মৃত্যু সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শ্লোক
শ্লোক: 1
জাতস্য হি ধ্রুবো মৃত্যুর্ধ্রুবং জন্ম মৃতস্য চ । তস্মাদপরিহার্যেহর্থে ন ত্বং শোচিতুমর্হসি ॥
(গীতা ২/২৭)অনুবাদ:- যার জন্ম হয়েছে তার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী এবং যার মৃত্যু হয়েছে তার জন্মও অবশ্যম্ভাবী। অতএব অপরিহার্য কর্তব্য সম্পাদন করার সময় তোমার শোক করা উচিত নয়।
শ্লোক: 2
কৃষ্ণ তদীয়পদপঙ্কজ-পঞ্জরান্তম্
অদ্যৈব বিশতু মে মানসরাজহংস ।
প্রাণপ্রয়াণসময়ে কফবাতপিত্তৈঃ
কণ্ঠাবরোধনবিধৌ স্মরণং কুতস্তে ।।
(মুকুন্দমালা-স্তোত্র)অনুবাদঃ- হে কৃষ্ণ ! আমি প্রার্থনা করি আমার মনের রাজহংস যেন এখনই তোমার পাদপদ্মে ডুব দেয় এবং তাদের পিঞ্জরে আবদ্ধ হয়ে পড়ে। অন্যথায়, শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগের সময়, যখন আমার কণ্ঠ কফ, বাত ও পিত্তে অবরুদ্ধ হবে, তখন তোমাকে স্মরণ করা কি করে সম্ভব হবে?
(সম্রাট কুলশেখর)
শ্লোক: 3
অন্তকালে চ মামেব স্মরন্মুক্ত্বা কলেবরম্ ।
যঃ প্রয়াতি স মদ্ভাবং যাতি নাস্ত্যত্র সংশয়ঃ ॥
(গীতা ৮/৫)অনুবাদঃ- মৃত্যুর সময় যিনি আমাকে স্মরণ করে দেহত্যাগ করেন, তিনি তৎক্ষণাৎ আমার ভাবই প্রাপ্ত হন। এই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
শ্লোক: 4
যং যং বাপি স্মরন্ ভাবং ত্যজত্যন্তে কলেবরম্ ।
তং তমেবৈতি কৌন্তেয় সদা তদ্ভাবভাবিতঃ ॥
(গীতা ৮/৬)অনুবাদঃ- অন্তিমকালে যিনি যে ভাব স্মরণ করে দেহত্যাগ করেন, তিনি সেই ভাবে ভাবিত তত্ত্বকেই লাভ করেন।
শ্লোক: 5
বেদাহমেতং পুরুষং মহান্তং
আদিত্যবর্ণং তমসঃ পুরস্তাৎ।
তমেব বিদিত্বাতিমৃত্যুমেতি
নান্যঃ পন্থা বিদ্যতেহয়নায় ।।
(শ্বেতাঃ ৩/৮)অনুবাদঃ- আমি সেই পরম পুরুষকে জেনেছি যিনি অন্ধকারের উর্ধ্বে, যিনি সূর্যের মতোই ভাস্বর । তাঁকে যিনি জানেন, কেবল তিনিই জন্ম-মৃত্যুর বন্ধনকে অতিক্রম করতে পারেন। এ ছাড়া মুক্তি লাভের অন্য কোন পন্থা নেই।
শ্লোক: 6
ভজ গোবিন্দম্ ভজ গোবিন্দম্ ভজ গোবিন্দম্ মূঢ়মতে।
সম্প্রাপ্তে সন্নিহিতে কালে নহি নহি রক্ষতি ডুকৃঙ্করণে ।। (শঙ্করাচার্য)অনুবাদঃ- হে মূঢ়মতি ! প্রত্যয় ও উপসর্গ বিষয়ে তোমার ব্যাকরণগত বাকচাতুরি এবং তোমার দার্শনিক জল্পনা-কল্পনা মৃত্যুকাল সন্নিহিত হলে তোমাকে আদৌ রক্ষা করতে পারবে না। সুতরাং শুধু গোবিন্দকে ভজনা কর, গোবিন্দকে ভজনা কর, গোবিন্দকে ভজনা কর।
0 Comments