এক জঙ্গলের পাশে দুই কাঠুরে বাস করতো- পিটার এবং জন। তাদের মধ্যে প্রায়ই তর্ক হতো - কে বেশি কাঠ কাটতে পারে?


তো একদিন তারা একটা প্রতিযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিল যাতে পরিষ্কার হয়ে যায় কে সবথেকে বেশি কাঠ কাটতে পারে। প্রতিযোগিতার নিয়ম - সকাল ৮ থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত যে বেশি কাটবে, সেই জয়ী।


পরের দিন সকালে, তারা জঙ্গলের মধ্যে তাদের অবস্থান নিল এবং কাট কাঠতে শুরু করলো যতটা দ্রুত সম্ভব। এক ঘন্টা পর, পিটার হঠাৎ কাঠ কাঁটা বন্ধ করলো। জন পিটারের কাঠ কাটার শব্দ না পেয়ে মনে মনে খুশি হলো এবং ভাবলো সে মনে হয় ইতিমধ্যে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।


প্রায়  ১৫ মিনিট পর, আবার পিটারের কাঠ কাটার শব্দ আসতে লাগলো এবং সারাদিন এক ঘন্টা পর পর এরকম প্রায় ১৫ মিনিটের জন্য পিটারের কোনো সাড়াশব্দ পাওয়া যেত না। আর এইদিকে জন, প্রচন্ড খুশি মনে একটানা কাঠ কেটে যেতে লাগলো এবং সে নিশ্চিন্ত ছিল, অব্যশই আমি অনেকটা বেশি কাট কেটেছি।


সারাদিন শেষে যখন তারা এক জায়গায় তাদের কাঠগুলো এনে জড়ো করলো, জন অবাক হয়ে দেখলো, পিটার তার থেকে অনেকগুলো বেশি কাঠ কেটেছে।


সে চিৎকার করে উঠলো, "এটা কিভাবে সম্ভব? আমার থেকে কিভাবে তুমি বেশি কাঠ কাটতে পারো? তুমি সারাদিন প্রতি ঘন্টায় ১৫ মিনিট করে বিশ্রাম নিয়েছো আর আমি সারাদিন কাঠ কেটেছি।"


পিটার হাসলো এবং উত্তর দিলোঃ "আমি ১৫ মিনিট বিশ্রাম নেয়ার পাশাপাশি আমার কুঠারে ধার দিয়েছি। আর যার কারণেই আমি বেশি কাঠ কাটতে পেরেছি।"


আমাদের মধ্যেও সবাই অনেক অনেক ব্যস্ত। আমরা এতটাই ব্যস্ত যে আমাদের নিজেদের জন্য সময় নেই। এতে আমাদের কুঠার মানে মস্তিষ্ক কিন্তু দিন দিন ধার কমে যাচ্ছে।

মাঝে মাঝে একটু ব্রেক নিয়ে, নতুন কিছু শেখা, নতুন কিছু জানার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক ধারালো হয়।


আমাদেরকে আরেকটু বেশি কর্মঠ করতে, আরো বেশি সচল থাকতে - আমরা এই কাজগুলো করতে পারি।


শারীরিকঃ স্বাস্থ্যসম্মত খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ।

সামাজিকঃ ভালো সামাজিক জীবন, সত্যিকারের সম্পর্ক।

মানসিকঃ নতুন কিছু শেখা, বইপড়া এবং লেখালেখি করা।

আধ্যাত্মিকঃ ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলা, পালন করা।

Post a Comment

0 Comments