একসাথে একলক্ষ প্রদীপ নিবেদনের সুযোগ!

 একসাথে একলক্ষ প্রদীপ নিবেদনের সুযোগ!





পদ্মপুরাণে বর্ণনা করা হয়েছে, যদি কেউ শুষ্ক তুলসী কাষ্ঠের মাধ্য্মে ভগবানকে শ্রীকৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদন করে, তাহলে সাধারণ প্রদীপ নিবেদনের চেয়ে ভগবান এক্ষেত্রে লক্ষগুণ বেশি সন্তুষ্ট হন।

সহজভাবে বলা হলে, সাধারণ প্রদীপ ১ লক্ষ বার নিবেদন করা হলে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ যতটা সন্তুষ্ট হন, একটি তুলসীকাঠের প্রদীপ নিবেদন করা হলে ভগবান তার চেয়েও বেশি সন্তুষ্ট হন।

আগত পুরুষোত্তম মাসে শ্রীকৃষ্ণের উদ্দেশ্যে চৌরাগ্রগণ্যতপুরুষাষ্টকম্ কীর্তনের সাথে সাথে প্রদীপ নিবেদন করা কর্তব্যে। সেক্ষেত্রে সকলেই তুলসীকাঠের প্রদীপ নিবেদন করতে পরেন।


#কীভাবে_তৈরী_করবেন_তুলসীকাঠের_প্রদীপ: 

১. প্রথমে শুকনো তুলসীবৃক্ষ খোঁজ করতে হবে।

অনেকেরই অভিজ্ঞতা রয়েছে অনেকসময় তুলসীবৃক্ষ শুষ্ক হয়ে যায়, সব পাতা ঝরে যায়, তুলসী দেহত্যাতগ করেন, সেই শুষ্ক বৃক্ষ জলে ভাসিয়ে বা মাটিতে পুতে দেয়া হয়। প্রদীপের জন্য  এরকম শুষ্ক তুলসী সংগ্রহ করতে হবে। যদি তাজা বৃক্ষ থেকে কাঠ সংগ্রহ করা হয়, সেটাতে হিতে বিপরীত হবে!


২. শুকনো তুলসীর ডাল ধুয়ে শুঁকিয়ে নিতে পারেন।


৩. শুকনো ডাল গুলো ৬ বা ৭ ইঞ্চি করে কেটে নিতে হবে। (আরো বড় কাটা যেতে পারে, কিন্তু বেশি ছোট কাটা হলে প্রদীপের আগুনের আঁচ হাতে লাগতে পারে)


৪. এবার তুলা নিয়ে একেকটি ডালে সমানভাবে পেচাতে হবে। সবগুলো ডালে তুলো পেচিয়ে এভাবে সলিতা বানিয়ে রেখে দিতে পারেন।


৫. প্রদীপ নিবেদনের আগে তুলা পেচানো তুলসীর ডালের সলিতাগুলো ঘিয়ে ডুবিয়ে তারপর অতিরিক্ত ঘি সরিয়ে দিয়ে সলিতাগুলোর মাথায় কর্পূর লাগাতে হবে।


৬. এরপর কর্পূরে আগুন জ্বালালে আস্তে আস্তে পুরো সলিতাটিয় জ্বলে উঠবে, সেক্ষেত্রে আগুন জ্বালানোর শুরু থেকেই প্রদীপ নিবেদন শুরু করা উচিত।


৭. নতুনদের জন্য  সতর্কতা হিসেবে পুরুষোত্তম-প্রদীপ-নিবেদনের আগেই একদিন সলিতা তৈরি করে প্রদীপ নিবেদন করে চেষ্টা করে দেখতে পারেন, সলিতার জন্য  তুলসী কাঠ আরো বড় করে কাটা লাগবে কীনা, বা তুলা আরো বেশি পেচাতে হবে কীনা, ঘি আরো অধিক লাগবে কীনা ইত্যালদি। প্রয়োজনে প্রদীপের মধ্যেোও তুলসীকাঠের সলিতাগুলো নিয়ে নিবেদন করতে পারেন। 


৮. আরতি নিবেদনের জন্যজ, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীনিতাইগৌর, শ্রীনৃসিংহদেব, শ্রীবিষ্ণুকে চরণে চারবার, উদরে দুইবার, মস্তকে তিনবার এবং সর্বাঙ্গে সাতবার প্রদীপ নিবেদন করতে হয়। আর, শ্রীমতী রাধারাণী, শ্রীলক্ষ্মীদেবী, শ্রীতুলসীদেবীকে সর্বাঙ্গে সাতবার প্রদীপ নিবেদন করা উচিত। শ্রীরাধাকৃষ্ণের পর শ্রীজগন্নাথ-বলদেব-সুভদ্রাকে (প্রত্যেীককে সাতবার করে), এরপর শ্রীনৃসিংহদেব ও তারপর শ্রীনিতাইগৌরকে প্রদীপ নিবেদন করতে হয়। এরপর তুলসীদেবীকে নিবেদনের পর শ্রীগুরুপরম্পরাকে। গুরুপরম্পরায় প্রত্যেীককে সাতবার বা পাঁচবার নিবেদন করতে হবে। তবে, যেহেতু প্রদীপ ইতোমধ্যে ভগবানকে নিবেদন করা হয়েছে, তাই এটি গুরুপরম্পরা, যেহেতু জীবতত্ত্ব তাই তাদের কেবল মুখমণ্ডলে প্রদীপ নিবেদনের জন্যী আচার্যগণ বলে থাকেন। সকল আরতির ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য। 

সময়স্বল্পতা থাকলে (গৃহে বা মন্দিরে না থাকলে, বা কোনো প্রয়োজন থাকলে) কেবল শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণ ও শ্রীগৌরনিতাইকে তথা অন্যত ভগবৎবিগ্রহকে প্রদীপ নিবেদন করতে পারেন।


নিজে তুলসীকাঠের সলিতার প্রদীপ নিবেদনের মহিমা জেনে ভগবানকে নিবেদন করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রীতিবিধান করুন, অন্য কে জানিয়ে উৎসাহিত করে তার ও আপনার নিজের ভগবানকে আরো অধিক সন্তুষ্ট করার সুযোগ গ্রহণ করুন। 

হরেকৃষ্ণ!


#বি:দ্র: #আগামী_১৮_সেপ্টেম্বর_থেকে_১৬_অক্টোবর_পর্যন্ত_পুরুষোত্তম_মাস!

পুরুষোত্তম মাসে ভগবানকে দামোদরের মতো ঘৃত প্রদীপ নিবেদন করতে হয় এবং চৌরাগ্রগণ্য্ পুরুষাষ্টকম্ কীর্তন করা হয়। এছাড়াও এ সময় ব্রতধারণ করা উচিত।


শাস্ত্রমতে অধিমাস হলো গুরুত্বপূর্ণ মাস।


বৈশাখ, মাঘ এবং কার্তিক মাস থেকেও এ মাস সহস্র সহস্র গুণে শ্রেষ্ঠ। এ মাসে সক্ষম ব্যুক্তির হবিষ্যাগ্রহণ ব্রত এবং সকলেরই শ্রীপুরুষোত্তম কৃষ্ণকে প্রদীপ নিবেদন করা কর্তব্যে।

Post a Comment

0 Comments