যে মন্দির বৃষ্টির পূর্বাভাস বলে দেয়


রহস্যময় ও অলৌকিক: ৪২০০ বছরের পুরনো অলৌকিক জগন্নাথ মন্দির, যা বৃষ্টির পূর্বাভাস বলে। আমাদের দেশে অনেক রহস্যময় এবং অলৌকিক মন্দির রয়েছে। কিন্তু এমন একটি মন্দির আছে যার অলৌকিকতা খুবই বিস্ময়কর। 

আজ আমরা যে মন্দিরের কথা বলব তার গৌরব খুব আলাদা। এই মন্দিরটি ৭ দিন আগেই বৃষ্টির পূর্বাভাস বলে দেয়।


উত্তরপ্রদেশের কানপুরে অবস্থিত এই মন্দিরটি বৃষ্টিপাতের সঠিক তথ্য প্রদান করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে যখনই বৃষ্টি হবে ঠিক ৭দিন আগে, মন্দিরের ছাদ থেকে, এমনকি তীব্র সূর্যের আলোতেও জল পড়তে শুরু করে। শুধু তাই নয়, বৃষ্টি শুরু হতে না হতেই মন্দিরের ছাদ থেকে টপটপ করা জল পড়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।

 

কানপুর জেলার বিশাখন্ড থেকে ৩ কিমি দূরে বেনহাটায় একটি মন্দির রয়েছে যেখানে ভগবান জগন্নাথের পূজা করা হয়। এই মন্দিরকে ভগবান জগন্নাথের প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়।


স্থানীয়রা তাকে ঠাকুর বাবাজি বলে এবং পুরো গ্রাম লোকে সেখানে পূজা দেওয়। ভগবান জগন্নাথ ছাড়াও মন্দিরে বলরাম এবং সুভদ্রানীর মূর্তি রয়েছে। এই মূর্তিগুলো কালো মাটির তৈরি। মন্দির চত্বরে ভগবান সূর্য এবং পদ্মনাভের মূর্তিও রয়েছে।

 

এই মন্দিরের বিশেষ বিষয় হল যে যখনই বৃষ্টি হয়, সে রৌদ্রজ্জ্বল দিন হলেও, আগে থেকে জলে হালকা ফোঁটা পড়তে শুরু করে। যা থেকে গ্রামবাসীরা জানতে পারে একটু পরেই বৃষ্টি হতে চলেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এই সংকেত কৃষকদের তাদের ফসল উৎপাদনের জন্য খুবই উপকারে আসে।


ছাদে ফুটো হওয়া কোন চিহ্ন নাই, কিন্তু রৌদ্র উজ্জ্বল থাকা সত্ত্বেও ছাদ থেকে টিপ টিপ করে জল পড়া শুরু হয় এবং তারপর বৃষ্টি শুরু হয়। 

 

ভগবান জগন্নাথের এই প্রাচীন মন্দিরে এই ঘটনা বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। এই অলৌকিক ঘটনাটি কিভাবে ঘটেছিল তা স্থানীয় লোকদের পাশাপাশি বিজ্ঞানীদের কাছে খুবই আকর্ষণীয় এবং রহস্যজনক। 


এখন পর্যন্ত আবহাওয়া বিভাগ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ এটি একটি অলৌকিক ঘটনা হিসাবেই দেখে । যদি আমরা মন্দিরের কথা বলি, তাহলে মন্দিরের দেয়াল ১৪ ফুট চওড়া এবং উপরে জলের কোন উৎস নেই।


    প্রতিবছর ভগবান জগন্নাথের রথযাত্রা পুরো গ্রামে উৎফুল্লতার সাথে হয়, এই সময পুরো গ্রাম এতে অংশ নেয়। কানপুর ছাড়াও মানুষ  এই অলৌকিক মন্দির দেখতে বহু দূর থেকে আসে। রথযাত্রায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান এবং সাক্ষাৎকারও অন্তর্ভুক্ত থাকে।

 

এখানকার লোকেরা বলে যে এই মন্দিরে এমন কিছু বর্ষা পাথর আছে যে পাথর গুলো থেকে এমন অলৌকিক ঘটনা ঘটে থাকে। এই মন্দিরটি খুব প্রাচীন, যার বয়েস ৪২০০ বছরের বেশি। তাই মানুষ জানে না যে এই পাথরগুলি কোথা থেকে আনা হয়েছিল।

 

স্থানীয় লোকজন বলছেন যে এই মন্দিরটি মহাভারতের সময়কালের এবং এই মন্দিরটি কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের পর নির্মিত হয়েছিল। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের কিছু বিজ্ঞানী বলেন, এই মন্দিরটি দেখতে বৌদ্ধ ধর্মের সময় নির্মিত মন্দিরের মতো। 

 

অতএব এই মন্দিরটি অশোক যুগের বলে মনে করা হয়। যদিও কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক বলছেন যে এই মন্দিরে একটি ময়ূরের পালক হর্ষবর্ধনের সময় নির্দেশ করে। যাইহোক, আজ পর্যন্ত এই মন্দিরের ইতিহাস সম্পর্কে কোন সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে বেশির ভাগে প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্বাস করে এই মন্দিটি বয়েস প্রায় ৪২০০ বছর হবে।

Post a Comment

0 Comments