বৈষ্ণবসেবা দিলে কী হয় ⁉️


তুঙ্গভদ্রা নদীর ধারে একজন লোক ছিলেন তার নাম ছিল কটাল।


এই কটাল তেমন ভালো মানুষ ছিলনা।


দুনিয়ায় এমন কোন পাপ কাজ ছিলনা যা সে করেনি,অনেক পাপি ছিল সে।লিখতে লিখতে যমরাজের খাতার পৃষ্ঠা আর বাকি রইলো না।


একদিন রাতে প্রচুর ঝড় বৃষ্টি ঐদিন কটাল আর ঘর থেকে বের হতে পারে নাই,ঘরেই শুয়ে ছিল।তখন এক বৈষ্ণব ঝড় বৃষ্টির মধ্য দিয়ে কটালের ঘরের দরজায় এসে আশ্রয় নেয়।


কটাল বুঝতে পেরে দরজা খুলে দেখে এক ব্যক্তি দরজায় দাড়িঁয়ে আছে।


তখনও কটালের ভিতর ঐ ধরণের কোন জ্ঞান ছিলনা।যে কে সাধু কে বৈষ্ণব কে সাধারণ মানুষ।কটালের মনে হঠাৎ কিসের একটি দয়া মায়া হলো।


তখন কটাল কী করলো?

ঐ লোকটাকে ডেকে ঘরে এনে চেয়ারে বসালো।


তারপর কটাল আবার ঘুমিয়ে পড়লো।যখন ঝড় বৃষ্টি থেমে গেলো বৈষ্ণব চলে গেলো।


তার কিছুদিন পর কটালের মৃত্যু হলো।


মৃত্যুর পর যখন যমালয়ে গেলেন, যমরাজ চিত্রগুপ্তকে বললো দেখতো এই ব্যক্তির লিষ্টে কি লেখা আছে।


চিত্রগুপ্ত খোজে দেখে সব জায়গায় লাল আর লাল কোথাও কোন ফাকাঁ নাই।


হঠাৎ দেখতে পায়,একবারে শেষের পৃষ্ঠায় একটু লেখা আছে নীল কালি দিয়ে।চিত্রগুপ্ত তখন যমরাজকে বলে,এইতো পেয়েছি একটা নীল দাগ।


যমরাজ তখন কটালকে বললো তুমি একবার মানব জনম পাবে,আর বাকি সব নরক।তা তুমি আগে কোনটা নিবে মানব জনম নাকি নরক?


কারণ তুমি একবার নরকে গেলে কবে যে, মানব রূপ পাবে সেটা আমিও ঠিক বলতে পারছিনা।


তখন কটাল যমরাজকে বললো আমি কী এমন কাজ করছি যার কারণে আমায় মানব রূপ পেতে হচ্ছে?


তখন যমরাজ বললেন,এক ঝড়বৃষ্টির রাতে এক বৈষ্ণব তোমার ঘরের দরজায় এসে দাড়িয়েছিল,তুমি তাকে ঘরের ভিতরে এনে চেয়ারে বসিয়েছিলে।


তার জন্য তুমি মানব জনম পাবে।তখন কটাল বললো আমি তো তাকে খেতে দেইনি,আর খাওয়া তো দুরের কথা আমি তো তাকে পাখার একটা হাওয়াও করিনি।


কটাল বললো তাহলে সুযোগ যখন পেয়েছি,আগে মানব জন্ম নিবো।


কিন্তু আমার একটা আবদার আছে।


যমরাজ বললো কী?

আমায় এই আর্শীবাদ করুন,আমি জন্ম নেওয়ার পরে যেনো আমার ভিতর আত্মজ্ঞান প্রকাশ পায়,যেনো আমি বৈষ্ণব দেখে কোন নিন্দা না করি,বৈষ্ণবদের সম্মানের সহিত যেনো ভক্তিভরে সেবা করতে পারি।


যমরাজ তখন কটালকে তথাস্তু দিয়ে দিলেন,এই দেখুন যমরাজ ছিলেন চারজন মহাজনের মধ্যে একজন,তারঁ কথার অনেক মূল্য আছে।


আর কটাল যেহেতু বিষ্ণুভক্ত সেবা দিতে চাইছে,এখানে কোন বাধাঁ দিতে পারেনা।


কৃষ্ণ বলেছেন যদি কেউ ঘরে বসে মনে মনে আমার নাম জপ করে,আমি তৎক্ষণাৎ তার হৃদয়ে বাস করি।


আবার দেখেন কেউ যদি মৃত্যু সময় বিষ্ণুদূতের চরণে নমস্কার জানাতে পারেন,তার আয়ু তৎক্ষণাৎ বৃদ্ধি পায়।


কিন্তু এই সুযোগ কে পাবে,পেয়েছিল একমাত্র অজামিল।


পৃথিবীতে একবারই বিষ্ণুদূত আর যমদূতের মাঝে মারপিট হয়,অজামিলকে নিয়ে।


আবার কটাল যখন জন্ম নিলেন সেখানে সে বৈষ্ণব সেবা শুরু করলেন,আর কটাল যতবার বৈষ্ণব সেবা দেয়,ঠিক ততবার একটা একটা করে তার পাপ ক্ষয় হয়।


ক্ষয় হতে হতে একদিন দেখা গেলো,তার সব পাপ ক্ষয় হয়ে গেছে।


এরপর তার পূণ্যফল শুরু হলো।


শেষে এত পূণ্যফল হলো,কটালের মৃত্যুর পর বিষ্ণুদূতেরা রথ এনে কটালকে সম্মানের সাথে বিষ্ণুলোকে নিয়ে গেলো।


🙏🙏

Post a Comment

0 Comments