রাম রাজত্ব

প্রবচন- শ্রীমৎ সুভগ স্বামী মহারাজ

সকলেই কিংডম অফ্ গড বা রামরাজ্য কথার সঙ্গে পরিচিত। এই জগৎ এমন হয়ে উঠুক–অনেকেরই সেটা একান্ত ইচ্ছা। দুর্ভাগ্যবশত প্রায় খুব কম সংখ্যক লোকই কিন্তু ভগবৎ শরণাগত হয়। ক’জনই বা ভগবানের, রামের শরণাগত হয়? কিন্তু তারা রামরাজ্যে বসবাস করতে চায়। রামকে বাদ দিয়ে, ভগবানকে বাদ দিয়ে, রামরাজ্য কি করে সম্ভব? ভগবানের আদেশ, ভগবানের নির্দেশ যদি আমরা না মানি, তা হলে কি করে আমার দেশে রামরাজ্য হবে?

হ্যাঁ, ভগবৎ শরণাগত হলে, ভগবৎ আদেশ পালন করলে, সেটা সম্ভব। শাস্ত্রে উল্লেখ আছে, ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বের সময় প্রজারা সকলেই ভগবান শ্রীামচন্দ্রকে তাদের পিতারূপে গ্রহণ করে তাঁর শরণাগত হয়ে, নিজ নিজ ধর্ম ও আশ্রয় অনুযায়ী কর্তব্য কর্ম করে জীবন যাপন করত। তারা সকলে পরম সুখ ও শান্তিতে জীবন অতিবাহিত করত। পিতা যেমন সন্তানদের শাসন করেন, পালন করেন, শ্রীরামচন্দ্রও তাঁর প্রজাদের সেই রকমভাবেই শাসন করতেন, পালন করতেন।

শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ করা হয়েছে রামরাজত্বের কথা। সেখানে শ্রীল ব্যাসদেব লিখেছেন–ত্রেতা যুগে শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকালে প্রজারা সকলেই ছিল ধার্মিক, তারা সকলেই শান্তিপূর্ণ ও সুখী জীবন যাপন করত, কারণ শ্রীরামচন্দ্রের শাসনব্যবস্থা ছিল সর্বোত্তম। রামরাজত্বে সপ্তসমুদ্র ও সপ্তদ্বীপ সমন্বিত পৃথিবীর সকল দেশ, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত ও বন-জঙ্গলে সকল জীবকুলের জীবন ধারণের যাবতীয় প্রয়োজনীয় সমস্ত সামগ্রীই অপর্যাপ্তভাবে পাওয়া যেত, উৎপন্ন হত।

শ্রীমদ্ভাগবতে শ্রীল ব্যাসদেব তা এইভাবে ব্যক্ত করেছেন–

বনানি নদ্যো গিরয়ো বর্ষাণি দ্বীপসিন্ধবঃ।

সর্বে কামদুঘা আসন্ প্রজানাং ভরতর্ষভ ॥ (ভাগবত ৯/১০/৫২)

এমন কি জনগণ, রোগ, শোক, দুঃখ-দুর্দশা, জরা-ব্যাধি থেকে মুক্ত ছিল, শুধু তাই নয়, যারা মরতে চাইত না, তারা মরত না। শ্রীল শুকদেব গোস্বামী তাই মহারাজ পরীক্ষিৎকে বলেছেন–

নাধিব্যাধিজরাগ্লানিদুঃখশোকভয়ক্লমাঃ।

মৃত্যুশ্চানিচ্ছতাং নাসীদ্ রামে রাজন্যধোক্ষজে ॥ (ভাগবত ৯/১০/৫৩)

ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকালে এতই ঐশ্বর্য ছিল যে রাজধানী অযোধ্যার পথে পথে হাতিদ্বারা সুগন্ধি জল সিঞ্চন করা হত। অযোধ্যা নগরীকে সুন্দরভাবে রক্ষানাবেক্ষণ স্বয়ং শ্রীরামচন্দ্র দ্বারা হত। নগরবাসী প্রজারা তাই অযোধ্যা নগরীকে এইভাবে আড়ম্বরপূর্ণ রাখায় খুবই তুষ্ট হয়েছিল। প্রাসাদ, প্রাসাদগুলির দ্বার, গোপুর, সভাগৃহ, মন্দিরাদিতে সোনার কলস ও বিভিন্ন রকম পতাকা শোভা বর্ধন করত।

ভগবান শ্রীরামচন্দ্র যেখানেই পরিদর্শন করতে যেতেন পবিত্র কলাগাছ, ফুল, ফল, পতাকা দ্বারা তৈরী সুন্দর তোরণ করা হত তাঁকে স্বাগত জানানোর উদ্দেশ্যে। উপসনার বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে প্রজারা শ্রীরামচন্দ্রকে সম্বর্ধনা জানাতে আসত। তারপর কাতরভাবে তাঁর কাছে শুভ আশীর্বাদ প্রার্থনা করত। তারা এইভাবে আবেদন করত, “হে ভগবান, বরাহ অবতারে আপনি সাগরগর্ভ থেকে পৃথিবীকে উদ্ধার করেছিলেন, এখন আপনি সেই জগৎকে প্রতিপালন করুন। আপনার কাছে আমাদের এই কাতর প্রার্থনা।”

ভগবদ্গীতায় ভগবান বলেছেন–

চাতুর্বর্ণ্যং ময়া সৃষ্টং গুণকর্মবিভাগশঃ। (গীতা ৪/১৩)

অর্থাৎ, গুণ ও কর্ম অনুযায়ী মানব সমাজকে চার ভাগে ভাগ করা হয়, এরা হচ্ছেন ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। সমাজে চারটি আশ্রম আছে–এগুলি হচ্ছে ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস। একে বলা হয় বর্ণাশ্রম ধর্ম। বৈদিক শাস্ত্র অনুযায়ী সমাজ গঠন করা উচিত। আদর্শ শাসকের উচিত এই বর্ণাশ্রম ধর্ম চালু করা। এই ব্যবস্থা প্রচলনের উদ্দেশ্যে হচ্ছে সকলকে ভগবৎ ভাবনাময় করে তোলা। শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে–

বর্ণাশ্রমাচারবতা পুরুষেণ পরঃ পুমান্ বিষ্ণুরারাধ্যতে। (বিষ্ণুপুরান ৩/৮/৮)

এইভাবে সকল নাগরিককে ভগবদ্ভক্তে পরিণত করা যায়।

আদর্শ পিতা যেমন স্নেহের সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষা দান করেন, ভগবান শ্রীরামচন্দ্রও ছিলেন আদর্শ পিতার মত। তিনি প্রজাদের উপযুক্ত শিক্ষা দিয়েছিলেন, নিজ নিজ গুণ ও কর্ম অনুযায়ী প্রজাদের স্বধর্ম অনুশীলনের শিক্ষা দেওয়া হয়েছিল তাঁর রাজত্বকালে।

ভগবদ্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন–

যদ্ যদাচরতি শ্রেষ্ঠস্তত্তদেবেতরো জনঃ।

স যৎপ্রমাণং কুরুতে লোকস্তদনুবর্ততে ॥ (গীতা ৩/২১)

অর্থাৎ, শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির আচরণ থেকে জনগণের শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত। বৈদিক শাস্ত্রে উল্লেখ করা হয়েছে–‘মহাজন যেন গতঃ স পন্থাঃ’। মহাজনদের পদাঙ্ক অনুসরণ করা উচিত। শাস্ত্রের বাণী অনুযায়ী জীবন যাপন করে, তা উপলব্ধি করে, জনগণকে আদর্শ নাগরিক–ভগবদ্ভক্ত বা বৈষ্ণবে পরিণত করে, এক ভগবৎ ভাবনাময় সমাজ গড়ে তোলাই আদর্শ শাসকের কর্তব্য।

তাই সারা বিশ্বের নেতাদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য ভগবানের শুদ্ধভক্তরা তাদের গুণ ও কর্ম অনুযায়ী জীবন যাপন করে, দৈব বর্ণাশ্রম ধর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করে, ভগবদ্ভক্তি অনুশীলন করে, বিশ্বময় জণগণকে জীবন সার্থক ও পূর্ণ করবার পন্থা দেখিয়েছেন। ‘কলের্দোষনিধে রাজন্’–শাস্ত্রের এই বাণী অনুযায়ী কলিযুগে দোষ-ত্রুটি অসংখ্য। পাপ জীবনের স্তম্ভ-স্বরূপ হচ্ছে–অবৈধ স্ত্রীসঙ্গ, আমিষাহার, আসব পান ও দ্যূতক্রীড়া। আদর্শ শাসকের উচিত প্রজাদের এই সব পাপ-কর্ম থেকে মুক্ত করা, ভক্তরাজ পরীক্ষিৎ মহারাজের শাসন ব্যবস্থা থেকে আমরা এই শিক্ষা লাভ করতে পারি।

আজকাল পৃথিবীর সব দেশেই বিধানসভা, সংসদ আদি আছে। সদস্যরা দেশের আইন প্রনয়ন করছেন, কিন্তু তবু দেশে চোর আছে, তস্কর আছে, কালোবাজারী আছে, কিন্তু কেন? তার কারণ হচ্ছে শুধু আইন পাশ করে, জনগণকে সুনাগরিক করা যায় না, তাদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবান করা যায় না। তা কখনও সম্ভব নয়। এ সব কাজ জোর জবরদস্তিতে হয় না, বলপ্রয়োগ করে হয় না। এর জন্য জনগণকে সুনাগরিক হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন। যেমন, আজকাল স্কুল, কলেজ রয়েছে–জনগণকে বিভিন্ন বৃত্তি শিক্ষা দেওয়ার জন্য, কারিগরি শিক্ষা দেওয়ার জন্য, প্রযুক্তিবিদ্যা শিক্ষা দেওয়ার জন্য। কম বেশি বিশ্বের প্রায় সব দেশেই বিভিন্ন বিষয় শিক্ষা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন রকম শিক্ষায়তন ও বিভাগ রয়েছে।

শাস্ত্রে বলা হয়েছে–বর্ণাশ্রম গুণান্বিতঃ। জনগণকে সুনাগরিক করে তোলার জন্য রাজ্যের আইনকানুন মান্য করবার জন্য এক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। প্রাথমিক অবস্থা গড়ে তোলা যায় বিশেষ বিশেষ শিক্ষায়তনে জনগণকে ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে-ব্রহ্মচর্য, গার্হস্থ, বানপ্রস্থ ও সন্ন্যাস হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে।

পুরাকালে রাজাকে বলা হত নরদেবতা। তাঁকে ভগবানের প্রতিনিধি বলে মান্য করা হত। তিনি শাস্ত্রজ্ঞ, পন্ডিত, ব্রাহ্মণদের পরামর্শে দেশ শাসন ও প্রজার পালন করতেন, সকলকে শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আদর্শ দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য শ্রীরামচন্দ্র সেইভাবেই তাঁর রাজ্য শাসন করতেন। তিনি ছিলেন ভগবান, তবু মানব সমাজকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য তিনি নিজে শাস্ত্র-সম্মতভাবে আচরণ করে সকলকে শিক্ষা দিয়েছিলেন। সেই কারণে রাজ্যের প্রধানকে কখনও কখনও রাজির্ষিও বলা হয়। করণ রাজা হলেও, তাঁদের চরিত্র, তাঁদের আচার-ব্যবহার ছিল ঋষির মত। তারা ছিলেন আদর্শ শাসক, তাদের সঙ্গে নাগরিক বা প্রজাদের সম্বন্ধ সহজবোধ ছিল, তাই রাজ্যে তেমন কোন চোর, দস্যু, তস্করের উপদ্রব বা উৎপীড়ন ছিল না। তাই রাজরাজত্বে আদর্শ শাসন ব্যবস্থা ছিল, এবং প্রজারা সুখে ও শান্তিতে বাস করত। কিন্তু গণতন্ত্রের যুগে, কলিযুগে তা হচ্ছে না। কেন না এখন বর্ণাশ্রম শিক্ষা ব্যবস্থা নেই। দস্যু, তস্করের রাজত্ব চলছে। আজ সকলেই প্রতারকদের হাতে প্রতারিত হচ্ছে। শাসকবর্গ ‘কর’- এর নামে জনগণের বহু কষ্টার্জিত ধন অপহরণ করছে। জনগণও নানা উপায়ে ‘কর’ ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে। ফলে আজ পৃথিবীর দেশে দেশে শাসন ব্যবস্থায় এক বিশৃঙ্খলা এসেছে,–এক বিপর্যয় এসে উপস্থিত হয়েছে।

এই বিপর্যয় থেকে উদ্ধারের পথ ভগবান বা তাঁর শুদ্ধ-ভক্তরাই দেখাতে পারেন। তাই তারা বিশ্বের সকল দেশ নেতা থেকে শুরু করে জনগণকে ভগবৎ ভাবনা অনুশীলনে, বিশেষভাবে বর্তমান যুগে কৃষ্ণভাবনা অনুশীলনে উদ্ধুদ্ধ করবার চেষ্টা করেন। তাই নিত্যলীলাপ্রবিষ্ট ওঁ বিষ্ণুপাদ পরমহংস পরিবাজকাচার্য শ্রীশ্রীমৎ অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ বিশ্বময় কৃষ্ণভাবনামৃত প্রচার করে গেলেন। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর শিক্ষাদর্শে বর্তমান যুগের দেশনেতাদের উদ্ধুদ্ধ হওয়া চাই, পাপময় জীবন ত্যাগ করে কৃষ্ণভাবনা অনুশীলন করা চাই। শাস্ত্র অনুযায়ী কলিযুগে সুখ ও শান্তির একমাত্র পথ সংকীর্তন যজ্ঞ। তাই মহামন্ত্র কীর্তন করা চাই–

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে

হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ॥

এইভাবে দেশে আদর্শ নেতাগণ, ভগবৎ ভাবনাময় নেতা হলেও দেশবাসীও সুনাগরিক হবে, দেশে দেশে সুখ ও শান্তি বিরাজ করবে।

ভগবান শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন আদর্শ শাসক। তিনি শিক্ষা দিয়ে গিয়েছেন কিভাবে দেশ শাসন করলে, প্রজাপালন করলে বিশ্বে জনগণ সুখ ও শান্তিতে বসবাস করতে পারে এবং এই রকম ভগবৎ ভাবনাময় জীবনে জনগণের জীবন সার্থক হতে পারে। ভগবদ্্গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রের লক্ষণ বর্ণনা করেছেন। ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের রাজত্বকালে আদর্শ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়াদি ছিল, তারা সেইভাবে আচরণ করত।

একজন আদর্শ গৃহস্থ শ্রীরামচন্দ্র আচার্যের উপদেশ প্রাতে যজ্ঞানুষ্ঠান লীলা করতেন। ব্যক্তিগত অলঙ্কার ও পোশাক ছাড়া ভগবান শ্রীরামচন্দ্র তাঁর সব কিছুই ব্রাহ্মণদের মধ্যে বিতরণ করে দিতেন। ব্রাহ্মণেরা শ্রীরামচন্দ্রের অত্যন্ত প্রিয়পাত্র ছিলেন, শ্রীরামচন্দ্রের প্রতি ব্রাহ্মণদেরও গভীর প্রীতিভাব ছিল। তাই শ্রীরামচন্দ্রের প্রদত্ত সব দানই তারা প্রত্যর্পণ করতেন, প্রীতি-বিগলিত হৃদয়ে তারা বলতেন, “হে প্রভু, আপনি নিখিল ভুবনের ঈশ্বর, আমাদের জড় জাগতিক বিষয় সম্পদের কোন প্রয়োজন নেই। আপনি আমাদের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে প্রবেশ করে, জ্ঞানালোকের মাধ্যমে যে তম-অন্ধকার দূর করেন, সেইটি আপনার সর্বশ্রেষ্ঠ দান।”

ভগবান শ্রীরামচন্দ্র অযোধ্যায় যখন রাজ্য শাসন লীলা করতেন, তখন অযোধ্যাবাসী প্রজারা শ্রীরামচন্দ্রকে সশ্রদ্ধ প্রণাম করে, তাঁর চরণকমল স্পর্শ করে, পিতার মত মহারাজকে দর্শন করে, কখন বা বন্ধুর মত তাঁর পাশে উপবেশন করে, কিংবা তার পুত্র সান্নিধ্য লাভ করে ধন্য হয়েছিলেন এবং তাঁর সেবা করে তাদের জীবন সফল ও সার্থক করে তুলেছিল।

সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর ও কলি–এই চার যুগের মধ্যে কলিযুগই সবচেয়ে দুঃখজনক, কিন্তু এই যুগে–

অস্তি হ্যেকো মহান্ গুণঃ।

কীর্তনাদেব কৃষ্ণস্য মুক্তসঙ্গঃ পরং ব্রজেৎ ॥

ভগবানের নাম (রাম, কৃষ্ণ আদি) কীর্তন করে কলির প্রভাব থেকে জনগণ মুক্ত হতে পারে, সকল কলুষতা থেকে মুক্ত হতে পারে। এই যুগে এইটি সুখ-শান্তিময় ভগবৎ ভাবনাপূর্ণ জীবন লাভের সুবর্ণ সুযোগ।

ভগবান শ্রীরামই আবার এই যুগে গৌরসুন্দর রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি পতিতপাবন। কলিযুগে জনগণ সকলেই প্রায় পতিত। শ্রীগৌরসুন্দর আমাদের রামরাজ্য বা ভগবানের রাজ্যে বসবাসের পথ দেখিয়েছেন। ভগবানের নাম ও তিনি অভিন্ন, শ্রীগৌরসুন্দর আমাদের এই শিক্ষা দিয়েছেন। তাই নিরপরাধে আমরা ভগবানের পবিত্র নাম কীর্তন করতে পারি–সদাচার পালন করতে পারি–অবৈধ স্ত্রীসঙ্গ, আমিষাহার, আসব পান, জুয়াখেলাদি পরিত্যাগ করে। আর যদি নিয়ত আমরা শুধু ভগবৎ প্রসাদ গ্রহণ করি, রামরাজত্ব এই কলিযুগেই তখুনি শুরু হয়ে যাবে।

‘কলিযুগে নামরূপে কৃষ্ণ অবতার।’ কলিযুগে এই দুঃসময়ে বিশ্বময় ভগবানের নাম কীর্তন–‘হরি সংকীর্তন যজ্ঞ’ হওয়া জরুরি ও একান্ত প্রয়োজন।

Post a Comment

0 Comments