Internet Addictionইন্টারনেট_আসক্তি
Speaker : HG Amogh Lila Prabhu
*) ইন্টারনেট মানে হচ্ছে নিজেকে আবদ্ধ করে ফেলার জাল বা ফন্দি।
*) গবেষণা তথ্য অনুসারে
- ৭৮% লোক আছে, যারা মোবাইল ব্রাউজিং বন্ধ রাখে না সারাদিনে।
- ৮৩% ওয়েবসাইট কোনোভাবেই কার্যকরী বা উপকারী নয়।
*) মোঘল বা ব্রিটিশ শাসন আমাদের সংস্কৃতি যতটা পরিবর্তন করতে পারে নি, তার তুলনায় কার্যকরী পরিবর্তন করেছিল টেলিভিশন আবিষ্কার।
সবচেয়ে দ্রুত সময়ে আমাদের সংস্কৃতি পরিবর্তন করে দিয়েছে এই ইন্টারনেট ব্যবহার।
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষতিঃ
ছুরি খারাপ নাকি ভালো সেটা নির্ভর করে আমাদের ব্যবহারের উপর, তেমনি ইন্টারনেটের উপকারীতা বা ক্ষতি নির্ভর করছে আমাদের ব্যবহারের উপর।
১) শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ।
২) ঘুমের স্বাভাবিক নিয়মে ব্যাঘাত।
এই ঘুমের ব্যাঘাত থেকে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ বিভিন্ন রোগের সূত্রপাত।
দিনের সময় টা ঘুমে বা ঘরে বসে কাটানোর ফলে সূর্যদেবের আশীর্বাদ স্বরূপ সূর্যরশ্মি গায়ে লাগাই না।
অথচ এই সূর্য রশ্মির এত শক্তি, যা আমাদের হতাশা দূর করার ক্ষমতা রাখে, শরীরকে বলবান রাখে।
এমন জীবনযাপনের ফলে যুবক বয়সেই বৃদ্ধ জীবনের স্বাদ নিতে হচ্ছে, মানে রোগগ্রস্থ হওয়ার মাধ্যমে।
৩) সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সক্ষমতা হ্রাস করে দেয়।
কেননা ইন্টারনেটে বেশি আসক্ত থাকার ফলে আমরা বাস্তব জীবনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হই না, যার ফলে বাস্তব জগতের অভিজ্ঞতা হয় কম। ফলশ্রুতিতে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বুঝে উঠতে পারি না, কিভাবে সে পরিস্থিতি গুলো মোকাবেলা করা সম্ভব।
৪) স্মৃতিশক্তি নষ্ট হয়।
৫) নির্দিষ্ট বিষয়ে মনযোগ/ ফোকাস ধরে রাখার ক্ষমতা (Retention time) নষ্ট হচ্ছে।
বর্তমানে আমাদের মনযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা জেলিফিশ এর তুলনায়ও কম, শুধুমাত্র এই ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে।
৬) সম্পর্ক দৃঢ় হওয়ার বদলে নষ্ট হচ্ছে সহজেই।
বিবাহ মানে সেখানে দুজনের মধ্যে ৩ধরণের অন্তরঙ্গতা থাকতে হবে-
✅ শারীরিক অন্তরঙ্গতা ( একে অপরের শারীরিক সন্তুষ্টি প্রদান)
✅মানসিক অন্তরঙ্গতা ( নিজেদের হৃদয়ের ভাব জানানো, বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের মনোভাব শেয়ার করা, যত্ন গ্রহণ করা)
✅ আধ্যাত্মিক অন্তরঙ্গতা ( একসাথে জপ করা, মন্দিরে যাওয়া, ভগবানের সেবায় যুক্ত হওয়া)
এক্ষেত্রে একটি সুসম্পর্কে শারীরিক অন্তরঙ্গতার তুলনায় মানসিক এবং আধ্যাত্মিক অন্তরঙ্গতা অধিক থাকা জরুরি।
কিন্তু বর্তমান সময়ের পরিস্থিতি এমন যে, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক অন্তরঙ্গতা জিরো লেভেলে। অন্যদিকে সবার ফোকাস হচ্ছে শারীরিক অন্তরঙ্গতা তথা শারীরিক সন্তুষ্টির প্রতি।
যার দরুণ যখনি একে অপরকে শারীরিক সন্তুষ্টি প্রদানে ব্যর্থ হয়, তখনি শুরু হয় সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার।
আগে ছিল যৌথ পরিবার, সেটা আলাদা হয়ে হলো একক তথা নিউক্লিয়ার পরিবার। সেটা আরো ছোট হয়ে এখন তৈরি হয়েছে এটমিক পরিবার, যেখানে একি ঘরে প্রতি প্রত্যেকে আলাদা জীবনযাপন করে।
ইন্টারনেটের ব্যবহারে বর্তমানে ১৭% ডিভোর্স রেইট, ২৩% গৃহ নির্যাতন বেড়ে গেছে।
৭) মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
ইন্টারনেট আমাদেরকে দেখায় সবকিছু অনেক দ্রুতগামী, কিন্তু বাস্তবে জীবন ততটা দ্রুতগামী নয়। যার ফলে আমরা বাস্তবতাকে গ্রহণ করতে পারি না।
৮) ইন্টারনেট আসক্তির ফলে আমরা আচরণগত ন্যূনতম সেন্সেটিভিটি ভুলে যাচ্ছি।
কাকে কি বলা উচিত, কিভাবে আচরণ করা উচিত, ব্যক্তিভেদে কিভাবে সম্বোধন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে হয়, সেটাই আমরা আজকাল ভুলে যাচ্ছি।
৮) এই ইন্টারনেট আসক্তি আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনও নষ্ট করে দিচ্ছে।
আগে ভক্তরা নিজেদের মধ্যে আধ্যাত্মিক দর্শন নিয়ে আলোচনা করত। আর বর্তমানে??
মোবাইল ই বর্তমান সময়ের অপ্সরী, যা আমাদের আধ্যাত্মিক জীবনে পতন হওয়ার মূল কারণ।
ভগবদগীতা, ভাগবতম শাস্ত্র না পড়ার কারণে আমরা ভালো প্রচার করতে পারছি না। নিজেরাই সে অমৃত রস আস্বাদন করতে পারছি না।
Solution:
*) non-android phone ব্যবহার করা।
এটা যাদের ক্ষেত্রে প্র্যাক্টিক্যাল সল্যুশন বলে মনে হচ্ছে না, তারা দুটো ফোন রাখতে পারে। তবে এন্ড্রয়েড ফোন টি শুধু স্পেশিফিক কাজের জন্য, সবসময় সাথে থাকবে বাটন ফোন টি।
*) স্মার্ট ফোনে parental control app ব্যবহার করা, যার ফলে কোনো অপ্রয়োজনীয়, অনুপযুক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে সে অ্যাপসে রিপোর্ট হবে।
এই এপসে ডেইলি কতক্ষণ সময় ব্যয় হয়েছে বিভিন্ন সাইটে সেটাও উঠে আসবে।
এটা মন্দির হোক বা গৃহস্থ আশ্রম সব জায়গায় ব্যবহার করা যেতে পারে। মা বাবারা এটা শুধু নিজের সন্তানের জন্য প্রয়োগ করবে তা নয়। মা বাবাদের উচিত কোনো উন্নত ভক্তের সন্তান হিসেবে তার নিকট parental report রাখা।
*)দ্রুত স্পিডের নেট এভয়েড করা
ইন্টারনেট স্পিড যতবেশি 3G, 4G, 5G বাড়তে চলেছে, আমাদের জীবনের Essential G (G for Giridhari, Gauranga, Guru) এর গুরুত্ব আমরা ভুলে যাই। তাই উচ্চ স্পিড এর নেট এভয়েড করা যেতে পারে।
*)নিজের জন্য উপকারী, এমন কাজে যুক্ত রাখা নিজেকে।
মোবাইলের পরিবর্তে সময় টা অন্য কিছুতে ব্যয় করা- মৃদঙ্গ বা করতোল শিখা, Microsoft office এর কাজ শিখা।
0 Comments