শাস্ত্রে ছয় প্রকার শ্রোতার কথা বলা হয়েছে

 



আপনিও বিচার করতে পারবেন, আপনি কোন কোয়ালিটির শ্রোতা।


শাস্ত্রে ছয় প্রকার শ্রোতার কথা বলা হয়েছে


১) চাতক পাখি।

২) রাজহংস।

৩) তোতা পাখি।

৪) মাছরাঙ্গা পাখি।

৫) ষাঁড় এবং 

৬) উট।


এই ছয় প্রকার শ্রোতা।


ব্যাখ্যা গুলো জানুনঃ-

👇👇👇👇👇👇👇


#সর্বোচ্চ_স্তরের_শ্রোতা_হলেন_চাতক_পাখি।


#১চাতক_পাখি  🦜

শুধুই বৃষ্টির জল গ্রহন করে। নদী, পুকুর, ডোবা, খাল, বিল, সমুদ্রে এতো জল থাকা সত্ত্বেও চাতক পাখি শুধু বৃষ্টির জল গ্রহন করবে। বৃষ্টির জল ছাড়া অন্য কোন জল সে গ্রহন করবে না। মরে যাবে তবু বৃষ্টির জল ছাড়া গ্রহন করবে না। তেমন এক শ্রেনীর ভক্ত আছে যারা কৃষ্ণকথা ছাড়া অন্য কোন কথা বলবেও না, শুনবেও না। শুধুই কৃষ্ণকথা, তাদেরকে বলা হয় চাতক পাখি।


জগতে এতো কথা, বিভিন্ন প্রকার সাহিত্য, গল্প, উপন্যাস, যাই থাকুক না কেন, কৃষ্ণকথাই হল তার প্রাণ। চাতক পাখির প্রান যেমন বৃষ্টির জলে নিহীত তেমনি ভক্তের প্রান কৃষ্ণকথায় নিহীত।এই শ্রেনীর ভক্ত হল সর্বোচ্চ ধাপের শ্রোতা, এদেরকে বলা হয় চাতক শ্রোতা।


#দ্বিতীয়_শ্রোতা_হলেন_হংসরাজ।


#২_রাজহংস। 🦢

রাজহংসকে যদি জল এবং দুধ একত্র করে দেওয়া হয়, তবে রাজহংস শুধু দুধটুকুই খাবে জলটুকু ফেলে দিবে।

তেমনি রাজহংস কোয়ালিটির শ্রোতার সবকিছুই শুনবে শুধু স্বারটুকুই গ্রহন করবে। অর্থাৎ কৃষ্ণকথা টুকুই গ্রহন করবে, বাকি সব ত্যাগ করবে।


#তৃতীয়_শ্রেনীর_শ্রোতারা_হলেন_তোতা_পাখি


#৩_তোতা_পাখি 🐦

তোতা পাখিকে যদি কোন কিছু বলা হয়, তোতা পাখি কিন্তু হুবহু তা বলতে পারে। তেমনি এক শ্রেনীর শ্রোতা আছেন, যারা খুব সুন্দর করে শোনের এবং হুবহু অন্যের কাছে বলতেও পারেন।

এই শ্রেনীর শ্রোতারাও ভালো।


#চতুর্থ_শ্রেনীর_শ্রোতা_হলো_মাছরাঙ্গা


#৪_মাছরাঙ্গা 🦩

মাছরাঙ্গা পাখি যখন মাছ শিকার করে তখন সে গভীর মনোযোগ সহকারে তার লক্ষ্যের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে, শিকারী এসে তাকে মেরে ফেলতে পারেন তার দিকেও লক্ষ‍্য থাকে না।

তেমনি এক শ্রেনীর শ্রোতা আছে যারা পাঠের সময় গভীর আগ্রহের সাথে মনোযোগ সহকারে শ্রবন করে।

তারা বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে থাকে, চোখে পলকও পরে না, তারা মৃত্যুর কথাও ভাবে না। এই শ্রেনীর ভক্তও খুব ভালো। এই শ্রেনীর ভক্ত পাঠকের কৃপা লাভ করে এবং শুদ্ধ ভক্তে পরিনত হয়। কিন্তু যারা পাঠের সময় ঘুমিয়ে পরে তারা কৃপা থেকে বঞ্চিত হয়।


#এক_শ্রেনীর_শ্রোতা_আছে_যাদেরকে_শেয়াল_শ্রোতা_বলা_হয়

শেয়াল যেমন অসময়ে হুক্কাহুয়া বলে ডেকে ওঠে।

তেমনি এক শ্রেনীর শ্রোতা আছে যারা পাঠকের আলোচনার মাঝে বলে আমি একটু বলে নি, আমার একটা কথা আছে। এই শ্রেনীর শ্রোতাকে প্রভুপাদ শেয়াল শ্রোতা বলেছেন, তারা অসময়ে ডাক দেন।


#পঞ্চম_শ্রোতা_হলেন_ষাঁড়


#৫_ষাঁড় 🐂

ষাঁড় মানে হলো গরু। আপনি ষাঁড়কে যা দিবেন, সে সেটাই গ্রহন করবে, কোন বিচার করবে না। তেমনি এক শ্রেনীর শ্রোতা আছে, তাদেরকে যে যাই বলবে, সে সেটাই গ্রহন করবে, কোন বিচার করবে না। এবং ফলে কোন সঠিক সিদ্ধান্ত সে গ্রহন করতে পারে না, সারা জীবন দ্বন্দ্বের ভীতর থাকে।

সে শাস্ত্রও গ্রহন করবে আবার বাইরেই লোকেরা যা বলবে সেটাও গ্রহন করবে।


#ষষ্ঠ_শ্রোতা_উট


#৬_উট 🐪

উট মরুভুমির প্রানী, উটের যখন তৃষ্ণা পায় তখন ক্যাকটাস চিবিয়ে চিবিয়ে খায়, তখন কাঁটার আঘাতে তার জিহ্বা থেকে রক্ত বের হয়, এবং সে নিজের রক্তে পিপাসা মেটায় এবং মনে করে ক্যাকটাসের খুব স্বাদ, আসলে সে নিজের রক্তের স্বাদ গ্রহন করছে কিন্তু সে বোঝে না।

তেমনি এক শ্রেনীর শ্রোতা আছে, তাদেরকে যতো উন্নত শিক্ষা দেওয়া হোক না কেন, তারা তা মানে না এবং লোকে যে গ্রাম্য বাজে শিক্ষা দেয় সেই অনুযায়ী কাজ করবে, শাস্ত্র জানা সত্ত্বেও তারা শাস্ত্রের বিরুদ্ধ আচরন করবে, ফলে তিনি যে আত্মা সেই আত্মার অধঃপতন করবে কিন্তু জাগতির সুখকে সে প্রকৃত সুখ মনে করে আনন্দ পাবে। অর্থাৎ নিজের ক্ষতি করছে কিন্তু মনে করবে আমি সুখে আছি।

আবার অনেকে ভালো শিক্ষা পাওয়া সত্ত্বেও খারাপটাই করবে ফলে বিভিন্ন প্রকার সমস্যায় জর্জরিত হবে, এবং শুধু ভগবানকেই দোষারোপ করবে।

আমরা প্রায় লোকেরাই জানি যে, আমরা আত্মা, আর আত্মা অখাদ্য কুখাদ্য, অমেধ্য খায় না, এতে আত্মা অধঃপতিত হয়, কষ্ট পায়। আমরা জানা সত্ত্বেও সেটাই খাচ্ছি, এবং আমার প্রকৃত সত্ত্বা যে আত্মা, তার কিন্তু ক্ষতি হচ্ছে। আমি নিজের ক্ষতি করছি, আমি আমার রক্ত ক্ষরণ করছি, কিন্তু মাছ মাংস খাচ্ছি আর বলছি বাহ! কতো মজা, ঠিক উটের মতো।


#এখন_বিবেচনা_করুন

আপনি কোন কোয়ালিটির শ্রোতা?


#শ্রীল_প্রভুপাদ_বলেছেন-

 আমাদের অন্ততো ৩য় পর্যায়ের ভক্ত হতে হবে। অর্থাৎ তোতা পাখি হতে হবে।

অর্থাৎ মাছরাঙ্গার মতো মনোযোগ সহকারে কৃষ্ণকথা শ্রবন করতে হবে এবং তার তোতা পাখির মতো হুবহু অপরের কাছে বলতে হবে।


Post a Comment

0 Comments