ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি অগাথ বিশ্বাস রাখবেন
বনের ভেতর, এক হরিনীর সময় হলো সন্তান জন্ম দেয়ার। তাই সে বনের ধারে যেয়ে নদীর পাশে ঘাসজমিতে সুন্দর একটি জায়গা খুজে বের করে নিলো সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য। সময় কিছু পার হলো, তার প্রসব বেদনাও উঠলো।
কিন্তুু বিধির বিধান। এসময় হরিনীটির চারপাশে শুরু হলো বিপদ।
হরিনীটি যখন উপরে তাকালো, দেখলো ঘন মেঘে আকাশ ছেয়ে যাচ্ছে। সে যখন জংঙ্গলের দিকে তাকালো, দেখলো ঘন জংঙ্গলে হঠাৎ দাবানল শুরু হয়েছে। এর মাঝে সে টের পেলো তার সামনে এক ক্ষুধার্ত সিংহ তার দিকে এগিয়ে আসছে। আর পেছনে ফিরে দেখলো এক শিকারী তার দিকে তীর নিশানা করে আছে। দিব্য
এখন সে কি করবে?
দিশেহারা সময়টিতে দাবানল, নদীর স্রোত, ক্ষুধার্থ সিংহ আর নির্দয় শিকারী দিয়ে চারদিক দিয়ে ঘিরে থাকা হরিনীটি তাই চুপচাপ কিছুক্ষন চোখ বন্ধ করে ভাবলো। তারপর সে তার সব বিপদ আপদ অগ্রাহ্য করে সিদ্ধান্ত নিলো সে তার সন্তান জন্ম দিবে। বিপদ আপদ যদি ঘটে ঘটুক। সেটির দায়িত্ব সে বিশ্বাসী মনে চোখ বুজে সৃস্টিকর্তার হাতে ছেড়ে দিলো।
সাথে সাথে কিছু অলৌকিক ঘটনা ঘটলোঃ
– কালো মেঘে ঢাকা আকাশে তুমুল ঝড় বৃস্টি শুরু হলো। সেই সাথে প্রচন্ড বজ্রপাতে শিকারীর চোখ অন্ধ হয়ে গেলো।
– অন্ধ শিকারী তীর ছুড়ে দিলো। সেই তীর হরিনীর পাশ কেটে সিংহের মাথায় আঘাত করলো।
– তুমুল বৃস্টির জলে জংগলের আগুন নিভে শান্ত হয়ে গেলো।
– হরিনীটি একটি সুস্থ ও সুন্দর শাবকের জন্ম দিলো।
দিব্য
প্রথম প্রথম কৃষ্ণভাবনামৃত গ্রহনকালে এরকম কিছু সময় আসে। চারদিক থেকে বিপদ, নিন্দা, হতাশা আর অসহযোগিতা চেপে ধরে আমাদের। কখনো কখনো এই খারাপ সময় এত শক্তিশালী মনে হয় যে আমরা পরিস্থিতির কাছে হার মেনে যাই। আবার বিষ্ঠার মায়াবাদী পথে ফিরার কথাও চিন্তা করি।
অথচ এটি ভুল।
আর সেটা আমরা এই হরিনের গল্প থেকেই শিখে নিতে পারি।
যখন হরিনীটির চারপাশে এত বিপদ ছিলো, তবু জীবন মৃত্যু যাই আসুক, সে বিপদের আশংকায় নিজের লক্ষ্য থেকে একবিন্দু সরে যায়নি। সে তার কাজ, অর্থাৎ সন্তান জন্ম দেয়াতেই নিজের সব মনযোগ দিয়েছে। আর তখন বাকী সব বিপদ আপদ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজে সমাধান করে দিয়েছেন।
। হিতোপদেশ।
যখন হতাশা গ্রাস করে, নিজের উপর বিশ্বাস উঠে যায়, তখনও ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি অগাথ বিশ্বাস রাখবেন। জীবনের লক্ষ্যে স্থির থাকবেন। আর কখনো লক্ষ্য থেকে একবিন্দু পিছপা হবেন না।
মনে রাখবেন, আপনি যত বড় ঝড়ের মাঝেই থাকুন, যত নিঃসঙ্গই আপনি নিজেকে ভাবুন না কেন, পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কখনো আপনাকে ছেড়ে যাননি, সর্বদা আপনার কাছেই আছেন।
মনে রাখবেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কখনো ঘুমান না এবং কোন তন্দ্রাও তাকে স্পর্শ করেনা, সব সময় তিনি আপনাকে দেখছেন এবং আপনার কোন প্রার্থনা তিনি অপূর্ণ রাখবেন না….
0 Comments