গুরু কৃপা....‼️

গুরুমহারাজ একবার দুবাইতে এসেছিলেন। আর সেদিন ছিল আমার জন্মদিন। আমি যেন গুরুমহারাজের থেকে আশির্বাদ পাই সেজন্য আমি খুব আগ্রহী ছিলাম। আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে গুরুমহারাজকে গিয়ে বলব,"গুরুমহারাজ, আজকে আমার জন্মদিন। আপনি আমাকে আশীর্বাদ করুন।" কিন্তুু গুরুমহারাজ সকাল থেকে অনেক ব্যস্ত ছিলেন। আমিও গুরুমহারাজের কাছে গিয়ে তাঁকে বিরক্ত করতে চাইনি। আমি আমার সুযোগের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। তখন একজন ভক্ত আমাকে বলল,"আজকে আমরা পাউরুটি করব, সাথে জ্যাম তৈরী করব।" তখন আমি বললাম,"আমি কি গুরুমহারাজের  জন্য একটু জ্যাম তৈরি করতে পারি?" আমি ভাবলাম, আজকে আমার জম্নদিন, তাই আমি গুরুমহারাজের জন্য জ্যাম তৈরি করব এবং গুরুমহারাজ যখন জ্যাম দিয়ে পাউরুটি খাবেন তখন আমি খুব আনন্দিত হব। আমি জ্যাম তৈরী করে, পাউরুটি এবং জ্যাম গুরুমহারাজের জন্য নিয়ে এসেছি। আমি অপেক্ষা করছিলাম। কয়েকজন ভক্ত ছাড়া বাকিরা চলে গিয়েছিলেন। গুরুমহারাজ শৌচাগারে গেলেন। আমি ভাবলাম, গুরুমহারাজ যখন শৌচাগার থেকে বের হবেন, তখন আমি তাঁর কাছে গিয়ে বলব,"গুরুমহারাজ, আজ আমার জন্মদিন। আপনি আমায় আশীর্বাদ করুন।" গুরুমহারাজ বাথরুম থেকে বের হয়ে সোজা আমার কাছে এলেন। আমার দিকে তাকিয়ে আমাকে বললেন,"তুমি কি জান না, তুমি দেহ নও, তুমি আত্মা?" আমি তখন বুঝতে পারছিলাম। আমি গুরুমহারাজকে কী  বলব! সারাদিন ধরে আমি মনে মনে ভাবছিলাম যে আজকে আমার জন্মদিন, আজকে আমার জন্মদিন, আজকে আমার জন্মদিন। কিন্তু গুরুমহারাজ আমাকে কী বললেন,"আরে এত মূর্খ হইয়ো না, এতো বোকা হইয়ো না, তুমি এই দেহ নও।" যাই হোক, অবশেষে আমি গুরুমহারাজকে বললাম,"গুরুমহারাজ, আজ আমার জন্মদিন।" গুরুমহারাজ সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বললেন,"তুমি কেন আমাকে আগে বলনি? আমার শেষ মালাটাও আমি এক ভক্তকে দিয়ে দিয়েছি। তুমি আগে বললে, আমি তোমাকে কমপক্ষে একটা মালা দিতে পারতাম।" আমি বললাম,"গুরুমহারাজ, আমি শুধু আপনার কাছ থেকে একটু আশির্বাদ ভিক্ষা চাই।" আমি তখন গুরুমহারাজের চরণে নিপতিত হলাম এবং গুরুমহারাজ আমাকে আশির্বাদ দিলেন। এই হচ্ছে গুরু আর কৃষ্ণের মধ্যে সংযোগ। তাদের মধ্যে সংযোগটা অত্যান্ত নিবিড়।তারা একসাথে রয়েছেন বদ্ধ জীবকে বলার জন্য যে,"তুমি এই দেহ নও, তুমি হলে কৃষ্ণের নিত্য দাস।

শ্রীপাদ হরিলীলা দাস


Post a Comment

0 Comments