"ময়ূরের কৃষ্ণ লাভ ও রাধা নামের" মহিমা   


গোকুলে একটা খুব সুন্দর ময়ূর বাস করতো । 

সে প্রতিদিন শ্রীকৃষ্ণের ঘরের দ্বারে বসে গান গাইতো,

গানটি ছিল....

“মেরা কোয়ি না সাহারা বিনা তেরে গোপাল,

সাওয়ারিয়া মেরে, মনওয়া সাওয়ারিয়া মেরে।"


এই গানটির বাংলা অর্থ হচ্ছে :- 

তুমি ছাড়া আমার আর কোন সাথী নেই গোপাল, 

তুমি আমার একমাত্র প্রিয় সঙ্গী গোপাল, 

একমাত্র প্রিয় সঙ্গী।


গোপাল মানে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ প্রতিদিন তার সামনে দিয়ে গোষ্ঠে যায়, 

কিন্তু কখনো ময়ূরের দিকে ফিরেও তাকায় না। 

এভাবে একদিন- দুইদিন- এক বছর যায়...

ময়ূর জল পর্যন্ত গ্রহণ করেনা ৷


একদিন এক ময়না পাখি এসে ময়ূরকে দেখে খুব দুঃখিত হয় । ময়না পাখি ময়ূরকে বর্ষণায় যাওয়ার পরামর্শ দেয়। আর বলে সেখানে রাধারাণী অত্যন্ত কৃপালু। 


ময়ূর ময়না পাখির সাথে রাধারানীর বর্ষনায় যায় । ময়না পাখি বর্ষণায় পৌঁছেই "রাধে রাধে" বলতে থাকে । 

কিন্তু ময়ূর "গোপাল গোপাল" বলতে থাকে। 

আর "গোপাল" এই শব্দটি শ্রবণ মাত্রই রাধারাণী তাড়াতাড়ি করে ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। 


রাধারানী আদর করে ময়ূরকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। ময়ূর বলে : “রাধারাণী যে করুণার সাগর তা প্রমাণিত হলো। অথচ শ্রীকৃষ্ণকে দেখো। আমি এক বছর ধরে তাকে ডেকেই চলেছি । এই এক বছরে শ্রীকৃষ্ণ আমাকে একটু জলও পান করালো না"। 


তখন রাধারাণী বললেন : “ময়ূর তুমি এবার গোকুলে যাও। আর গোকুলে গিয়ে বলবে, “রাধে রাধে" ....


ময়ূর রাধারাণীর কথামতো গোকুলে ফিরে “রাধে রাধে" বলতে লাগলো। 

যেই "রাধারাণীর" নাম কৃষ্ণের কর্ণে প্রবেশ করলো সঙ্গে সঙ্গে কৃষ্ণ দৌঁড়ে এসে বললো : “হে ময়ূর , তুমি কোথা হতে এসেছো" ??


ময়ূর বললো : “আমি এখন বর্ষণা থেকে এসেছি। 

গত এক বছর ধরে আমি গোকুলে তোমায় কত ডেকেছি , তুমি একটি বারের জন্যও আমার ডাকে সাড়া দাও নি".... 


কৃষ্ণ দূঃখের সাথে বললো : “ক্ষমা করো ময়ূর। 

আমি সারাদিন "রাধানাম" স্মরণ করি। তাই তোমার ডাক আমার কর্ণে প্রবেশ করেনি। কিন্তু আজ তুমি "রাধা রাধা" বললে। আজ আমি তোমার প্রতি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। আজ আমি তোমার পুচ্ছ আমার চূড়ায় ধারণ করলাম। যে আমাকে রাধা নাম শোনায়, তার কাছে আমি বিক্রি হয়ে যাই, তাকে আমি আমার মস্তকে ধারণ করে রাখি।"


হরে কৃষ্ণ।।

Post a Comment

0 Comments