙ্গী, আর দুই শৃগাল ছিল যোগমায়া। 🌹ভগবানের নাম স্মরণ করে দিনটাকে শুরু করুন।আর সত্য ও শান্তিকে বুকে ধারন করুন । অসহায়ের পাশে দাঁড়ান। ভালোর সম্মান করুন ,অন্যায়ের প্রতিবাদ করুন নিজ র্ধম কে সঠিক ভাবে পালন করুন। 🌹হরে কৃষ্ণ।।

Post a Comment

0 Comments