প্রায় আজ থেকে  500 বছর আগের কথা।

দিল্লির নিকটবর্তী  'সিরি'  নামক এক গ্রামে ব্রাহ্মণ পরিবারে "সুরদাস"  জন্মগ্রহণ করেন। 


সুরদাস জন্মাবধি অন্ধ ছিলেন। 

এই জন্য বাড়ি থেকে  তাকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। 

একটি পিপুল গাছের নীচে আশ্রয় নিয়ে ছিলেন। সেখানে বসে ভজন গাইতেন। এইভাবেই তার দিন কাটতো। 


ভগবান  কৃষ্ণের প্রতি তার অগাধ ভক্তি ছিল। 

তিনি নিয়মিত কৃষ্ণের ভজন ভক্তি ভরে গাইতেন। 

এটা দেখে কোনো গুরু তাকে বললেন :

"কোনো মন্দিরে যাও, আর ওখানে ভজন গান করো। গাছের নীচে ভজন গান শোভা পায় না।"


মথুরা - আগ্রা হাইওয়ের উপর অনেক ভগবান কৃষ্ণের মন্দির ছিল। তিনি  তাই করলেন। চলে গেলেন কোনো মন্দিরে। সুরদাস খুব ভালো ভজন গাইতেন। না কিছু দেখতে পেতেন, না ভগবানের বিগ্রহকে কোনো দিন দেখেছেন। তবু সুন্দর খুব ভালো ভজন গাইতেন।

 

তবে সুরদাস যখন কৃষ্ণ-মন্দিরে ভজন গাইতেন তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের  দর্শন পেতেন। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাকে কৃপা করে দর্শন দিতো। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সুরদাসের ভজন শোনার জন্য আসতেন।


একদিন সুরদাস মন্দিরের পূজারীকে বললেন : "ভগবানকে (বিগ্রহকে) হলুদ বসনে খুব সুন্দর লাগছে"।


পূজারী বললেন : 

"তুমি কি করে বুঝলে ?  

তুমি তো দৃষ্টিশক্তিহীন।"


তখন সুরদাস বললেন : 

"আমি প্রতিদিন ভগবানের দর্শন পাই , 

তবে দৃষ্টি শক্তিতে নই  মনের শক্তিতে দর্শন পাই।"


পূজারী পরীক্ষা করার জন্য পরের দিন ভগবানের বিগ্রহকে নীল বসন পরালেন।


সুরদাস বলে উঠলেন : 

"বাহ !! আজ ভগবানকে নীল বসনে আরো খুব সুন্দর লাগছে"।


পূজারী তো অবাক হলেন।

পরের দিন পূজারী ভগবানের বিগ্রহে কোনো বসন দিলেন না। শুধু পত্র দিয়ে ঢেকে দিলেন।


পরের দিন সুরদাস তার ভজনে গেয়ে উঠলেন :

"ভগবান ভি গরীব হো গেঁয়ে আজ, পত্তো মে আঁয়ে"।


পূজারী সহ মন্দিরের সকলে শুনে বিস্মিত হলেন।

সবাই বুঝলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দর্শন শুধুমাত্র 

ভক্তি ও মনের শক্তি দ্বারাই সম্ভব ।

Post a Comment

0 Comments