শ্রীফল== বিপত্র।


বৈকুন্ঠপুরীতে একদিন লক্ষ্মী- নারায়ন সিংহাসনে বসে আছেন।

এক সময়ে দেবী লক্ষ্মী,নারায়নকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো,কিন্তু আমার চেয়েও কি তোমার কোনও প্রিয় ভক্ত আছে?

    এ জগতে তোমার সবচেয়ে প্রিয় কে?

    দেবীর প্রশ্ন শুনে শ্রীহরি হাসলেন এবং বললেন,তুমি আমার প্রানপ্রিয়া, কিন্তু যে জন ভক্তিভরে সর্বদাই আমার কথা চিন্তা করে,সেইজনই আমার সর্বাপেক্ষা প্রিয়।

আমি তার হৃদয়ে সর্বদা বিরাজ করি।

যদি সে কখনও আমাকে ভুলেও যায়,তবুও আমি তাকে ত্যাগ করি না।


এমন ভক্তি একমাত্র শিবের আছে।

তাই শিবই আমার প্রিয়।

আর যিনি শিবের পূজা করেন,তিনি আমার কাছে শিবের চেয়েও প্রিয়। 

    যে শিবপূজা করে

না,তাকে আমি অতিশয় দূর্জন বলে মনে করি।তার ওপর সব সময় ক্রোধিত হয়ে থাকি।

সে জপ-তপ,পূজা যাই করুক না কেন, সে কোনও কিছুই ফল পাবে না।

          শিবকে পূজা করলেই মঙ্গল হবে, তা না হলেই বিপদ আসবে।

হরির মুখে লক্ষ্মী সব কথা শুনলেন, এবং তিনি নিজেকে অভাগিনী মনে করলেন।

বললেন,আমার জীবন বিফলে গেল।

আমি কখনই শিব কে পূজা করিনি।আমার বেঁচে থেকে লাভ কি?

শ্রীহরি লক্ষ্মীকে বললেন,দুঃখ করো না।এতে তোমার কোনও দোষ নেই।আমি তোমার কাছে কখনও শিবের মাহাত্ম কীর্তন করি নি,তাহলে তুমি জানবে কি করে?

            এবার থেকে রোজ তুমি শিবের পূজা করো।

যদি পদ্ম ফুল দিয়ে শিবের পূজা করো তাহলে শিব তুষ্ট হবেন।

শিব তুষ্ট হলে অনান্য দেবতারাও

তুষ্ট হবেন।শিবের অর্চনা করলে সবার অর্চনা করা হয়।


নারায়নের কথামত

লক্ষ্মীদেবী প্রত্যেক দিন শিব পূজা করা শুরু করলেন।

তিনি একশো পদ্ম ফুল দিয়ে একবছর শিবের পূজা করবেন স্থির করলেন।

দেবী নিজে প্রত্যেক দিন শতপদ্ম গুনে আনেন এবং তা গঙ্গাজলে ধুয়ে নিয়ে সেগুলি দিয়ে ভক্তিভরে পূজা করেন।

এইভাবে একদিন বছরের শেষ দিন এলো।

প্রত্যেকদিনের মতো দেবী শতপদ্ম ফুল তিনবার ধরে গুনে নিয়ে গঙ্গাজলে ধুয়ে পূজায় বসলেন।


লক্ষ্মীদেবীকে পরীক্ষা করার জন্য

ত্রিলোচন দু টি পদ্ম লুকিয়ে রাখলেন।

       এদিকে একটি একটি পদ্মফুল লক্ষ্মীদেবী শিব লিঙ্গের উপরে স্থাপন করে পূজা করছেন।

হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন দুটি পদ্ম ফুল কম পড়েছে।

তখন তিনি মনে মনে ভাবলেন,কে আমার পূজার ফুল চুরি করে নিল?

তাহলে কি আমি গোনবার সময় অন্যমনস্ক ছিলাম?

এখন আমার এই পূজা বিফল হবে।


এখন,দুটি পদ্ম কোথায় পাবো?

আর যদি পাওয়াও যায় তাহলে অন্যের দ্বারা আনাতে হবে।

প্রত্যেকদিন আমি নিজের হাতে ফুল তুলেছি,আমি ব্রতের শেষের দিন অন্যের দ্বারা চয়নিত

ফুল পূজায় ব্যবহার

করবো?আর, আমি যদি আসন ছেড়ে উঠি,তাতে পূজায় বিঘ্ন হবে।

      তাহলে এখন কি করা যায়?

          এসব ভাবতে ভাবতে লক্ষ্মীদেবীর একটা কথা মনে পড়ে গেল।

        একদিন শ্রীহরি বলেছিলেন,

লক্ষ্মীদেবী যেন একটি ফুল্ল সরোবর

আর এই সরোবরে তোমার দুটি স্তন যেন দুটি "কমল"।

শ্রীহরি কখনও মিথ্যা বলতে পারেন না।

কাজেই,এই দুটি স্তন পদ্মে আমি শিবের পূজা করব।

এই কথা ভেবে দেবী ছুরিকা হাতে তুলে নিলেন।

সেই দৃশ্য দেখে স্তনদ্বয় বলছে,দেবী,

তোমার অঙ্গে জন্মে আমাদের জীবন ধন্য হয়েছে,আবার যদি আমাদের দিয়ে শিবপূজা করো, তাহলেও আমাদের জীবন সার্থক হবে।

দেবী স্তনদ্বয়ের কথা বুঝতে পেরে বললেন,হরি আর শঙ্করের যেমন ভেদ নেই,তেমনি পদ্মের সঙ্গে তোমাদেরও কোনও পার্থক্য নেই।

এই বলে দেবী বাম হাত দিয়ে তার স্তন ধরলেন আর ডান হাতে ছুরি দিয়ে তা কেটেও ফেললেন এবং সেই স্তনটি শিব লিঙ্গের উপর দিলেন।

তিনি পঞ্চাশর মন্ত্র উচ্চারন করে পূজা   করলেন।তারপর অন্য স্তনটিও ছেদন করার জন্য যখন প্রস্তুত হচ্ছেন তখন অকস্মাৎ শিব দিব্যমূর্তি ধারন করে সেই সোনার লিঙ্গের ওপর দাঁড়িয়ে দেবীকে দর্শন দিলেন।

তাঁর সারা গায়ে ভষ্ম মাখা(এই ভষ্ম মাখার কাহিনীটি অন্য একদিন বলব)

কটিতটে ব্যাঘ্রচর্ম,

হাতে ত্রিশূল তুলে দেবী লক্ষ্মীকে বললেন,

দেবী, তুমি তোমার স্তন ছেদন করো না।তোমার অন্তরে যে আমার প্রতি ভক্তি আছে,তা আমি বুঝেছি,তোমার ছেদন করা স্তনটি আবার আগের মতো হয়ে যাবে, আর আমার লিঙ্গের উপর যে স্তন দিয়ে তুমি আজ আমার পূজা করেছো------

          তা বৃক্ষরূপে জন্মাবে।


তার নাম হবে শ্রীফল।


যতদিন ধরাতলে চন্দ্র-সূর্য উদয় হবে ততদিন ধরে গোটা জগৎবাসী তোমার গুনগান করবে।


শ্রীফল অর্থাৎ বিফলে আমার পূজা করলে আমি সন্তুষ্ট হব।

আমার স্বর্নলিঙ্গ তৈরী করে সোনা-রূপা,মুক্তো দ্বারা পূজা করলে আমি সন্তুষ্ট হব না।কিন্তু কেউ যদি বিল্বপত্র দিয়ে পূজা করে তাহলে আমি সন্তুষ্ট হবো।

       আমার লিঙ্গের ওপরে ভক্তিভরে কেউ যদি বিল্বপত্র দিয়ে পূজা করে, তাহলে তাকে আমি মোক্ষ প্রদান করবো।

দেবী শঙ্করের স্তব স্তুতি করলেন।

শিব তখন দেবীকে বললেন,তোমার পূজায় আমি তুষ্ট। এখন,তুমি কি বর চাও,বলো।

লক্ষ্মীদেবী শঙ্করকে বললেন,

ভাগ্যবলে আপনার দেখা পেলাম।আমার আর কোনও বরের প্রয়োজন নেই।

আপনার কাছে একটাই নিবেদন,

সারাজীবন আপনাতে যেন আমার ভক্তি থাকে।

শিব বললেন,

তাই হবে।


শিব লক্ষ্মীদেবীর কাটা স্তনটি নিয়ে ত্রিশূলের দ্বারা মাটিতে পুঁতে দিলেন,তারপর সেখান থেকে অন্তর্হিত হলেন।


স্তন পদ্মবীজ ধীরে ধীরে অঙ্কুরিত হলো।

সেটি ক্রমে বৃক্ষ রূপ ধারন করলো।

অপূর্ব সুন্দর তার পাতা।


একটি বৃন্তে তিনটি পাতা।

যেন ত্রিশূল।


এই বৃক্ষটি পূর্নতা লাভ করার পর, বৃক্ষটি দেখবার জন্য ব্রহ্মা,-বিষ্ণু,মহেশ্বর এবং সকল দেবগন সেখানে এলেন।

সকলে সেই বিল্বপত্রকে প্রনাম করলেন।

নারায়ন সকলকে বললেন,


এই বি-পত্রের উপরের পত্রটি স্বয়ং মহাদেব,

বাম পত্রে ব্রহ্মা।

দক্ষিন  পত্রে হবে আমার অধিষ্ঠান।


এই বিপত্রে কেউ পা দিলে তার মৃত্যু নিশ্চিত।

গনেশ আর সূর্যের পূজা এই পত্র দিয়ে করা যাবে না।

যেখানে এই বৃক্ষ থাকবে তা বারানসীর সমান পূন্যস্থান হবে।

সেখানে মহেশ্বরের সঙ্গে উমা বিরাজ করবেন।

বিল্বপত্র দিয়ে পূজা করলে লক্ষ ধেনু দানের পূন্য পাওয়া যায়।

বিল্বপত্র কখনও ছেদন করা যাবে না


চৈত্র থেকে চার মাস

বিল্বপত্র এবং জল দান করলে পিতৃকূল পরিতৃপ্ত হয়।


(শিব পুরান)

ছবি সংগৃহীত।


~••🕉️শিব চতুর্দশী বা শিব রাত্রি ব্রত ও ব্রতের ফল কি:-


 শিব চতুর্দশী বা শিব রাত্রিঃ অষ্টাদশ পুরান শাস্ত্রের মধ্যে শিব পুরাণ শাস্ত্রে বর্ণিত আছে,ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিতে এই শিব চতুর্দশী বা শিব রাত্রি অনুষ্ঠিত হয়। 


এই শিব চতুর্দশী বা শিব রাত্রি ব্রতের মাহাত্ম্য:-

 এই রাত্রেই শিব বিষ্ণুর নাভীপদ্ম থেকে সৃষ্ট অসংখ্য ব্রক্ষান্ডের প্রতিটি ব্রক্ষান্ডের নিদিষ্ট সময় অতিক্রান্ত হলে সে ব্রক্ষান্ডকে প্রলয় সাধনের জন্য এক মহা তাণ্ডব নৃত্য করেন। আবার এই রাত্রেই শিব ও পার্বতী দেবীর শুভ বিবাহ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।আবার এই মহাশিব রাত্রিতে জীবের মঙ্গল বিধানের জন্য মহাদেব শিব তার প্রতীক শিবলিঙ্গ রূপে প্রকাশিত হয়েছিলেন।।তাই এ দিনটি মহাদেব শিবের অত্যন্ত প্রিয়।


~•••🕉️শিব চতুর্দশী ব্রতের ফল:- 

শিব পুরাণ অনুসারে, বহুকাল আগে বারাণসী তথা কাশীধামে এক নিষ্ঠুর ব্যাধ বাস করত। সে দিনরাত শুধু জীবহত্যা করে বেড়াত। একদিন ব্যাধ শিকার করতে গিয়ে অনেক পশু পাখি শিকার করে।


সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই সে বাড়ির দিকে রওনা হয়। কিন্তু কিছুদূর যেতেই পথে রাত্রি হয়ে যায়। ফলে সে জঙ্গলে পথ হারিয়ে রাতে হিংস্র জন্তুর ভয়ে এক গাছের উপর আশ্রয় নেয় ।


ব্যাধ যে গাছে আশ্রয় নিয়েছিল সেই গাছটি ছিল বেলগাছ। আর সেই গাছের নিচে ছিল একটি শিবলিঙ্গ। ব্যাধ গাছে নড়ে-চড়ে বসার সময় শিশির জলে ভেজা কয়েকটি বেলপাতা খসে পড়ে ঐ শিবলিঙ্গের মাথার উপর। সেদিন ছিল শিবচতুর্দশী অর্থাৎ মহাশিবরাত্রি।


আর ব্যাধও ছিল উপবাসী। তার ফেলা বেলপাতাগুলো শিবলিঙ্গের মাথায় পড়ে এর ফলে তার শিবচতুর্দশী ব্রতের ফল লাভ হয় তার অজান্তেই। পরদিন ব্যাধ সকালে বাড়ি ফিরে আসে। সে রাতে বাড়ি না ফেরায় সবাই তার জন্য ভাবছিল।


ব্যাধ ফিরে আসতে তাকে তার বৌ খেতে দিল। এমন সময় একজন অতিথি বাড়িতে এলো। ব্যাধ কি ভেবে তার নিজের খাবারগুলি অতিথিকে দিল। এতে তার ব্রতের পারণ ফল লাভ হলো।


এর কিছুদিন পরে সেই ব্যাধ মারা গেলে। যমদূতরা তাকে নিতে আসে, এমন সময় সেখানে পৌঁছয় শিবের দূতেরা। কে ব্যাধকে নিয়ে যাবে তাই নিয়ে দুই দলে যুদ্ধ বেধে যায়। যমদূতেরা যুদ্ধে হেরে গেলে শিবদূতরা ব্যাধকে কৈলাসে নিয়ে যায়।


যুদ্ধে হেরে গিয়েও যমদূতেরা তার পিছনে পিছনে সেখানে ধাওয়া করে। কৈলাসের দ্বারে নন্দী পাহারায় ছিল। সে ব্যাধের শিব রাত্রির কথা বললে সব শুনে যমদূতেরা গিয়ে যমকে সব কথা বলে।


যমরাজ শুনে বললেন ‘হ্যাঁ, যে শিব বা বিষ্ণুর ভক্ত কিংবা যে শিবচতুর্দশী ব্রত পালন করে আর যে বারানসী ধামে মরে, তার উপর যমের কোনো অধিকার থাকে না। তার মুক্তিলাভ ঘটে। এইভাবে মর্ত্যলোকে শিবচতুর্দশী ব্রতের প্রচার ঘটে।’


  👉 এই শিব চতুর্দশী দিনে,সমস্ত ভক্তরা উপবাস পালন করে "ওঁ নমোঃ শিবায় " এই মন্ত্র দ্বারা বিল্বপত্র এবং পুষ্প দিয়ে মহাদেব শিবের পূজা করবেন। এবং একই মন্ত্র দ্বারা শিবলিঙ্গে দুধ বা ডাব বা গঙ্গা জল দিয়ে অভিষেক করাবেন।এবং পরে শিবের উদ্দ্যেশে মন্ত্র উচ্চারণ, প্রার্থনা নিবেদন এবং মাথা নত করে প্রনাম করবেন।হরে কৃষ্ণ। 

নিচে দেওয়া হলো শিবের ১০৮ টি নাম ও তার অর্থ:-

________________________________

~•••🕉️পরমেশ্বর ভগবান শিবের একাধিক নামের মধ্যে ১০৮টি নামের বিশেষ_গুরুত্ব_রয়েছে। শ্রাবণ মাস, শ্রাবণ সোমবার, প্রদোষ, মাসিক শিবরাত্রি, মহা শিবরাত্রি অথবা অন্যান্য সাধারণ সোমবারে এই নাম স্মরণ করলে সহজেই পরমেশ্বর শিবের কৃপা লাভ করা যায়। শিবরাত্রি ও শ্রাবণ মাসে শিবকে প্রসন্ন করার জন্য, এটি একটি সহজ-সরল উপায়।। 


১) শিব- কল্যাণ স্বরূপ অনাদি অনন্ত পরমব্রহ্ম। 

২) মহেশ্বর- মায়ার অধীশ্বর।

৩) শম্ভু- আনন্দ স্বরূপ যার।

৪) পিনাকী- পিনাক অর্থাৎ ধনুক ধারণ করেছেন যিনি।

৫) শশীশেখর- মস্তকে চাঁদকে ধারণ করেছেন যিনি।

৬) বামদেব- অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যার।

৭) বিরূপাক্ষ- বিচিত্র চোখ যার (শিব ত্রিনেত্রের অধিকারী)।

৮) কপর্দী- জটাধারণ করেছেন যিনি।

৯) নীললোহিত- নীল ও লাল বর্ণ যার।

১০) শংকর- সবার কল্যাণ করেন যিনি।

১১) শূলপাণি- হাতে ত্রিশূল যার।

১২) খটবাঙ্গি- খাটিয়ায় একটি পা রাখেন যিনি।

১৪) বিষ্ণুবল্লভ- বিষ্ণুর অতিপ্রিয়।

১৫) শিপিবিষ্ট- সিতুহায়ে প্রবেশ করেন যিনি।

১৫) অম্বিকানাথ- দেবী দূর্গার স্বামী।

১৬) শ্রীকণ্ঠ- সুন্দর কণ্ঠ যার।

১৭) ভক্তবৎসল- ভক্তদের অত্যন্ত স্নেহ করেন যিনি।

১৮) ভব- সংসার রূপে প্রকট হন যিনি।

১৯) শর্ব- কষ্ট নষ্ট করেন যিনি।

২০) ত্রিলোকেশ- তিন লোকের যিনি প্রভু।

২১) শিতিকণ্ঠ- সাদা কণ্ঠ যার।

২২) শিবাপ্রিয়- পার্বতীর প্রিয়।

২৩) উগ্র- অত্যন্ত উগ্র রূপ যার।

২৪) কপালী- কপাল ধারণ করেন যিনি

২৫) কামারী- কামদেবের শত্রু, অন্ধকারকে পরাজিত করেছেন যিনি।

২৬) সুরসুদন- দৈত্য অন্ধককে যিনি বধ করেছেন।

২৭) গঙ্গাধর- যিনি গঙ্গাকে ধারণ করেছেন।

২৮) ললাটাক্ষ- ললাটে চোখ যার।

২৯) মহাকাল- কালেরও কাল যিনি।

৩০) কৃপানিধি- করুণার সাগর।

৩১) ভীম- ভয়ঙ্কর রূপ যার।

৩২) পরশুহস্ত- হাতে পরশু ধারণ করেছেন যিনি।

৩৩) মৃগপাণি- হাতে যিনি হরিণ ধারণ করেছেন।

৩৪) জটাধর- জটা রেখেছেন যিনি।

৩৫) কৈলাসবাসী- কৈলাসের নিবাসী।

৩৬) কবচী- কবচ ধারণ করেছেন যিনি।

৩৭) কঠোর- অত্যন্ত মজবুত দেহ যার।

৩৮) ত্রিপুরান্তক- ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছেন যিনি।

৩৯) বৃষাঙ্ক- বৃষ চিহ্নের ধ্বজা রয়েছে যার।

৪০) বৃষভারূঢ়- বৃষের উপরে সওয়ার যিনি।

৪১) ভস্মোদ্ধুলিতবিগ্রহ- সারা শরীরে ভস্ম লাগান যিনি।

৪২) সামপ্রিয়- সামগানের প্রেমী (সামবেদ যার গুনগান করে)।

৪৩) স্বরময়ী- সাতটি স্বরে যার নিবাস।

৪৪) ত্রয়ীমূর্তি- বেদরূপী বিগ্রহ করেন যিনি।

৪৫) অনীশ্বর- যিনি স্বয়ং সকলের প্রভু।

৪৬) সর্বজ্ঞ- যিনি সব কিছু জানেন।

৪৭) পরমাত্মা- সব আত্মায় সর্বোচ্চ।

৪৮) সোমসূর্যাগ্নিলোচন- চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিরূপী চোখ যার।

৪৯) হবি- আহূতি রূপী দ্রব্যের মতো।

৫০) যজ্ঞময়- যজ্ঞস্বরূপ যিনি।

৫১) সোম- উমা-সহ রূপ যার।

৫২) পঞ্চবক্ত্র- পঞ্চ মুখ যার

৫৩) সদাশিব- নিত্য কল্যাণ রূপী।

৫৪) বিশ্বেশ্বর- সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর।

৫৫) বীরভদ্র- বীর হওয়া সত্ত্বেও শান্ত স্বরূপ যার।

৫৬) গণনাথ- গণদের স্বামী।

৫৭) প্রজাপতি- প্রজার পালনকর্তা।

৫৮) হিরণ্যরেতা- স্বর্ণ তেজ যার।

৫৯) দুর্ধর্ষ- কারও চাপের কাছে নত হন না যিনি।

৬০) গিরীশ- পর্বতের স্বামী।

৬১) গিরীশ্বর- কৈলাস পর্বতে শয়ন করেন যিনি।

৬২) অনঘ- পাপরহিত।

৬৩) ভুজঙ্গভূষণ- সাপের আভুষণ ধারণ করেন যিনি।

৬৪) ভর্গ- পাপনাশক।

৬৫) গিরিধন্বা- মেরু পর্বতকে যিনি ধনুক বানিয়েছেন।

৬৬) গিরিপ্রিয়- পর্বত প্রেমী।

৬৭) কৃত্তিবাসা- গজচর্ম পরিধান করেছেন যিনি।

৬৮) পুরারাতি- পুরদের বিনাশ করেছেন যিনি।

৬৯) ভগবান- সর্বসমর্থ ঐশ্বর্য সম্পন্ন।

৭০) প্রমথাধিপ- প্রমথগণের অধিপতি।

৭১) মৃত্যুঞ্জয়- মৃত্যুকে জয় করেছেন যিনি।

৭২) সূক্ষ্মতনু- সূক্ষ্ম শরীর যার।

৭৩) জগদ্ব্যাপী- জগতে ব্যাপ্ত বাস যার।

৭৪) জগদ্গুরু- জগতের গুরু।

৭৫) ব্যোমকেশ- আকাশের মতো চুল যার।

৭৬) মহাসেনজনক- কার্তিকেয়র পিতা।

৭৭) চারুবিক্রম- সুন্দর পরাক্রম যার।

৭৮) রুদ্র- ভয়ানক।

৭৯) ভূতপতি- ভূতপ্রেত বা পঞ্চভূতের অধিপতি।

৮০) স্থাণু- স্পন্দন বিহিন কূটস্থ রূপ যার।

৮১) অহির্বুধ্ন্য- কুণ্ডলিনী ধারণ করেছেন যিনি।

৮২) দিগম্বর- নগ্ন, আকাশরূপী বস্ত্র ধারণকারী।

৮৩) অষ্টমূর্তি- আটটি রূপ আছে যার।

৮৪) অনেকাত্মা- অনেক রূপ ধারণ করতে পারেন যিনি।

৮৫) সাত্বিক- সত্ব গুণ যার।

৮৬) শুদ্ধবিগ্রহ- শুদ্ধমূর্তি যার।

৮৭) শাশ্বত- নিত্য থাকেন যিনি।

৮৮) খণ্ডপরশু- ভাঙা পরশু ধারণ করেছেন যিনি।

৮৯) অজ- জন্ম রহিত।

৯০) পাশবিমোচন- বন্ধন থেকে মুক্ত করেন যিনি।

৯১) মৃড- সুখস্বরূপ যার।

৯২) পশুপতি- পশুদের অধিপতি।

৯৩) দেব- স্বয়ং প্রকাশরূপ যিনি।

৯৪) মহাদেব- দেবতাদেরও দেবতা।

৯৫) অব্যয়- খরচ হওয়া সত্ত্বেও ঘাটতি হয় না যার।

৯৬) হরি- বিষ্ণুস্বরূপ।

৯৭) পূষদন্তভিৎ- পূষার দন্ত যিনি উপড়ে ফেলেছিলেন।

৯৮) অব্যগ্র- কখনও ব্যথিত হন না যিনি।

৯৯) দক্ষাধ্বরহর- দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করেছিলেন যিনি।

১০০) হর- পাপ ও তাপ হরণ করেন যিনি।

১০১) ভগনেত্রভিদ্- ভগ দেবতার চোখ নষ্ট করেছিলেন যিনি।

১০২) অব্যক্ত- ইন্দ্রিয়ের সামনে প্রকট হন না যিনি।

১০৩) সহস্রাক্ষ- হাজারটি চোখ যার।

১০৪) সহস্রপাদ- হাজার পদ বিশিষ্ট।

১০৫) অপবর্গপ্রদ- কৈবল্য মোক্ষ দান করেন যিনি।

১০৬) অনন্ত- দেশকালবস্তু রূপী পরিছেদ রহিত।

১০৭) তারক- সবার তারণ করেন যিনি।

১০৮) পরমেশ্বর- সর্বাধিক পরম ঈশ্বর।

Post a Comment

0 Comments