শ্রীগোপাল ভট্ট গোস্বামীর আর্বিভাব তিথিঃ
মহাপ্রভুর ভুবনমঙ্গল পার্ষদ তথা ব্রজের ষড়গোস্বামী গণের অন্যতম গোপাল ভট্ট গোস্বামীর আর্বিভাব তিথি বিরহ দিবস।
( অপ্রকট তিথি শ্রাবণী কৃষ্ণা পঞ্চমী)
মহাপ্রভু সন্ন্যাস গ্রহণ করে পুরীতে এলেন। সার্বভৌম কে প্রেমরসে ভাসিয়ে চললেন দাক্ষিণাত্যে।১৫১১ খ্রিস্টাব্দে এলেন শ্রীরঙ্গমে।শ্রীরঙ্গমে কাবেরী নদীতীরে বেলগুঁড়ী গ্রামে বাস করেন *#শ্রী* সম্প্রদায়ী বৈষ্ণব বেঙ্কটভট্ট।মহাপ্রভু এসেছেন শুনে ভট্ট জী তাঁর বাড়িতে মহাপ্রভু কে নিমন্ত্রণ জানালেন । মহাপ্রভু পদার্পণ করলেন বেঙ্কট ভট্টের বাড়িতে।
*#শ্রী_বৈষ্ণব_এক_বেঙ্কট_ভট্ট_নাম।#প্রভুর_নিমন্ত্রণ_কৈল_করিয়া_সম্মান ।।*
*#নিজঘরে_লইয়া_কৈল_পাদ_প্রক্ষালন।#সেই_জল_সবংশেতে_করিল_ভক্ষণ।।*
বেঙ্কটভট্টের ছোট ছেলে গোপাল।১৪২২ শকে গোপালের জন্ম।পরিবারের সবাই এক সন্ন্যাসীকে সেবা করছে দেখে বালক গোপালও সেবা করতে লাগল। করুণায় ভরে উঠলেন করুণাসিন্ধু।দেখেই চিনেছেন মহাপ্রভু।এই তো তাঁর #গুণমঞ্জরী।গোপালকে আলিঙ্গন দিলেন মহাপ্রভু।বেঙ্কট ভট্টের অনুরোধে মহাপ্রভু চাতুর্মাস্য উদযাপন করলেন তাঁর বাড়িতে।
*#ভট্ট_প্রীতে_মহাপ্রভু_চাতুর্মাস্য_রহে।*
*#রাত্রি_দিন_ভট্ট_সহ_কৃষ্ণ_কথা_কহে।।*
এই চারমাস গোপাল মহাপ্রভুকে সেবা করে বড়ই আনন্দিত।
*#নিজগৃহে_গোপাল_ভট্ট_প্রাণনাথে_পাইয়া।*
*#পিতার_আজ্ঞায়_সেবে_মহাহৃষ্ট_হৈয়া।।*
ছোটোবেলা থেকেই গোপালের অসাধারণ মেধা।পড়াশোনাতে গোপাল অনন্য প্রতিভাধর বালক।মহাপ্রভু যখন শ্রীরঙ্গমে আসেন গোপালের বয়স ১০/১১বছর।চলে আসার সময় মহাপ্রভু গোপাল কে অত্যন্ত মনোযোগের সাথে পড়াশোনা এবং মা বাবার সেবা করতে বললেন এবং বিয়ে করতে নিষেধ করলেন।আর আদেশ করলেন মা বাবার অবর্তমানে যেন গোপাল বৃন্দাবনে গিয়ে জীবন-যাপন করে।মহাপ্রভুর নির্দেশ মতো গোপাল সারাক্ষণ পড়াশোনা করে আর মা বাবার সেবা করে। বাবা মার দেহান্তে তিরিশ বছর বয়সে গোপাল ভট্ট মহাপ্রভুর আদেশ মতো এলেন বৃন্দাবনে ।মিললেন রূপ সনাতনের সাথে।মহাপ্রভুর কাছে খবর এলো যে বৃন্দাবনে গোপাল ভট্ট এসেছেন। আনন্দে মহাপ্রভু নিজের ব্যবহৃত কৌপীন ও একখানা কাঠের পিঁড়ি গোপাল ভট্ট কে উপহার স্বরূপ প্রেরণ করলেন।রূপ সনাতন গোপাল ভট্টকে পেয়ে অতি আনন্দিত। গোপাল ভট্ট ব্রতী হলেন গ্রন্থ রচনাতে।বৈষ্ণব মহলে সাড়া জাগানো বই হরিভক্তিবিলাস রচনা করলেন গোপাল ভট্ট।
*#স্ত্রী_শূদ্র_পেল_শালগ্রাম_শিলার_পূজার_অধিকার।*
(#হরিভক্তিবিলাসের_পঞ্চমবিলাসে_শালগ্রামশিলাপূজানিত্যতা_শ্লোকসংখ্যা-২২৩।)
#এবং_শ্রীভগবান্_সর্বৈঃ_শালগ্রাম_শিলাত্মকঃ।
#দ্বিজৈঃ_স্ত্রীভিশ্চ_শূদ্রৈশ্চ_সম্পূজ্যো_ভগবৎ_পরৈঃ।।
#স্ত্রীয়ো_বা_যদি_বা_শূদ্রা_ব্রাহ্মণাঃ_ক্ষত্রিয়াদয়ঃ। #পূজয়িত্বা_শিলা_চক্রং_লভন্তে_শাশ্বতং_পদম্।।(#স্কান্দে)
গোপাল ভট্টের সেব্য ছিলেন কয়েক মূর্তি শালগ্রাম ।নৃসিংহ চতুর্দশী তে অভিষেক শৃঙ্গার ভোগ আরতি অন্তে গোপাল ভট্ট কাতর প্রার্থনা করলেন যদি একমূর্তি বিগ্রহ পেতেন তবে সেবা করে তৃপ্ত হতেন।রাত শেষে এল বৈশাখী পূর্ণিমার ভোর। গোপাল ভট্ট পেলেন ঐ শালগ্রাম শিলাসমষ্টি বিগ্রহ ।নাম দিলেন রাধারমণ ।আজও বৃন্দাবনে এই বিগ্রহ অতীব নিষ্ঠার সাথে সেবিত হন।মন্দিরে পৃথক কোনো শ্রীরাধা বিগ্রহ নেই।কারণ এই বিগ্রহে একাধারে রাধা এবং কৃষ্ণ যুগলেই বিরাজিত । শালগ্রাম শিলা থেকে ঠাকুর নিজেই প্রকট হয়েছিলেন কেবল মাত্র গোপাল ভট্টের মনোবাসনা পূরণ করতে। তাই বৃন্দাবনে এই ঠাকুর #স্বয়ম্ভু নামেও পরিচিত ।রাধারমণের পাশে রাধারাণী প্রতিভূ রূপে রয়েছেন।যেহেতু রাধারমণের নামের মধ্যেই রাধা রাণী আছেন, তাই আলাদা করে রাধারাণীর বিগ্রহ স্থাপন অসম্ভব জেনে প্রতিভূ রূপে সেবা চলে।মন্দির থেকে বেরিয়ে বামদিক দিয়ে গেলে রয়েছে রাধারমণ এর প্রাকট্য ক্ষেত্র।।বৃন্দাবনে এই রাধারমণ দেব #কালোগৌর নামেও পরিচিত।
বৈষ্ণব রসজ্ঞজন আস্বাদন করেছেন–
#গোপাল_ভট্টের_প্রাণধন/#গৌর_হল_রাধারমণ।
#আবরিত_রাধার_বরণ/#গৌর_আমার_রাধারমণ।।
১৫০৭ শকাব্দে ৮৫ বছর বয়সে শ্রাবণীকৃষ্ণা পঞ্চমী তিথিতে গোপাল ভট্ট গোস্বামী অপ্রকট হন। তাকে সমাহিত করা হয় তারই সেবিত রাধারমণ মন্দিরে গর্ভগৃহের পাশে। বৃন্দাবনে রাধারমণ মন্দিরে গেলেই ভট্ট গোস্বামীর সমাধি দর্শন করা যায়।
#নমামি_রাধারমণৈকজীবনম্।#গোপালভট্টং_ভজতামভীষ্টদম্।।
0 Comments