ষড়রিপু...!!!

(আপনার অন্তস্থ শত্রু!)


‘‘কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ,         মদ-মৎসরতা সহ,

                   জীবের জীবন পথে বসি”। 

‘‘অসচেষ্টা-রজ্জু-ফাঁসে,          পথিকের ধর্ম নাশে, 

                     প্রাণ লয়ে করে কষাকষি।।’’


অনাদিকাল থেকে জীব এ জড় জগতে জন্ম-মৃত্যু-জরা-ব্যাধিরূপ চার প্রকার দুঃখ ভোগ করছে; আধ্যাত্মিক, আধিভৌতিক ও আধিদৈবিক- এ ত্রিতাপ জ্বালায় দগ্ধ হচ্ছে; আবার কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য- এ ষড়রিপুর দ্বারা পরাজিত হচ্ছে। 


ষড়রিপু শব্দটির সাথে প্রায় সকলেই পরিচিত। ‘ষড়’ মানে ‘ছয়', আর 'রিপু' শব্দের অর্থ ‘শত্রু'। শত্রুর কাছ থেকে আমরা প্রায় সকলেই দূরে থাকতে চাই, শত্রুকে নিধন করতে চাই অথবা তাকে বশ করতে চাই, আবার কেউ শত্রুকে বন্ধু বানাতে চাই। কিন্তু আমাদের হৃদয়াভ্যন্তরে যে ছয়টি শত্রু প্রতিনিয়ত আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তার প্রতি আমাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। যার দরুন আমরা এ জড় জগৎ থেকে মুক্ত হতে পারছি না।


ভব-সমুদ্রে পতিত জীব ষড়রিপুরূপ মহাশক্তিশালী শত্রু- নক্র-মকরাদির কবলে পড়ে অবিরত তাদের দ্বারা চর্বিত হচ্ছে। নিজের শক্তিতে জীব কখনো এদের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারে না। কারণ, রিপুগুলো সর্বশক্তিমান পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণেরই মায়াশক্তির প্রকাশ। ভগবদ্গীতায় (৭/১৪) শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন— ‘‘দৈবী হোষা গুণময়ী মম মায়া দুরত্যয়া’’ অর্থাৎ “আমার এ দৈবী মায়া ত্রিগুণাত্মিকা এবং তা দুরতিক্রমণীয়া”, কেবল নিজ চেষ্টায় কেউ তা অতিক্রম করতে পারে না। 


তারপর ভগবান বললেন- মামেব যে প্রপদ্যন্তে মায়ামেতাং তরন্তিতে “কিন্তু যাঁরা আমাতে প্রপত্তি করেন, তাঁরাই এ মায়া উত্তীর্ণ হতে পারেন।” অর্জুন শ্রীকৃষ্ণকে প্রশ্ন করেছিলেন- “হে বার্ষ্ণেয়, মানুষ কার দ্বারা চালিত হয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও যেন বলপূর্বক নিয়োজিত হয়েই পাপাচরণে প্রবৃত্ত হয়?” 


উত্তরে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেন- কাম এষ ক্রোধ এষ রজোগুণসমুদ্ভবঃ। (গী.৩/৩৭) - “হে অর্জুন, রজোগুণ থেকে সমুদ্ভূত কামই মানুষকে এই পাপে প্রবৃত্ত করে এবং (কামনা পূর্তি না হলে) এ কামই ক্রোধে পরিণত হয়।” শুধু ক্রোধই নয়, অপর চারটি রিপু - লোভ, মোহ, মদ ও মাৎসর্য এরাও কামেরই রূপান্তর। 


এই কাম উত্তম ভোগ্যদ্রব্যাদি বা ধন-ঐশ্বর্যাদির প্রতি অতিমাত্রায় আকৃষ্ট হলে তাকে ‘লোভ’ বলা হয়। আবার কামনা বা বিষয়বাসনা যখন মানুষকে অনিত্য জড়বস্তুতে আসক্ত করে রাখে, স্বরূপ উপলব্ধি করতে দেয় না, তখন তার নাম হয় ‘মোহ’। 


আবার মোহ বা অজ্ঞানতা যখন আমি ধনী, আমি মানী, আমি বিদ্বান এরূপ অহমিকার রূপ নেয়, তাকে বলা হয় 'মদ'। 


অহংকার যখন অন্যের নিজাপেক্ষা অধিক ধন, মান, বিদ্যা, সৌন্দর্য ইত্যাদি দর্শনে স্বীয় ধন, মানাদির গর্বকে খর্ব বোধ করে, তখন চিত্তে যে একপ্রকার ক্ষোভ বা অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় ‘মাৎসর্য' বা পরশ্রীকাতরতা। 


এ ছয়টি রিপু হলো হৃদয়ের অতি জঘন্য ছয়টি বৃত্তি এবং ভক্তিপথের অন্তরায়। তাই আমাদের সকলেরই ষড়রিপুরূপ এ ছয়টি শত্রু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন, যাতে সুকৌশলে এদের বশ করে আমরা ভক্তিপথে এগিয়ে যেতে পারি এবং অন্তিমে জীবনের চরম লক্ষ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শ্রীপাদপদ্ম লাভ করে এ দুর্লভ মনুষ্য জীবন সার্থক করতে পারি।


❖ কেন এই ছয় টি রিপু কে প্রধান শত্রু বলা হচ্ছে?? 

তো আমরা দেখি এই জগতে আমাদের অনেক শত্রু আছে যারা আমাদের ক্ষতি করতে চাই। যেমন - আমাদের ধন সম্পদ লুন্ঠন করে, কটু কথা বলে, বিপদে ফেলতে চাই, অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে, একদম সর্বোচ্চ ক্ষতি আমাদের হত্যা করতে পারে, কিন্ত এত ক্ষতি সাধন করা শর্তেও কেন তারপরও এদের জীবের প্রধান শত্রু না বলে কাম, ক্রোধ, লোভ, মদ, মোহ, মাৎসর্য, কে প্রধান শত্রু বলা হচ্ছে??

তার কারন হচ্ছে তথাকথিত শত্রুরা আমাদের সর্বোচ্চ ক্ষতি হত্যা করতে পারে, অর্থাৎ আমাদের এই জড় দেহের বিনাশ করতে পারে, তো ভগবদগীতা অনুসারে আমরা জানতে পারি যে এই জড় জগৎ হচ্ছে দুঃখালয়ম অশ্বাশথম অর্থাৎ এই পৃথিবী হচ্ছে দুঃখের আলয়। আর আমরা এই জড় দেহ নয়, আমরা হলাম চিন্ময় আত্মা।

এই জড় দেহের এক দিন না একদিন বিনাশ হবেই। আর আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অন্তকালে চ মাম এব....

অর্থাৎ অন্তিম কালে ভগবান কে স্মরণ করে এই দুঃখের আলয় থেকে মুক্তি লাভ করে ভগবানের ধামে ফিরে যাওয়া।

তো আমরা দেখতে পাই এই জগতের জীব রুপি শত্রুরা আমাদের সর্বোচ্চ ক্ষতি এই দেহের বিনাশ করলে ও অন্তত এই দুঃখ ময় জগতে আবদ্ধ করে রাখেনা। তাই এটাকে আসল ক্ষতি ধরা হচ্ছেনা, অপরদিকে ষড় রিপু গুলি আমাদের বার বার জন্ম মৃত্যুর চক্রে ঘুরপাক খাইয়ে এই জগতে বন্দি করে রাখছে, তাই এই ষড় রিপু কেই জীবের প্রধান শত্রু বলা হচ্ছে।

শত্রু থেকে আমরা প্রায় সকলেই দূরে থাকতে চাই, শত্রুকে নিধন করতে চাই, অথবা তাকে বশ করতে চাই, আবার কেউ শত্রুকে বন্ধু বানাতে চাই। কিন্তু আমাদের হৃদয়াভ্যন্তরে যে ছয়টি শত্রু প্রতিনিয়ত আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে তার প্রতি আমাদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। যার দরুন আমরা এই জড় জগৎ থেকে মুক্ত হতে পারছিনা।


☑ষড় রিপু সর্ম্পকে একটু ব্যাখা করা যাক।


👉 কাম(Lust/Desires) --ইন্দ্রিয়তৃপ্তির জন্য অর্থাৎ ভোগ করার জন্য অত্যধিক সকল প্রকার বাসনায় হলো কাম। 

শাস্ত্রে বলছে

আত্মেন্দ্রিয়প্রীতি-বাঞ্চা- তারে বলি 'কাম'।

কৃষ্ণন্দ্রেয়প্রীতি- ইচ্ছা ধরে প্রেম নাম। 

অর্থাৎ নিজের ইন্দ্রিয়-তৃপ্তির বাসনাকে বলা হয় কাম, আর শ্রীকৃষ্ণের ইন্দ্রিয়ের প্রীতি সাধনের ইচ্ছাকে বলা হয় প্রেম।

কাম শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- সম্ভোগেচ্ছা, কামনা, বাসনা, ইচ্ছা, অভিলাষ, অনুরাগ ইত্যাদি। আবার কাম বলতে যে শুধু যৌন বাসনাকেই বোঝায় তা নয়, তদুপরি পরমেশ্বর ভগবানের প্রীতি বিধান ব্যতিত সমস্ত বাসনায় কাম। তবে সমস্ত কামের মধ্যে যৌন বাসনা সবচেয়ে ভয়ানক। কামকে চুলকানির সাথে তুলনা করা হয়েছে। যেমন শরীর এর কোন স্থানে চুলকানি হলে সেই স্থানে চুলকালে সেই প্রদাহ টা কমে না বরং বাড়ে৷ তাই বলা হচ্ছে ঘী ঢেলে যেমন আগুন নিভানো যায় না তেমনি কাম উপভোগের দ্বারা কখনো কাম কে নিবৃত্তি করা যায়না।

বলা হচ্ছে অন্য ৫টি রিপু কামেরই রুপাত্নর, অর্থাৎ কাম থেকেই অন্য সব রিপু গুলি আসে।

ভগবদগীতার ৩/৩৭-৪৩, ৫/২২, ১৬/২১ নং শ্লোক গুলিতে ভগবান এই কাম সসম্পর্কে বর্ননা করেছেন।


👉ক্রোধ(Anger) - কামনা পূর্তি না হলে এই কাম ই ক্রোধে পরিনত হয়। এই ক্রোধ হচ্ছে আমাদের একাদশ ইন্দ্রিয় মনের অতৃপ্তি বা অসন্তোষের আগ্রাসী ও বৈরীভাব সমন্বিত অনুভূতি।

মূলকথা হলো ক্রোধিত হলে আমরা নিজেদের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। এবং আমরা এর দাস হয়ে যায়। এভাবে ক্রোধ শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক, ব্যবসায়িক, প্রাতিষ্ঠানিক রাজনৈতিক, বা পারিবারিক প্রভৃতি নানা ভাবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই এই ক্রোধ বিপদের ই পূর্বাভাস।

ক্রোধিত ব্যক্তির মস্তিষ্কের ভাল-মন্দের বিচার ক্ষমতা হারিয়ে নির্বোধের ন্যায় আচরণ করে।

আগ্নেয়গিরিতে যেমন ফুল ফোটা সম্ভব নয় তেমনি হৃদয়ে ক্রোধাগ্নি প্রজ্জ্বলিত হলে তাতে কখনো আনন্দরুপ পুষ্প প্রষ্ফুটিত হওয়া সম্ভব নয়।

এই ক্রোধ সম্পর্কে গীতায় ২/৫৬,৬২,৬৩, ৫/২৬, ১৬/১,২,৩,২১ নং শ্লোক এ বর্ননা দিয়েছেন।


👉লোভ(Greediness):

এই কাম উত্তম ভোগ্য দ্রব্যাদি বা ধন ঐশ্বর্যের প্রতি অতিমাত্রায় আকৃষ্ট হলে তাকে লোভ বলা হয়।

অর্থাৎ প্রয়োজন এর চেয়ে বেশি চাওয়া বা অর্জন করার প্রবল ইচ্ছায় হলো ভোগ।

বর্তমানে সবাই ভাবছে বাড়ি, গাড়ি, আমার ভবিষ্যৎ, উত্তরসূরী, সোসাল স্ট্যাটাসের জন্য আমার কোটি কোটি টাকা প্রয়োজন। মানুষ বুঝতেই পারছেনা কোনটি লোভ আর কোনটি প্রয়োজন।

কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে লোভের ঘুর্নিপাকে মানুষ তার প্রয়োজন কে ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ করতে পারছেনা।

এমন অনেক ব্যক্তি আছে যারা স্বর্ণ লাভের আসায় রুপা হারায়। টাকার প্রশ্ন এলে লোভের বশবর্তী হয়ে মানুষ ধর্মকেই ভুলে যায়।

কিন্তু ভগবান পূর্ণ-হস্ত নয়, রিক্ত- হস্ত যার তাকেই ভগবান কৃপা করেন।।

গীতার ১৪/১৭, ১৬/২১, ১৭/২৫ নং শ্লোক গুলিতে ভগবান এই লোভ সর্ম্পকে বর্ননা করেছেন।


👉মোহ(Illusion): সংস্কৃত মোহ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে মূর্চ্ছা, অজ্ঞান, দুঃখ, অবিদ্যা। কামনা বা বিষয় যখন মানুষকে অনিত্য জড় বস্তুতে আসক্ত করে রাখে এবং স্বরুপ উপলব্ধি করতে দেয়না তাকে মোহ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যা জ্ঞানের বিরোধী, তাকে বলা হয় মোহ। প্রকৃত জ্ঞান হচ্ছে প্রতিটি জীবকে পরমেশ্বর ভগবানের দাস বলে জানতে পারা। কিন্তু নিজেকে সেরুপ চিন্তা করার পরিবর্তে জীব তার দেহকেই নিজের স্বরুপ বলে মনে করে এবং সে ভাবে যে, সে দাস নয়, সে হচ্ছে সকল কিছুর অধিপতি বা কর্তা। এটিই হচ্ছে মোহ।


👉মদ/অহংকার( Pride/Arrogance): মদ মানে দম্ভ, গর্ব, দর্প, অভিমান বা অহংকার। মোহ বা অজ্ঞানতার ফলে যখন ভাবে আমি ধনী, আমি মানী, আমি বিদ্বান, এরুপ অহমিকার রুপ নেই তাকে বলা হয় মদ(অহংকার)। 

শ্রীমদ্ভাগবতে(১০/১০/০৮) এ নারদ মুনি চার প্রকার মদের কথা উল্লেখ করেছেন, যথা ১) ঐশ্বর্য ২) শ্রী বা দেহের সৌন্দর্য। ৩) উচ্চকূলে জন্ম এবং ৪) বিদ্যা।

তো বলা হচ্ছে যারা এই চার প্রকার বিষয় নিয়ে গর্ব করবেন তারা কখনোই ভগবান কে লাভ করতে পারবেনা।।

গীতায় ১৬/৪,১৩,১৪,১৫. ১৮/২৬,৩৮ নং শ্লোক গুলিতে ভগবান মদ সর্ম্পকে বর্ননা দিয়েছেন।


👉মাৎসর্য (Jealousy/ Envy) : মাৎসর্য শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে হিংসা, বিদ্বেষ, ঈর্ষা বা পরশ্রীকাতরতা। অহংকার বশত কেউ যখন নিজ অপেক্ষা অন্যের অধিক ধন, মান, বিদ্যা, সৌন্দর্য দর্শনে স্বীয় ধন, মানাদির গর্বকে খর্ব বোধ করে, তখন চিত্তে যে এক প্রকার ক্ষোভ বা অসহিষ্ণুতা সৃষ্টি হয়, তাকে বলা হয় মাৎসর্য বা পরশ্রীকাতরতা। 

এই মাৎসর্য বিভিন্ন মাত্রায় জীবকে তাড়িত করে।

প্রাথমিক অবস্থায় অপরের উন্নতি বা ভালো কিছু সহ্য হয়না এবং মনে বিষন্ন আসে। এরপর অন্যের ক্ষতি কামনা করে এবং চরমে ব্যক্তি নিজেই যেকোনো প্রকারে, এমনকি নিজের ক্ষতি করে হলে ও অন্যের ক্ষতি সাধনের চেষ্টা করে তার প্রগতি রোধ করে।

এই মাৎসর্য সসর্ম্পকে ভগবান গীতায় ১২/১৩,১৪. ১৬/১৯. ১৮/৭১ নং শ্লোক গুলিতে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

সবাই কে অসংখ্য ধন্যবাদ এত কষ্ট করে পড়ার জন্য। 

ষড় রিপু থেকে মুক্ত হওয়ার কৌশল বা কিভাবে তা কৃষ্ণ সেবাই কাজে লাগানো যায় সে সর্ম্পকে শাস্ত্র থেকে পরবর্তী সংখ্যায় দেয়ার চেষ্টা করবো। 

আর এই পোস্ট থেকে কোন বিষয় টি আপনার Heart ♥ touch করেছে এবং ষড়রিপু থেকে আপাদত নিজের জীবন থেকে আস্তে আস্তে কি কি বাদ দেওয়ার জন্য ভাবছেন তা কমেন্ট এ জানাবেন।


হরেকৃষ্ণ...!!


#ষড়রিপু #sixripu #কাম #ক্রোধ #লোভ #gaurkatha #harekrishna

Post a Comment

0 Comments