অসম্ভবকে সম্ভব করা সহজ - শিক্ষামূলক গল্প:




এক গ্রামে দুই বালক বন্ধু ছিল। একজনের বয়স ৬, অন্যজনের বয়স ৯ বছর। একদিন দুইবন্ধু একসাথে গোসল করতে গিয়ে ৯ বছরের বন্ধুটি পানিতে পড়ে গেলো। বন্ধুটি ডুবে যাচ্ছে দেখে, ৬ বছরের বন্ধুটি পাশে রাখা দড়িবাধা বালতিটিকে দ্রুত জলের মধ্যে ছুড়ে দিল। এরপরে ৯ বছরের বন্ধুটি ধরে ফেলল। ৬ বছরের বাচ্চাটা নিজের সর্বোচ্চ জোর লাগিয়ে তার বন্ধুটিকে পাড়ে টেনে তুলল।

বাড়িতে ফিরে এসে যখন তারা ঘটনাটা সবাইকে বলল কেউ বিশ্বাস করল না। ৯ বছরের বন্ধুটির যে ওজন তা একা টেনে ওঠানোর ক্ষমতা ৬ বছরের বাচ্চাটার থাকার কথা না। তাই কেউই তাদের কথা বিশ্বাস করল না।
ঐ গ্রামে একজন জ্ঞানী লোক ছিল। সবাই লোকটাকে সম্মান করত। এই লোকটা কিন্তু বাচ্চা দুটোর কথা বিশ্বাস করে নিয়েছিল। এমন একজন জ্ঞানী মানুষ কথাটা বিশ্বাস করে নিল, তখন সবার মনে হল, নিশ্চই এর মাঝে কোন ব্যাপার আছে। গ্রামের লোক গুলো এবার সেই লোককে গিয়ে বলল, জনাব আপনি একটু বুঝিয়ে বলুন তো কি ঘটেছিল? জ্ঞানী লোকটা বললেন- আমি কি বলব? বাচ্চারা বলছে সেটাই।
এবার কেউ কেউ সেই জ্ঞানী লোককেও অবিশ্বাস করে বসল। কেউ কেউ বলল, আপনি বুঝিয়ে বলুন কি করে ৬ বছরের এই বাচ্চা ৯ বছরের এই বাচ্চাকে জল থেকে টেনে তুলল? এটা কি সম্ভব নাকি?
জ্ঞানী লোকটি বললেন- সম্ভব। কারণ বাচ্চাটা যখন এই কাজটি করছিল, তখন তার আশপাশে এটা বলার মত কেউই ছিল না যে, "তোমার দ্বারা এটা সম্ভব না"। ...
তাই বালকটি কাজটাকে সম্ভব মনে করে চেষ্টা করেছে এবং সফল হয়েছে।
মানুষের জীবনী শক্তির অধিকাংশই শেষ হয়ে যায় শুধু পাশের মানুষের নেতিবাচক কথা শুনতে শুনতে। লক্ষ্য করে দেখবেন, আপনি যখন কোন ভালো কাজ করতে যাচ্ছেন, তখন একগাদা মানুষ জড় হয়ে আপনাকে নিরুৎসাহিত করবে যে, এটা তুমি পারবে না, তোমার দ্বারা হবে না, তোমার দ্বারা সম্ভব না, এটা খুব কঠিন, এটা খুব অসম্ভব, এভাবে হয় না ইত্যাদি ইত্যাদি। ফলে যে উদ্দীপনা নিয়ে আপনি কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন তার ২/৩ অংশই শেষ হয়ে যায়।
মনে রাখা খুব জরুরী তা হল, কেউ যখন বলবে যে তুমি এটা পারবে না। তখন সে আসলে তার নিজের অপারগতাকেই উপস্থাপন করে। সে নিজে কখনো কাজটি করতে পারেনি বলেই সে বিশ্বাস করে আপনিও পারবেন না।
যদি সত্যিই ভালো কিছু করতে চান তবে এই ধরণের মানুষকে উপেক্ষা করার মত ক্ষমতা আপনার থাকতে হবে।

Post a Comment

0 Comments