নিজের মন থেকে ঈর্ষা দূর করার কার্যকরী ক’টি উপায়

নিজের মন থেকে ঈর্ষা দূর করার কার্যকরী ক’টি উপায়

বন্ধু বা আত্মীয়ের সফলতা, দামী গাড়ি, ফ্ল্যাট, আকর্ষর্য়ণী শাড়ি, দামী ঘড়ি দেখে আপনার ভেতর মাঝে মাঝে ঈর্ষা কাজ করতেই পারে। মাঝে মাঝে ঈর্ষান্বিত হওয়া স্বাভাবিক কিন্তু প্রতিনিয়ত ঈর্ষান্বিত মনোভাব আপনার হতাশার কারণ হতে পারে এমনকি ঈর্ষান্বিত মনোভাব আপনার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই এ ধরনের মনোভাব কষ্ট হলেও দূর করা জরুরী এবং অন্যের দিকে ফোকাস না করে নিজের কাজের দিকে, আত্মবিশ্বাসের দিকে, আত্মউন্নয়নের দিকে ফোকাস করাটা জরুরী।

 

পদ্ধতি একঃ 

প্রাথমিকভাবে ঈর্ষান্বিত মনোভাব নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

 

১) গভীরভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিন

যদি আপনার বয়ফ্রেন্ডকে হঠাৎ কোথাও কোন মেয়ের সাথে কথা বলতে দেখেন কিংবা আপনার বান্ধুবীর সাথে কথা বলতে দেখেন রেগে যাওয়ার পরিবর্তে নিজেকে শান্ত রাখুন। নাক দিয়ে গভীরভাবে প্রশ্বাস নিন এবং মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস ধীরে ধীরে ত্যাগ করুন। আপনার বয়ফ্রেন্ড অন্য মেয়ের সাথে কেন কথা বলছে তা বোঝার জন্য আপনার মাথা ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন। এমন অবস্থায় আপনি তাদের সামনে গিয়ে দুজনের সাথেই মিষ্টি ভাষায় কথা বলুন কারণ মেয়েটি আপনার বয়ফ্রেন্ডের ক্লাসমেইট বা বন্ধুও হতে পারে।






 

২) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে নিজেকে দূরে রাখুন

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন তাদের জীবনযাপনের নানা স্ট্যাটাস শেয়ার করে। আপনার কোন বন্ধু হয়ত তার বয়ফ্রেন্ড বা এই সংক্রান্ত কোন পোস্ট প্রতিদিন শেয়ার করতে থাকে যা আপনার পছন্দ নয় তাহলে কিছুদিনের জন্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে বিরত থাকুন। আপনার মনের ঈর্ষান্বিত মনোভাব দূর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগ থেকে নিজেকে দূরে রাখুন কিংবা ফেসবুকে যাকে নিয়ে আপনি ঈর্ষান্বিত হোন তাকে আনফলো করে রাখুন।

 

৩) অন্যের সমালোচনা এবং বিদ্রুপ করা থেকে বিরত থাকুন

আপনি যাকে অপছন্দ করেন কিংবা যার কাজ কর্মে আপনি ঈর্ষান্বিত হোন তার সম্পর্কে বিদ্রুপ কিংবা সমালোচনা করা বন্ধ করুন। অন্যের কাছে তাকে নিয়ে সমালোচনা করতে গেলে ঐ ব্যক্তির কাছে আপনার ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে। তাই বিদ্রুপ করার পরিবর্তে তার প্রশংসা করুন।

৪) কাছের মানুষদের কাছে দোষ স্বীকার করুন

আপনি যদি আপনার সহোদর, ভাল বন্ধু বা নিকট আত্মীয়ের প্রতি ঈর্ষান্বিত হোন বা তাদের আচরণে ব্যথিত হোন এবং এ ব্যাপারটি যদি বছরের পর বছর চলতে থাকে তাহলে খোলাখোলিভাবে ব্যাপারটি তাদের কাছে বলে দিন। এতে আপনার নিজের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্থি ফিরে আসবে।

 

পদ্ধতি দুইঃ 

যে কাজগুলোর প্রতি মনোযোগী হবেন

 

১) ভালো কাজের প্রশংসা করুন

অন্যকে ঈর্ষা করলে নিজের কাজেও সফল হওয়া যায় না। আপনার কাছের সহকর্মী, বন্ধু কিংবা আত্মীয় যদি ভালো কাজ করে এবং জীবনে সফল হয় তাহলে তাঁর প্রশংসা করুন। এতে তাদের প্রতি আপনার সম্মান এবং নম্রতা উভয়ই প্রকাশ পায়।

 

 

২) নিজের দক্ষতার উপর নজর দিন

অন্যরা কী করছে তা ভেবে সময় নষ্ট না করে বরং আপনার নিজের কাজের দিকে নজর দিন। এমন তিনটি কাজ খুঁজে বের করুন যে কাজগুলোতে আপনি দক্ষ। নিজের দক্ষতার কাজের তালিকা থেকে একটি কাজ এক্ষুনি করে ফেলুন। যদি তা স্পেশাল কোন রেসিপি রান্না হয় তবে তাই করুন।

 

৩) প্রতিদিন মেডিটেশন করুন

প্রতিদিন মেডিটেশন করলে আপনার মন প্রফুল্ল থাকবে এবং সতেজ থাকবে। নিজের কাজে মনোযোগ ফিরিয়ে আনার জন্য মেডিটেশন করা প্রয়োজন। প্রতিদিন অন্তত দশ মিনিটের জন্য একটি নির্জন জায়গায় বসে মেডিটেশন করলে আপনি মানসিক অবসাদগ্রস্থতা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। মেডিটেশনের সময় আপনি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে খেয়াল করুন এবং আপনার শরীরের অনুভূতির দিকে খেয়াল করুন।








 

৪) সদা আনন্দে থাকুন

প্রতিনিয়ত আনন্দে থাকলে আপনার মাথায় ঈর্ষান্বিত মনোভাব কাজ করবে না। অবসাদগ্রস্থতা, হীনমন্যতা ইত্যাদি দূর করার সহজ উপায় রেস্টুরেন্টে খেতে যাওয়া, শপিং করা, টেলিভিশনের প্রিয় শো দেখা কিংবা আইসক্রীম খাওয়া। জীবন খুব সংক্ষিপ্ত তাই একে উপভোগ করা উচিত।







 পদ্ধতি তিনঃ 
নিজের জীবনের উন্নতি করুন

 

১) স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী গোল সেট করুন

আপনার ঈর্ষান্বিত মনোভাবকে অনুপ্রেরণায় পরিণত করুন। আপনি জীবনে যা কিছু চান তা পেতে কিছু নির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। এমন কিছু গোল সেট করুন যা পরবর্তী পাঁচ দিনে পেতে চান এবং এমন কিছু গোল ঠিক করুন যা পরবর্তী পাঁচ বছরে পেতে চান।
ধরুন আপনি ভালো বেতনের একটি চাকুরী করতে চান। প্রথমে আপনার পড়াশুনা সঠিকভাবে কমপ্লিট করতে হবে। ভাল ফলাফল এবং আপনার নিজস্ব দক্ষতা ভালো চাকুরী খুঁজে পেতে সহায়ক হবে।








 

২) নিজের শরীরের যত্ন নিন


আপনি যদি নিজের স্বাস্থ্যের দিকে মনোযোগী হোন তাহলে অন্যের কথা ভেবে ঈর্ষান্বিত হতে হবে না। অন্যের সফলতায়, সৌন্দর্য্যে ঈর্ষান্বিত হওয়ার সময় কই যদি আপনি নিজের দিকে আরো যত্নশীল হোন! প্রতিদিন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার গ্রহণ করুন, পুষ্টিকর খাবার খান, প্রচুর পানি পান করুন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমানো নিশ্চিত করুন। তাহলে আপনিই অন্যের চেয়ে আরো আকর্ষণীয় হয়ে উঠবেন।







  

৩) পজিটিভ চিন্তা করে এমন মানুষদের সাথে থাকুন


হতে পারে আপনি নেতিবাচক মানুষদের ভীরে থাকেন বলেই আপনার মধ্যে ঈর্ষা, ক্রোধ ইত্যাদি বাসা বেধে আছে। নেতিবাচক মানুষ আপনার বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য মঙ্গলজনক নয় তাই ইতিবাচক চিন্তা করে এমন মানুষের সাথে চলাফেরা করুন। প্রতিনিয়ত ইতিবাচক চিন্তা করুন এবং ইতিবাচক কাজ করুন। একজন ইতিবাচক মানুষ আপনার কাজে সহায়ক এবং আপনার প্রতি দয়ালু হবে। এবং নেতিবাচক মানুষ আপনাকে অপমান করবে, আপনার সমালোচনা করবে এমনকি আপনাকে গোল্লায় যেতে সাহায্য করবে।

Post a Comment

0 Comments