এই জড় জগতে ৮৪ লক্ষ প্রজাতির জীব রয়েছে

 কেন এই মানব জন্মঃ-




◆এই জড় জগতে ৮৪ লক্ষ প্রজাতির জীব রয়েছে।

এই ৮৪ লক্ষ জীবের মধ্যে ৯ লক্ষ প্রজাতির জলজ প্রাণী, ১১ লক্ষ প্রজাতির কীট পতঙ্গ, ১০ লক্ষ প্রজাতির পাখি, ২০ লক্ষ প্রজাতির গাছপালা, ৩০ লক্ষ প্রজাতির পশু ও ৪ লক্ষ প্রজাতির মানুষ রয়েছে। এখন যারা মানুষ কুলে জন্মগ্রহন করেছেন তারা ইতিপূর্বে ৮০ লক্ষ প্রজাতির দেহ পরিবর্তন করে এসেছেন, ৮০ লক্ষ বার তাদের জন্ম হয়েছে মৃত্যু হয়েছে।


   ◆ সুতরাং যে জীবাত্মা মনুষ্য দেহ লাভ করেছে সে নিঃসন্দেহে ভাগ্যবান, তাই মনুষ্য জন্মকে বলা হয় সুদুর্লভ।

 #চুরাশি_লক্ষ_যোনি_ভ্রমণ_সম্পর্ককে_পুরাণাদি_শাস্ত্রে_যা_আছে_তার_বিবরণঃ-


◆ ২০ লক্ষ বার বৃক্ষ যোনিতে জন্ম হয়। এটাতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়। রুদ্রের তাপ লাগে, ঝড় বৃস্টির ফলে ডালপালা ভাঙ্গে। শীতকালে সব পাতা ঝরে যায়, কুঠার দিয়ে কাটা হয়। আরো অনেক প্রকার কষ্ট পায়।


◆ তারপর জলচর রুপে জন্ম হয়। এই রুপে ৯ লক্ষবার জন্ম হয়। হাত নেই,পা নেই শুধু দেহ আর মাথা। খায় পচা মাংস আর যা পায়। একজনের মাংস আরেকজন খেয়ে জীবন রক্ষা করে।


◆ তারপর ক্রিমি যোনি। ১০লক্ষ বার জন্মে।


◆ ১১লক্ষবার পাখি রূপে। তাদের ঘর বাড়ি নেই। গাছে গাছে থাকে। জোক,পোকা, পচা গলা যা পায় তা খায়। নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ায়। যখন সন্তান উড়তে পারে তখন আর ফিরেও তাকায় না। যদি কাক আর শকুনি হয়ে জন্মায় তবে অনেকদিন বেচে থাকে।


◆ ৩০ লক্ষবার পশু যোনি। নানা পশু নানা কষ্ট পায়। কোনো পশু হিংস্র পশু দ্বারা আক্রান্ত। কেউ বা লোকালয়ে লুকিয়ে থাকে। কেউ একে অন্যকে মেরে খায়। কেউবা ঘাস তৃণ খায়। হাল চাষে গাড়ি টানায়। যত রোগশোক হয় দিনরাত মল মুত্রের সাথেই বাস করতে হয়। 

গো-যোনিতে জন্ম লাভ পশুর মধ্যে শ্রেষ্ঠ গো-র শেষ আর পশু জন্ম নেই।


◆ তারপর মানব কুলেতে জন্ম ৪লক্ষ বার। বনের মানুষ বনের মধ্যে তারা পশুসম খাবার খায় তাদের আত্ম-পর জ্ঞান নেই।


◆ তারপর পাহাড়িয়া জাতির জন্ম হয়। নাগা, কুকি, সাওতালি।


◆ তারপর জন্ম হয় অধম কুলে। তারা দেবধর্ম মানেনা। অপকর্ম করে। মদ্য পান করে।


◆ তারপর শুদ্রুকুলে জন্ম। যা কর্ম করে তা নিজেই ভোগ করে। কেউ অন্ধ, কেউ কানে শুনেনা ইত্যাদি হয়। কারো স্বভাব ভাল হয় কর্মগুণে।


◆ তারপর জন্মায় বৈশ্য জাতি কুলে। কর্ম অনুযায়ি ফল ভোগ করে ওরা।


◆ তারপর ক্ষত্রিয়। কর্ম ফলে ফল ভাগি হয়।


◆ অবশেষে ব্রাহ্মণকুলে জন্মায়। এখানে আর একাধিকবার জন্ম হয়না। উত্তম ব্রাহ্মণ জন্ম তার শ্রেষ্ঠ। ব্রহ্মজ্ঞান থাকলেই সে ব্রাহ্মণ। নিজের উদ্ধারে সে আত্মজ্ঞান লাভ করে। শুধু ব্রাহ্মণ কুলে জন্মালেই উদ্ধার হওয়া যায়না। যদি সে জ্ঞান লাভ করতে না পারে তবে পুনরায় সে চুরাশিলক্ষ যোনি পদে ঘুরে। বারবার জন্মলাভে কষ্ট পায়। আর কোনো উপায় নেই যদিনা ভগবানের শরণাগত হয়।

 

#এখন_প্রশ্ন_হলো_কেন_এই_মানব_জন্মঃ-


একসময় প্রতিটি জীবাত্মা ভগবানের নিত্য আলয় শ্রী গোলক বৃন্দাবনে ছিল, সেখানে ভোগ-বাঞ্চা করার কারনে ভগবান অনন্তকোটি জড় ব্রহ্মান্ড সৃষ্টি করে সেখানে জীবাত্মাদের প্রেরণ করেছেন ভোগ বাসনা পূর্ণ করার জন্য, তো জীবাত্মা যখন জড় জগতে পতিত হয় তখন সে ভোগে লিপ্ত হয়। আর এই ভোগউন্মূখ জড় জগতকে ভোগ করার মাধ্যমে জীবাত্মা চরম দুঃখ অশান্তি ডেকে আনে এবং বারবার জন্ম-মৃত্যু, জরা-ব্যাধির দ্বারা ভীষন দুঃখ-কষ্ট পেতে থাকে।


◆ জীবাত্মাদের এমন দুঃখ-কষ্ট দেখে জীবের পরম সুুহৃদ ও জীবের পরম পিতা শ্রী কৃষ্ণ জীবদের এই জড় জগৎ থেকে উদ্ধার হয়ে ভগবদ্ধামে ফিরে যাওয়ার জন্য একটি মানব শরীর দেন। যাতে জীবাত্মার তার ভুল বুঝতে পেরে সাধন ভজন করে ভগবানের কাছে ফিরে যেতে পারে, তাই এই মানব জন্ম হলো ভব সাগর পার হওয়ার নৌকা স্বরুপ। আর এই মানব জন্ম দেওয়া হয়েছে শুধু সাধন-ভজন করে ভগবানের নিত্য আনন্দময় ধামে ফিরে যাওয়ার জন্য।


◆ তাই যারা প্রকৃত বুদ্ধিমান তারা এই সুদুর্লভ মনুষ্য জন্মের সদ্ব্যবহার করে তথা সম্পূর্ণ পাপ মুক্ত হয়ে শ্রীকৃষ্ণের অারাধনা করে এক জীবনেই ভগবানের কাছে ফিরে যেতে চান, তারা অযতা সময় অপচয় করেন না। সবসময় ভগবানের কথা স্মরণ করেন এবং প্রার্থনা করেন যে, হে ভগবান !! আমাকে তুমি এই দুঃখময় জগৎ থেকে উদ্ধার করো।


◆ তাই আসুন, সুদুর্লভ এই মনুষ্য জন্মকে হরিভজনের মাধ্যমে স্বার্থক করে তুলি এবং ভোগ বাসনাকে ত্যাগ করি, তাহলে অন্তিমে আমরা ভগবানের অপ্রাকৃত আনন্দের ধাম শ্রী গোলক বৃন্দাবনে ফিরে যেতে পারবে।

                         -------*------*------

#হরেকৃষ্ণ।।

Post a Comment

0 Comments