ভালো এবং খারাপ গ্রাম
শ্রীল প্রভুপাদের গল্পে উপদেশ
একদা এক সময় শিখ প্রবক্তা গুরু নানক শাহ্ তার এক শিষ্যের সাথে ভ্রমণ করতে ছিলেন। তারা একটি গ্রামে গেলো, সেখানের লোকজন আতিথ্য পরায়ন ছিল না। একটি বাড়িতে কিছু চাইতে গেলো, বাড়ির মালিক বলল, তোমরা অন্যগৃহে যাও, আমাদের কিছুই নেই। তারা আরেক গৃহে গেলো। সেখানেও একই কথা, দয়া করে এখান থেকে যাও, আমাদের কোন কিছুই নেই। পরিশ্রান্ত, ক্লান্ত গুরু এবং শিষ্য একটি গাছের নিচে বসল। শিষ্য বলল গুরুজী এই গ্রামের লোকজন এতই গরীব যে, সাধুদের দেওয়ার মতো তাদের কাছে কিছুই নেই। গুরু নানক শাহ্ বললেন “এই গ্রামটি দীর্ঘজীবী হউক”। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে তারা অন্য গ্রামে গেলো। এখানকার গ্রামবাসীরা তাদের অতিথিদের প্রতি অত্যন্ত সদয় এবং শিষ্টাচার সম্মত। প্রত্যেক গৃহের লোকজন বলতে লাগল, কৃপাপূর্বক ভিতরে আসুন, আপনাদের উপস্থিতি আমাদেরকে ধন্য করেছে। ও ঋষি! ও পবিত্র আত্মা! কৃপাপূর্বক এই খাবারটুকু গ্রহণ করে আপনাদের ক্ষুধা নিবারণ করুন এবং আমাদের আশির্বাদ করুন। ও সাধু মহাত্মা! কৃপা করে এই ক্ষুদ্র নিবেদন গ্রহণ করুন। এইভাবে গ্রামের লোকজন অত্যন্ত আনন্দের সাথে গুরুদেব নানককে দান করেছিল। এরপর গুরু নানক তার শিষ্যকে বলতে লাগলেন অতিশ্রীঘ্রই গ্রামটি ধ্বংস হোক এবং এই সকল লোকজন সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করুক। তার শিষ্য অবাক হয়ে গুরুজীকে জিজ্ঞাসা করেছে, গুরুজী আপনি যখন খারাপ গ্রাম ত্যাগ করলেন আপনি সেটাকে আশীর্বাদ করলেন। আর আপনি এই গ্রাম ত্যাগ করার সময় আপনি বললেন, এটি ধ্বংস হোক। এটি কী দুঃখজনক নয়? গুরু নানক বলতে লাগলেন, মোটেই না বৎস, মোটেই না! যখন আমি, এই ভালো গ্রামটি ত্যাগ করেছিলাম আমি চেয়েছিলাম এখানকার অধিবাসীরা প্রেম ও জ্ঞানের ছায়া হিসেবে সারা পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করবে। যখন আমি খারাপটিকে আশীর্বাদ করেছিলাম এর অর্থ এই যে, এটি চিরতরে সংকীর্ণতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। শিষ্য উপলব্ধি করতে পারলেন যে, তার গুরুদেব কত মহান এবং কত সুন্দর শিক্ষা পাওয়ায় আমি অনেক সৌভাগ্যবান।
। হিতোপদেশ।
স্থান, কাল ও পাত্র ভেদে শুদ্ধ ভক্তরা বুঝতে পারেন কোথায় কি ধরনের আশীর্বাদ করা উচিত।
0 Comments