শ্রী পরমা একাদশী ব্রত মাহাত্ম্য:
মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন, হে কৃষ্ণ! পুরুষোত্তম মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম কি, বিধিই বা কি তা কৃপা করে আমাকে বলুন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে যুধিষ্ঠির, সুখভোগ, মুক্তি, আনন্দ প্রদানকারী, পবিত্র এবং পাপবিনাশিনী এই একাদশীর নাম `পরমা'। পূর্বে বর্ণিত একাদশীর বিধি অনুসারেই এই ব্রত পালন করা কর্তব্য। এখন এই ব্রত বিষয়ে এক মনোহর কাহিনী তোমাকে বলব। কাম্পিল্য নগরে মুনি ঋষিদের কাছে আমি তা শুনেছিলাম।
কাম্পিল্য নগরে সুমেধা বলে এক ব্রাহ্মন ছিলেন,তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল পবিত্রা। তিনি অত্যন্ত পতিব্রতা ছিলেন। কিন্তু পূর্ব কর্মফলে এই ব্রাহ্মন ধনহীন হয়ে পড়েন।ভিক্ষা চেয়েও তার কিছুই জুটত না। কিন্তু তাঁর স্ত্রী নিজ পতির সেবা নিষ্ঠা সহকারে করতেন।গৃহে অতিথি সেবার জন্য প্রয়োজনে অনাহারে থাকতেন। স্বামীকে কখনও বলতেন না যে গৃহে অন্ন নেই। পত্নীর শারিরীক দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে ব্রাহ্মন নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করতেন।
একদিন পত্নী প্রিয়ংবদা কে বললেন, হে কান্তে! আমি ধনবান মানুষদের কাছেও ভিক্ষা চেয়ে পাই না। বলো এখন আমি কি করব? ধন সংগ্রহের জন্য আমি অন্য কোথাও যেতে চাই। তুমি আমাকে অনুমতি দাও।
ব্রাহ্মনপত্নী তখন তাঁকে বললেন, হে বিদ্বান! এ জগতে মানুষ তার পূর্ব সঞ্চিত কর্মফল ভোগ করে। পূর্ব জন্মের কোনো ফল না থাকলে স্বর্ণপর্বতে গেলেও কিছু পাওয়া যাবে না। হে স্বামী, পূর্ব জন্মে আমি বা আপনি কেউই ধন সম্পদ ইত্যাদি কোনো কিছুই সত্ পাত্রে দান করিনি। তাই আমাদের ভাগ্যে যা আছে তা এখান থেকেই লাভ হবে।আপনাকে ছাড়া আমি এক মুহূর্তও থাকতে পারবো না। কেন না পতিহীনা কে দুর্ভাগা বলে সবাই নিন্দা করবে। তাই এখানে যা ধনলাভ হয়, তাই দিয়ে দিনযাপন করুন।
ঐ বিচক্ষণ ব্রাহ্মন পত্নীর কথা শুনে নগরেই রইলেন।একদিন মুনিশ্রেষ্ঠ কৌন্ডিন্য সেখানে এলেন। তাঁকে দেখে সুমেধা খুব খুশি হলেন। ব্রাহ্মন সস্ত্রীক মুনিকে প্রনাম জানালেন।সুন্দর আসন দিয়ে তাঁর পূজা করলেন।ঐ দম্পতি আনন্দ সহকারে মুনিকে ভোজন করালেন।এরপর ব্রাহ্মণ পত্নী জিজ্ঞাসা করলেন,হে মুনিবর, কিভাবে দারিদ্রতা নাশ হয়? বিনা দানে কিভাবে ধন,বিদ্যা,স্ত্রী লাভ হয়? আমার স্বামী আমাকে এখানে রেখে ভিক্ষার জন্য দূরদেশে যেতে চান।কিন্তু অামি তাঁকে যেতে নিষেধ করেছি। এখন আমাদের ভাগ্যবশে আপনার শুভাগমন হয়েছে।আপনার কৃপায় আমাদের দারিদ্রতা অবশ্যই নাশ হবে। দারিদ্রতা নাশ হয় এমন কোনো ব্রত বা তপস্যার কথা আমাদের বলুন।
এই কথা শুনে মুনিবর বললেন,হে সাধ্বী, পুরুষোত্তম মাসের কৃষ্ণপক্ষে পরমা নামে সর্বশ্রেষ্ঠা এক একাদশী আছে।এই তিথি ভগবানের অতীব প্রিয়তমা। এই ব্রত পালনে মানুষ অন্ন,ধন সম্পদ আদি সবই লাভ করে থাকে।এই সুন্দর ব্রত ধনপতি কুবের প্রথম করেছিলেন।রাজা হরিশ্চন্দ্রও এই ব্রত পালনে স্ত্রী পুত্র ও রাজ্য ফিরে পেয়েছিলেন।হে বিশালাক্ষী, এই জন্য তোমরাও এই ব্রত পালন কর।
হে পাণ্ডব, কৌণ্ডিণ্য মুনির উপদেশে পতি পত্নী উভয়ে এক সাথে বিধি মতো পুরুষোত্তম মাসের পরমা একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রত সমাপনের পর রাজভবন থেকে এক রাজকুমার তাদের কাছে এলেন।ব্রহ্মার প্রেরণায় তিনি বহু ধন সম্পদ, নতুন গৃহ ও গাভী এই দম্পতিকে দান করলেন। এই দানের ফলে মৃত্যুর পর সেই রাজা বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হয়েছিলেন। ঐই ব্রত প্রভাবে ব্রাহ্মন দম্পতির সকল দুঃখের অবসান হল।
যে মানুষ এই একাদশী ব্রত পালন না করেন,তিনি চুরাশি লক্ষ যোনিতে ভ্রমন করেও কখনও সুখী হননা। বহু পুণ্যকর্মের ফলে দুর্লভ মানব জন্মলাভ হয়। তাই মানব জীবনে এই একাদশী ব্রতপালন অবশ্য কর্তব্য। এই মাহাত্ম্য শুনে মহারাজ যুধিষ্ঠির সমস্ত আত্মীয় বর্গের সাথে এই একাদশী ব্রত পালন করেছিলেন।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, হে যুধিষ্ঠির, সুখভোগ, মুক্তি, আনন্দ প্রদানকারী, পবিত্র এবং পাপবিনাশিনী এই একাদশীর নাম `পরমা'। পূর্বে বর্ণিত একাদশীর বিধি অনুসারেই এই ব্রত পালন করা কর্তব্য। এখন এই ব্রত বিষয়ে এক মনোহর কাহিনী তোমাকে বলব। কাম্পিল্য নগরে মুনি ঋষিদের কাছে আমি তা শুনেছিলাম।
কাম্পিল্য নগরে সুমেধা বলে এক ব্রাহ্মন ছিলেন,তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল পবিত্রা। তিনি অত্যন্ত পতিব্রতা ছিলেন। কিন্তু পূর্ব কর্মফলে এই ব্রাহ্মন ধনহীন হয়ে পড়েন।ভিক্ষা চেয়েও তার কিছুই জুটত না। কিন্তু তাঁর স্ত্রী নিজ পতির সেবা নিষ্ঠা সহকারে করতেন।গৃহে অতিথি সেবার জন্য প্রয়োজনে অনাহারে থাকতেন। স্বামীকে কখনও বলতেন না যে গৃহে অন্ন নেই। পত্নীর শারিরীক দুরাবস্থার কথা চিন্তা করে ব্রাহ্মন নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করতেন।
একদিন পত্নী প্রিয়ংবদা কে বললেন, হে কান্তে! আমি ধনবান মানুষদের কাছেও ভিক্ষা চেয়ে পাই না। বলো এখন আমি কি করব? ধন সংগ্রহের জন্য আমি অন্য কোথাও যেতে চাই। তুমি আমাকে অনুমতি দাও।
ব্রাহ্মনপত্নী তখন তাঁকে বললেন, হে বিদ্বান! এ জগতে মানুষ তার পূর্ব সঞ্চিত কর্মফল ভোগ করে। পূর্ব জন্মের কোনো ফল না থাকলে স্বর্ণপর্বতে গেলেও কিছু পাওয়া যাবে না। হে স্বামী, পূর্ব জন্মে আমি বা আপনি কেউই ধন সম্পদ ইত্যাদি কোনো কিছুই সত্ পাত্রে দান করিনি। তাই আমাদের ভাগ্যে যা আছে তা এখান থেকেই লাভ হবে।আপনাকে ছাড়া আমি এক মুহূর্তও থাকতে পারবো না। কেন না পতিহীনা কে দুর্ভাগা বলে সবাই নিন্দা করবে। তাই এখানে যা ধনলাভ হয়, তাই দিয়ে দিনযাপন করুন।
ঐ বিচক্ষণ ব্রাহ্মন পত্নীর কথা শুনে নগরেই রইলেন।একদিন মুনিশ্রেষ্ঠ কৌন্ডিন্য সেখানে এলেন। তাঁকে দেখে সুমেধা খুব খুশি হলেন। ব্রাহ্মন সস্ত্রীক মুনিকে প্রনাম জানালেন।সুন্দর আসন দিয়ে তাঁর পূজা করলেন।ঐ দম্পতি আনন্দ সহকারে মুনিকে ভোজন করালেন।এরপর ব্রাহ্মণ পত্নী জিজ্ঞাসা করলেন,হে মুনিবর, কিভাবে দারিদ্রতা নাশ হয়? বিনা দানে কিভাবে ধন,বিদ্যা,স্ত্রী লাভ হয়? আমার স্বামী আমাকে এখানে রেখে ভিক্ষার জন্য দূরদেশে যেতে চান।কিন্তু অামি তাঁকে যেতে নিষেধ করেছি। এখন আমাদের ভাগ্যবশে আপনার শুভাগমন হয়েছে।আপনার কৃপায় আমাদের দারিদ্রতা অবশ্যই নাশ হবে। দারিদ্রতা নাশ হয় এমন কোনো ব্রত বা তপস্যার কথা আমাদের বলুন।
এই কথা শুনে মুনিবর বললেন,হে সাধ্বী, পুরুষোত্তম মাসের কৃষ্ণপক্ষে পরমা নামে সর্বশ্রেষ্ঠা এক একাদশী আছে।এই তিথি ভগবানের অতীব প্রিয়তমা। এই ব্রত পালনে মানুষ অন্ন,ধন সম্পদ আদি সবই লাভ করে থাকে।এই সুন্দর ব্রত ধনপতি কুবের প্রথম করেছিলেন।রাজা হরিশ্চন্দ্রও এই ব্রত পালনে স্ত্রী পুত্র ও রাজ্য ফিরে পেয়েছিলেন।হে বিশালাক্ষী, এই জন্য তোমরাও এই ব্রত পালন কর।
হে পাণ্ডব, কৌণ্ডিণ্য মুনির উপদেশে পতি পত্নী উভয়ে এক সাথে বিধি মতো পুরুষোত্তম মাসের পরমা একাদশী ব্রত পালন করলেন। ব্রত সমাপনের পর রাজভবন থেকে এক রাজকুমার তাদের কাছে এলেন।ব্রহ্মার প্রেরণায় তিনি বহু ধন সম্পদ, নতুন গৃহ ও গাভী এই দম্পতিকে দান করলেন। এই দানের ফলে মৃত্যুর পর সেই রাজা বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হয়েছিলেন। ঐই ব্রত প্রভাবে ব্রাহ্মন দম্পতির সকল দুঃখের অবসান হল।
যে মানুষ এই একাদশী ব্রত পালন না করেন,তিনি চুরাশি লক্ষ যোনিতে ভ্রমন করেও কখনও সুখী হননা। বহু পুণ্যকর্মের ফলে দুর্লভ মানব জন্মলাভ হয়। তাই মানব জীবনে এই একাদশী ব্রতপালন অবশ্য কর্তব্য। এই মাহাত্ম্য শুনে মহারাজ যুধিষ্ঠির সমস্ত আত্মীয় বর্গের সাথে এই একাদশী ব্রত পালন করেছিলেন।
0 Comments