ইঁদুর দৌড়


গাধার মতো পরিশ্রম করে করি বহু অর্থ উপার্জন,

দেখ টিভি সিনেমা, উদর করহ পূরণ।


মদ, নারী আর পার্টি, জীবনে ফূর্তি নিয়ে,

ক্রয় কর মোবাইল, ল্যাপটপ, ঘুর বিদেশ, কর বিয়ে।


নিজেকে ব্যস্ত রাখ আর ‘বর্তমানে থাক’, করোনা উদ্বেগ,

খাও যাহা রুচিকর, পেপসি পান করহ অনেক।


ভূল কিংবা শুদ্ধ? চিন্তা না করো, কর যা করবে তোমাকে সুখী

দুশ্চিন্তা-উদ্বেগ ভুলে যাও, মুদ্রাই মধু নয় কি?


হে ইঁদুর ও ইঁদুরীগণ! আছে এক ভয়ংকর বেড়াল, করহ শ্রবণ,

সবকিছু গ্রাস করে মুহুর্তে তোমাকে সে করিবে ভক্ষণ ।


ল্যাপটপ, মোবাইল, টিভি, গৃহ, বন্ধু এবং আত্মীয় স্বজন,

চাকরি, অর্থ, আরামদায়ক জীবন কিংবা মধুর স্বপন ।


তুমি নও এই নশ্বর দেহ, চিদ্ আত্মা হও,

ভগবানের অবিচ্ছেদ্য অংশ, নিত্য সনাতন ধামে রও।


স্বতন্ত্র ভোগের লোভে এই জগতে এসে নিয়োজিত হয়েছ ইঁদুর দৌঁড়ে,

যেন বিমান চালকের মত এ জড় দেহটি চালনার তরে ।


আধ্যাত্মিক, আদিভৌতিক আর আদিদৈবিক ক্লেশ বড় তীব্র,

দূর্গার এই ত্রিশূল, স্মরণ করিয়ে দেয় নিত্য সুহৃদের প্রতি কর্তব্য ।


ইঁদুর দৌড়ে ব্যস্ত জগত, গোলক ধাঁধায় পড়ে ইঁদুরের মত থাক যদি,

অর্থ দিয়ে যায় না কেনা সুখ, প্রেম, বিশ্বাস আর শান্তি ।


চপল সুখ কেবল যাই আসে,

জানিও, অমৃত যেভাবে পরিণত হয় বিষে।


যৌবন আমোদ-প্রমোদ অনিত্য অধ্যায়,

বার্ধক্য আর মৃত্যু বড় ভয়ংঙ্কর ভাই ।


আধুনিক চাকচিক্যময় বৈদ্যুতিক যন্ত্র,

পরম সত্য সম্পর্কে তোমাকে করিবে অন্ধ ।


প্রসাধনী, মেকাপ, হেয়ার ডাই আর মেডিকেশন,

পারিবে না রোধিতে তব জরা-ব্যাধি-মরণ ।


বিত্ত, কর্ম, শিক্ষা এবং রূপসৌন্দর্য ইতিমধ্যে নিয়তি করেছে অনিবার্য,

কিন্তু এগুলো কিভাবে ব্যবহার করবে, তা নিঃসন্দেহে ভবিষ্যৎ দেহ করবে ধার্য ।


যেতে পার স্বর্গে বা নরকে কিংবা গোলকধামে, তুমিই তোমার ভাগ্যের নির্মাতা,

তোমার কার্য নির্বাচন, শুভ-অশুভ কিংবা দিব্য ফলের প্রদাতা ।


অন্যের ভাল কর যদি, ফিরে পাবে সুবিধা বহুবিধ,

পাপ কর্ম বয়ে আনবে দূরারোগ্য ব্যাধি, নিচ যোনিতে জন্ম বা দারিদ্র ।


যদি ভগবানের শরণাগত হও, প্রেম ও সেবা কর আর শাস্ত্রনির্দেশ কর অনুসরণ,

তাঁর নাম ও মহিমা কীর্তন কর, তাহলে নিঃসন্দেহে তুমি ভগবদ্ধামে করবে প্রত্যাবর্তন।

Post a Comment

0 Comments