🏵#শিক্ষণীয় : শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুন...

-----------------------------------------------------

🌻কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ যখন শেষ হলো, তখন অর্জুন তাঁর সখা কৃষ্ণকে বলছেন প্রভু আমায় গঙ্গা স্নানে নিয়ে যাবে ? আমি এতো এতো আত্মীয় স্বজনদের, আপন জনদেরকে মারলাম, এতো পাপ করলাম। শুনেছি গঙ্গা স্নানে পাপ মুক্ত হয়, আমায় কি সেথায় নিয়ে যাবে ? 


🌻কৃষ্ণ বললেন, পার্থ আমি তোমার রথের সারথী। তুমি আমায় যেখানে নিয়ে যেতে বলবে,  সেখানেই নিয়ে যাবো। গঙ্গা তীরে এসে কৃষ্ণ বললেন অর্জুন তুমি রথের উপর বসো, আমি এখনই আসছি। এই বলে রথ থেকে নেমে কৃষ্ণ একটু আড়াল হলেন।


🌻অর্জুনের আরো একটি মহৎ গুণ ছিল, তিনি পশু, পাখিদের ভাষা বুঝতে পারতেন। এমন সময় অর্জুন দেখলেন দুইজন লোক একটি মৃত দেহকে কাঁধে করে নিয়ে "বলো হরি হরিবোল, বলো হরি হরিবোল" বলতে বলতে শ্মশানে নিয়ে এলো। তারা মৃত দেহটাকে মাটিতে রেখে একটি চিতা সাজালো। 


🌻এমন সময় একজন অপরজনকে বলছে আগুন তো আনিনি এখন কি হবে ! এই বলে তারা চিন্তায় পরে গেলো, আগুন আনবো কোথা থেকে ? একজন আর এক জনকে বলে মৃত দেহের পাশে তুই থাক আমি আগুন নিয়ে আসি। আরেক জন বলে তুই থাক আমি নিয়ে আসি, কিন্তু তারা একা ভয়ে মড়ার কাছে কেউ থাকতে চাইছে না। তাই তারা দুজনেই আগুন আনতে বাড়ি চলে গেল।

🌻অর্জুন একটু দূর থেকে রথের উপর বসে বসে সব লক্ষ্য করছেন। এমন সময় একটি জীর্ণ-শীর্ণ রোগা শৃগাল মড়ার কাছে এসে মড়ার কান দুটোকে শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে, মড়ার মুখ শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে, মড়ার হাত দুটোকে, পা দুটোকে শুকছে আর মাথা নাড়াচ্ছে। শেষে মড়াটিকে ফেলে রেখে শৃগালটি চলে যাচ্ছে। 

🌻এটা দেখে অন্য একটি মোটা সোটা শৃগাল বললো কিরে মড়াটাকে না খেয়ে চলে যাচ্ছিস যে ? জীর্ণ শৃগালটি বললো খেতে হয় তুই খা। আমি অখাদ্য কুখাদ্য খাই না। মোটা শৃগালটি বললো, তুই এতো খাবার বিচার করিস বলেই তো তোর এই জীর্ণ শীর্ণ অবস্থা। চল মড়াটির পা দুটোকে খাই। রোগা শৃগালটি বললো ঐ চরণ দুটি কোনোদিন "হরি" মন্দিরে প্রবেশ করেনি। আমি খেতে পারবো না। 


🌻মোটা শৃগালটি বললো তাহলে ঐ মড়াটির হাত দুটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বললো, ঐ হাত দিয়ে কোনো দিন সাধু, গুরু বৈষ্ণবের সেবা দেয়নি। মোটা শৃগালটি বললো, চল তাহলে কান দুটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বলল, ঐ কান দুটি কোনো দিন হরিনাম শ্রবণ করেনি। মোটা শৃগালটি বলল, চল তাহলে জিহ্বাটিকে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বললো, ঐ জিহ্বা দিয়ে কোনোদিন হরিনাম উচ্চারণ করেনি।


🌻মোটা শৃগালটি তখন বললো, মড়াটির কিছুই যখন খাবি না, চল তাহলে ঐ রথের উপর যে মানুষটি বসে আছে তাকে গিয়ে খাই। জীর্ণ শৃগালটি বললো, ওতো আরো মূর্খ রে, যার চরণ হতে গঙ্গার উৎপত্তি তাঁকে কিনা বলে গঙ্গা স্নানে নিয়ে যেতে। ও তো আরো মূর্খ। ওকে কি খাওয়া যায় !?


🌻দুই শৃগালের কথা শুনে এতক্ষণে অর্জুনের চৈতন্য হলো। তিনি নিজের ভুল বুঝতে পারলেন। একটু পরে কৃষ্ণ এলে তাঁর চরণ দুটিকে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, প্রভু আমায় ক্ষমা করো। 


🌻ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে শেষ শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই লীলা করেছিলেন। আর এই লীলাই শ্রীকৃষ্ণকে সাহায্য করেছিলেন বাবা ভোলা মহেশ্বর, নন্দী ভৃঙ্গী আর যোগমায়া।

     শ্মশানে যিনি মড়াটি সেজে ছিলেন তিনি মহেশ্বর, মড়াটিকে যাঁরা নিয়ে এসেছিলেন তাঁরা নন্দী আর ভৃঙ্গী, আর দুই শৃগাল ছিল যোগমায়া।


#হরেকৃষ্ণ 🙏🙏❤️🌺 জয় #শ্রীকৃষ্ণ🙏🦚

Post a Comment

0 Comments