নির্বিশেষবাদ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক :-

 নির্বিশেষবাদ সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক :-




  • শ্লোক: 1

    ন ত্বেবাহং জাতু নাসং ন ত্বং নেমে জনাধিপাঃ ।
    ন চৈব ন ভবিষ্যামঃ সর্বে বয়মতঃপরম্ ।।
    (গীতা ২/১২)
  • অনুবাদঃ- এমন কোন সময় ছিল না যখন আমি, তুমি ও এই সমস্ত রাজারা ছিলেন না এবং ভবিষ্যতেও কখনও আমাদের অস্তিত্ব বিনষ্ট হবে না ।

  • শ্লোক: 2

    ক্লেশোহধিকতরস্তেষামব্যক্তাসক্তচেতসাম্ ।
    অব্যক্তা হি গতির্দুঃখং দেহবদ্ভিরবাপ্যতে ॥
    (গীতা ১২/৫)
  • অনুবাদঃ- যাদের মন ভগবানের অব্যক্ত নির্বেশেষ রূপের প্রতি আসক্ত, তাদের ক্লেশ অধিকতর৷ কারণ, অব্যক্তের উপাসনার ফলে দেহ্ধারী জীবদের কেবল দুঃখই লাভ হয়।

  • শ্লোক: 3

    ব্রহ্মণো হি প্রতিষ্ঠাহমমৃতস্যাব্যয়স্য চ ।
    শাশ্বতস্য চ ধর্মস্য সুখস্যৈকান্তিকস্য চ ॥
    (গীতা ১৪/২৭)
  • অনুবাদঃ- আমিই নির্বিশেষ ব্রহ্মের প্রতিষ্ঠা বা আশ্রয়। অব্যয় অমৃতের, শাশ্বত ধর্মের এবং ঐকান্তিক সুখের আমিই আশ্রয়।

  • শ্লোক: 4

    হিরণ্ময়েন পাত্রেণ সত্যস্যাপিহিতং মুখম্ ।
    তৎ ত্বং পূষন্নপাবৃণু সত্যধর্মায় দৃষ্টয়ে ।।
    (ঈশোপনিষদ ১৫)
  • অনুবাদঃ- হে ভগবান ! হে সর্বজীব-পালক ! আপনার জ্যোতির্ময় আলোক আপনার মুখারবিন্দকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। কৃপা করে এই আচ্ছাদন দূর করুন এবং আপনার শুদ্ধ ভক্তকে আপনার সত্য স্বরূপ প্রদর্শন করুন।

  • শ্লোক: 5

    যস্য প্রভা প্রভবতো জগদণ্ডকোটি-
    কোটিষ্বশেষবসুধাদিবিভূতিভিন্নম্ ।
    তদ্ ব্রহ্ম নিষ্কলমনন্তমশেষভূতং
    গোবিন্দমাদিপুরুষং তমহং ভজামি ।।
    (ব্রহ্মসংহিতা ৫/৪০)
  • অনুবাদঃ- অনন্তকোটি ব্রহ্মাণ্ডে অনন্ত বসুধাদি বিভূতির দ্বারা যিনি ভেদপ্রাপ্ত হয়েছেন, সেই পূর্ণ, নিরবচ্ছিন্ন এবং অশেষভূত ব্রহ্ম যাঁর প্রভা, সেই আদিপুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।

  • শ্লোক: 6

    প্রভু কহে—“মায়াবাদী কৃষ্ণে অপরাধী।”
    (চৈঃ চঃ মধ্য ১৭/১২৯)
  • অনুবাদঃ- শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু বললেন, “মায়াবাদীরা শ্রীকৃষ্ণের চরণে অপরাধী।”

  • শ্লোক: 7

    মায়াবাদী ভাষ্য শুনিলে হয় সর্বনাশ ।।
    (চৈঃ চঃ মধ্য ৬/১৬৯)
  • অনুবাদঃ- কেউ যদি মায়াবাদী-ভাষ্য শোনে, তা হলে তার সর্বনাশ হয়।

  • শ্লোক: 8

    হিরণ্ময়েন পাত্রেণ সত্যস্যাপিহিতং মুখম্ ।
    তৎ ত্বং পূষন্নপাবৃণু সত্যধর্মায় দৃষ্টয়ে ।।
    (ঈশোপনিষদ ১৫)
  • অনুবাদঃ- হে ভগবান! হে সর্বজীবের-পালক! আপনার জ্যোতির্ময় আলোক আপনার মুখারবিন্দকে আচ্ছাদিত করে রেখেছে। কৃপা করে এই আচ্ছাদন দূর করুন এবং আপনার শুদ্ধ ভক্তকে আপনার সত্য স্বরূপ প্রদর্শন করুন।

  • শ্লোক: 9

    মায়াবাদমসচ্ছাস্ত্রং প্রচ্ছন্নং বৌদ্ধমুচ্যতে ।
    ময়ৈব বিহিতং দেবি কলৌ ব্রাহ্মণমূর্তিনা ।।
    (পদ্ম পুরাণ)
  • অনুবাদঃ- শিব পার্বতীকে বললেন, “হে দেবী! আমি কলিকালে ব্রাহ্মণমূর্তি ধারণ করে অসৎ শাস্ত্রের দ্বারা মায়াবাদরূপ প্রচ্ছন্ন বৌদ্ধমত স্থাপন করি।”

  • শ্লোক: 10

    তস্যারবিন্দনয়নস্য পদারবিন্দ-
    কিঞ্জল্কমিশ্রিতুলসীমকরন্দবায়ুঃ ।
    অন্তর্গতঃ স্ববিবরেণ চকার তেষাং
    সংক্ষোভমক্ষরজুষামপি চিত্ততন্বোঃ ।।
    (ভাগবত ৩/১৫/৪৩)
  • অনুবাদঃ- সেই অরবিন্দ নেত্র ভগবানের পদকমলের কিঞ্জল্ক মিশ্রিত তুলসীর মধুর সৌরভযুক্ত বায়ু নির্বিশেষ ব্রহ্মপরায়ণ চতুঃসনের নাসিকার রন্ধ্রযোগে অন্তর্গত হয়ে, তাঁদের চিত্ত ও তনুর ক্ষোভ উৎপন্ন করেছিল।

  • শ্লোক: 11

    যেহন্যেহরবিন্দাক্ষ বিমুক্তমানিন-
    স্ত্বয্যস্তভাবাদবিশুদ্ধবুদ্ধয়ঃ ।
    আরুহ্য কৃচ্ছ্রেণ পরং পদং ততঃ
    পতন্ত্যধোহনাদৃতযুষ্মদঙ্ঘ্রয়ঃ ।।
    (ভাগবত ১০/২/৩২)
  • অনুবাদঃ- হে অরবিন্দাক্ষ ! যারা ‘বিমুক্ত হয়েছে’ বলে অভিমান করে, আপনার প্রতি ভক্তিবিহীন হওয়ায় তাদের বুদ্ধি অবিশুদ্ধ। তারা বহু কৃচ্ছ্রসাধন করে মায়াতীত পরমানন্দ ব্রহ্ম পর্যন্ত আরোহণ করে। ভগবদ্ভক্তির অনাদর করার ফলে তারা আবার অধঃপতিত হয়।

  • শ্লোক: 12

    যথোল্মুকাদ্বিস্ফুলিঙ্গাদ্ধুমাদ্বাপি স্বসম্ভবাৎ ।
    অপ্যাত্মত্বেনাভিমতাদযথাগ্নিঃ পৃথগুল্মুকাৎ ।।
    (ভাগবত ৩/২৮/৪০)
  • অনুবাদঃ- জ্বলন্ত অগ্নি যেমন অগ্নিশিখা থেকে, স্ফুলিঙ্গ থেকে এবং ধুম থেকে ভিন্ন, যদিও তারা সকলেই জ্বলন্ত কাষ্ঠ থেকে উদ্ভূত হওয়ার ফলে, পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত।
  • Post a Comment

    0 Comments