অনেক দিন আগে বিহার রাজ্যে ধর্মজিত নামে এক রাজা ছিলেন। তিনি তাঁর মন্ত্রী ও বন্ধুদের সাথে বনে ভ্রমণ করতে ভালোবাসতেন। একদিন রাজা তাঁর পাত্র-মিত্র ও মন্ত্রীদের সঙ্গে ভ্রমণ করতে বেরিয়েছিলেন। নদীর ধারে সুন্দর এক বন দেখে সেই বনে গিয়ে সুন্দর জলাশয়, বহু রকমের গাছপালা, নানা পশুপাখি দর্শন করে আনন্দে বেড়াতে লাগলেন।
বনের মধ্যে ঘোরাঘুরি করতে করতে রাজা হঠাৎ শুনতে পেলেন একটি পাখির চিৎকার। পাখিটি মানুষের ভাষায় কথা বলছিল। পাখিটি কর্কশ কণ্ঠে বলছিল, ঐ যে দেখো রাজা এসেছে, সে বড় ধনী, ওর মূল্যবান কাপড় ও গয়না লুট করে নাও, সবকিছু কেড়ে নাও। সেই কথা শুনেই কালো পোশাকে ঢাকা বিশাল চেহারাধারী ডাকাতের দলবল এসে রাজা ও তাঁর সঙ্গীদের ধনরত্ন সহ যা কিছু ছিল সবই লুট করে নিয়ে গেল। ডাকাতদের দ্বারা নিগৃহীত হয়ে রাজা প্রাণ বাঁচিয়ে রাজপ্রাসাদে ফিরে এলেন।
রাজা আর কখনও বনে বেড়াতে যাবেন না বলে মনস্থ করলেন। তারপর বহুদিন কেটে গেল। অনেকদিন পর রাজা আবার ভ্রমণে বের হলেন। বহু দূরে গিয়ে এক অতীব সুন্দর তপোবন দেখতে পেলেন। সেখানে প্রবেশ করতেই কিছু দূরে দেখলেন একটি কুটির। পার্ষদদের সঙ্গে রাজা সেখানে পৌঁছালে একটি পাখি মধুর কণ্ঠে বলছে, "হে মহারাজ! আসুন, দয়া করে আসন গ্রহণ করুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। আপনার কি সেবা করতে পারি।
পাখিটিকে এভাবে বলতে শুনে রাজা ও তাঁর মন্ত্রীরা অবাক হলেন। কয়েকজন ঋষি এসে তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর রাজা প্রশ্ন করলেন, "হে ঋষিগণ! অনেকদিন আগে এরকম একটি পাখির আচরণে আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছিলাম। কিন্তু আজ এই পাখিটির সাধুসুলভ আচরণ আমাদের বিস্মিত করেছে! কিভাবে এটা সম্ভব হলো? এই পাখিরা কি করে সব কথা শিখেছে?
ঋষিরা বললেন, "মহারাজ! ঔ পাখিটিকেই এই কথা জিজ্ঞেস করুন। পাখি তখন বলতে লাগল, "হে মহারাজ! আগের সেই পাখিটিই হচ্ছি আমি। ছোটবেলায় ডাকাতরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে পালন করেছিল। তাই আমি তাদের সংস্পর্শে তাদের কাজেকর্মের অনুরূপ আচরণ শিখেছিলাম। কিন্তু, সৌভাগ্যক্রমে এই ঋষিরা সেই বনে গিয়েছিলেন। আমি এদের সঙ্গে উড়ে চলে আসি। এই আশ্রমে থাকি, সারাক্ষণ ঋষিদের কাছে ভগবত অনুশীলন, অতিথি সেবা, অনেক সুন্দর কথা শিখেছি।"
রাজা ধর্মজিত বললেন, "দুর্জনের সঙ্গে পড়ে লোকে দুর্জন হয়, সুজনের সঙ্গে পড়ে লোক সুজন হয়। সাধুসঙ্গ বিনা রাজ্যের কেউ মহৎ হতে পারে না। তারপর রাজা তপোবনে ঋষিদেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রাসাদে ফিরে গেলেন।
রাজা আর কখনও বনে বেড়াতে যাবেন না বলে মনস্থ করলেন। তারপর বহুদিন কেটে গেল। অনেকদিন পর রাজা আবার ভ্রমণে বের হলেন। বহু দূরে গিয়ে এক অতীব সুন্দর তপোবন দেখতে পেলেন। সেখানে প্রবেশ করতেই কিছু দূরে দেখলেন একটি কুটির। পার্ষদদের সঙ্গে রাজা সেখানে পৌঁছালে একটি পাখি মধুর কণ্ঠে বলছে, "হে মহারাজ! আসুন, দয়া করে আসন গ্রহণ করুন। কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। আপনার কি সেবা করতে পারি।
পাখিটিকে এভাবে বলতে শুনে রাজা ও তাঁর মন্ত্রীরা অবাক হলেন। কয়েকজন ঋষি এসে তাঁদের সাদর অভ্যর্থনা জানালেন। কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর রাজা প্রশ্ন করলেন, "হে ঋষিগণ! অনেকদিন আগে এরকম একটি পাখির আচরণে আমরা সর্বস্বান্ত হয়েছিলাম। কিন্তু আজ এই পাখিটির সাধুসুলভ আচরণ আমাদের বিস্মিত করেছে! কিভাবে এটা সম্ভব হলো? এই পাখিরা কি করে সব কথা শিখেছে?
ঋষিরা বললেন, "মহারাজ! ঔ পাখিটিকেই এই কথা জিজ্ঞেস করুন। পাখি তখন বলতে লাগল, "হে মহারাজ! আগের সেই পাখিটিই হচ্ছি আমি। ছোটবেলায় ডাকাতরা আমাকে ধরে নিয়ে গিয়ে পালন করেছিল। তাই আমি তাদের সংস্পর্শে তাদের কাজেকর্মের অনুরূপ আচরণ শিখেছিলাম। কিন্তু, সৌভাগ্যক্রমে এই ঋষিরা সেই বনে গিয়েছিলেন। আমি এদের সঙ্গে উড়ে চলে আসি। এই আশ্রমে থাকি, সারাক্ষণ ঋষিদের কাছে ভগবত অনুশীলন, অতিথি সেবা, অনেক সুন্দর কথা শিখেছি।"
রাজা ধর্মজিত বললেন, "দুর্জনের সঙ্গে পড়ে লোকে দুর্জন হয়, সুজনের সঙ্গে পড়ে লোক সুজন হয়। সাধুসঙ্গ বিনা রাজ্যের কেউ মহৎ হতে পারে না। তারপর রাজা তপোবনে ঋষিদেরকে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রাসাদে ফিরে গেলেন।
হিতোপদেশঃ এই জগতে সঙ্গের প্রভাব অত্যন্ত বলবান। যেই ব্যক্তি যেমন লোকের সঙ্গ করবে, সেই ব্যক্তি সেই রকমের আচরণে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। লোকে চোরের সঙ্গ করলে চোর হয়, আর নেশাখোরের সঙ্গ করলে নেশাখোর হয়; আর সাধুর সঙ্গ করলে সাধু হয়। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, 'সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ।'সাধুসঙ্গের প্রভাবে মানুষের দিব্য সুন্দর গুণাবলি প্রকাশিত হয়। অসাধু সঙ্গ প্রভাবে মানুষের ভাল গুণগুলি নষ্ট হয়, কদর্য ভাব প্রকাশিত হয়। সাধুসঙ্গ প্রভাবে মন্দ গুণ সংশোধিত হয়ে ভাল গুণ প্রকাশিত হয়। তাই, আমাদের নিয়মিত সাধুসঙ্গে, বৈষ্ণবসঙ্গে হরিনাম কীর্তন, ভগবৎকথা শ্রবণ করা উচিত।
0 Comments