ওড়ন ষষ্ঠী

***ওড়ন ষষ্ঠী***


আজ ওড়ন ষষ্ঠীর পূণ্য তিথি। এই দিন থেকে ভগবান জগন্নাথ শীতের পোশাক পরতে শুরু করেন, এবং জগন্নাথপুরীতে এই দিন থেকে জগন্নাথকে নববস্ত্র পরিধান করাবার রীতি রয়েছে। আমরা সাধারণত নতুন বস্ত্র ধৌত করি তারপর পরিধান করি, কেননা তাতে মাড় দেয়া থাকে, কিন্তু জগন্নাথ পুরীতে রীতিটি হল, তাঁরা মাড় দেওয়া বস্ত্রই পরিধান করায়। তাই পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি এরকম দেখে জগন্নাথের সেবকদের সমালোচনা করতে শুরু করলেন। কীভাবে আপনারা এই মাড়সহ নতুন বস্ত্র জগন্নাথকে পরিধান করাচ্ছেন? এভাবে তিনি তিরস্কার করছিলেন। 
সেই রাতে ভগবান জগন্নাথ এবং বলরাম পুণ্ডরীক বিদ্যানিধিকে দর্শন দিলেন এবং তাঁরা তাঁকে এই বলে তিরস্কার করলেন যে তুমি আমার সেবকদের সমালোচনা করছ কেন? তাঁরা যা করছে তাঁদের নিয়ম অনুযায়ী এবং তোমার আমার  সেবকদের বিরক্ত করার কোন অধিকার নাই, এই বলে তাঁরা তাঁকে চড় মারতে শুরু করলেন। তাঁর মুখ ফুলে গেল। তিনি যখন স্বপ্ন থেকে জেগে উঠলেন, তাঁর মুখমণ্ডল তখনো ফোলা ছিল৷ তিনি তাই এই ফোলা গালে বাইরে যেতে বিব্রতবোধ করছিলেন। এটি তাই এক বিশেষ দিন।

মায়াপুরে জগন্নাথ, বলদেব এবং সুভদ্রা মহারাণীর জন্যে নতুন বস্ত্রের আয়োজন করা হয় এবং আশা করি পৃথিবীর সর্বত্র ভক্তরা ভগবানের জন্যে ওলের বস্ত্রের ব্যাবস্থা করবেন। বিগ্রহ হল ভগবানের অবতার। তাঁদেরকে অর্চাবতার বলা হয় কেননা আমরা ভগবানের চিন্ময় রূপ দর্শন করার যোগ্য নই, তিনি তাই অর্চাবিগ্রহরূপে আমাদের কাছে আসেন এবং আমরা তাঁকে দেখতে পাই, সেবা করতে পারি৷ প্রত্যেক বিগ্রহের সাথে কিছু রীতি বিজড়িত। জগন্নাথপুরীর রীতি হল ওড়ন ষষ্ঠীতে তাঁরা জগন্নাথকে গরম কাপড় পরিধান করায়। যতটা আমার মনে পড়ছে, তাঁরা বিশেষ ভোগও নিবেদন করে। এটি তাই এক মনে রাখার মত দিন! "

শ্রীল জয়পতাকা স্বামী গুরুমহারাজ।

Post a Comment

0 Comments